করোনা কালে ভিড় নিয়ন্ত্রণ করতে ই-পাস চালু হয়েছে কলকাতার লাইলাইন মেট্রো রেলে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে যাতায়াতের জন্য সেই ই-পাস আগে থেকে বুক করতে হয় যাত্রীদের। এবার সেরকমই ই-পাস আনছে কলকাতার দুর্গাপুজো উদ্যোক্তারা। ঘড়ি ধরে ঠাকুর দেখা, সময় মতো মণ্ডপে না পৌঁছলেই বাতিল হয়ে যাবে সেই ভিআইপি পাস। এমনই চিন্তাভাবনা করেছে কলকাতার পুজো উদ্যোক্তাদের সংগঠন 'ফোরাম ফর দুর্গোৎসব'। গতবছর পুজোর সময় ভিআইপি পাস তুলে দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেইজন্য পুজো উদ্যোক্তারা ভিআইপি পাসের বদলে এনেছিলেন ইনভাইটি কার্ড বা আমন্ত্রণ পত্র। তাও সেই কার্ড পাসের আকারে সবার হাতে হাতেই ঘুরছিল।
আরও পড়ুন ভিড় জমিয়ে কেনাকাটা-পুজোয় বাইরে বেরনো এড়িয়ে চলুন, আর্জি মমতার
কিন্তু এবার পরিস্থিতি আলাদা। করোনা আবহে পুজোর অনুমতি দিয়েছে রাজ্য সরকার। সেটাই বা কম কী! কিন্তু প্রশাসনের কড়া নির্দেশ, পুলিশের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ভিড় নিয়ন্ত্রণ করতে হবে পুজো কমিটিগুলোকেও। ফোরামের উদ্যোগে কলকাতার উত্তর থেকে দক্ষিণ, বাছাই করা অন্যতম সেরা ৪১টি মণ্ডপ এক পাসেই দেখার ব্যবস্থা হয়েছে। ভিড় এড়াতে এবার সেই পাস টাইম স্লট বেঁধে দিতে চাইছেন উদ্যোক্তারা। পুজোর দিনগুলিতে সেই টাইম স্লট ধরে ঠাকুর দেখতে হবে দর্শনার্থী। অনলাইনে বুকিং করে সেই পাস সংগ্রহ করতে হবে। টাইম স্লট অনুযায়ী হবে প্যান্ডেল হপিং। আর দেরি করলেই পাস বাতিল হয়ে যাবে। অতিরিক্ত ভিড় নিয়ন্ত্রণ করতেই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে ফোরাম ফর দুর্গোৎসব। আর কয়েকদিন পরেই সেই ই-পাসের পোর্টাল চালু হয়ে যাবে।
আরও পড়ুন কোভিড হাসপাতালে দুর্গাপুজো! জোর বিতর্কে সরগরম মেডিক্যাল কলেজ
এই প্রসঙ্গে ফোরাম ফর দুর্গোৎসবের যুগ্ম সম্পাদক শাশ্বত বসু বলেছেন, "একদিনে ২৪ ঘণ্টা সময়কে দুঘণ্টা করে ১২টি টাইম স্লটে ভাগ করা হবে। সেই টাইম স্লটের মধ্যে মণ্ডপে ঢুকে প্রতিমা দর্শন করতে হবে। বিভিন্ন টাইম স্লটে কতজন পাস বুকিং করেছেন তার একটা পরিসংখ্যান থাকবে ক্লাবের কাছে। তাতে ভিড় নিয়ন্ত্রণ করা একটু সহজ হবে।" কিন্তু সময়ে না পৌঁছলে পাস তো বাতিল হয়ে যাবে, সেক্ষেত্রে কী হবে। তার উত্তরে ফোরামের সদস্য তথা হাতিবাগান নবীন পল্লি দুর্গোৎসবের অন্যতম উদ্যোক্তা অমিতাভ রায় জানিয়েছেন, "মেট্রোর মতোই এই ই-পাসের ভাবনা। এতে যেমন সময় বেঁধে দর্শনার্থীরা ঠাকুর দেখতে পারবেন, তেমনই উদ্যোক্তারাও সহজে ভিড় নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন কোভিড সংক্রমণ এড়াতে। যারা বুকিং করবেন তাঁরা কিউআর কোড স্ক্যান করে মণ্ডপে ঢুকবেন। সমস্যা কিছুটা আছে। তবে এই বিষয়ে আরও চিন্তাভাবনা চলছে।" নিউ নর্মালে এবছর কীরকম ভিড় হবে ঠাকুর দেখার তার উপরই নির্ভর করছে এই ই-পাসের যৌক্তিকতা।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন