পার্ক স্ট্রিট গণধর্ষণকাণ্ডের তদন্তে নয়া মোড়। পার্ক স্ট্রিট গণধর্ষণ মামলায় কোনও হস্তক্ষেপ করতে নারাজ কলকাতা হাইকোর্ট। এই মামলায় দ্রুত বিচারের আর্জি জানিয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল অন্যতম এক অভিযুক্ত। সূত্র মারফৎ জানা যাচ্ছে, সেই আবেদনের প্রেক্ষিতে সোমবার হাইকোর্ট জানিয়েছে, নিম্ন আদালতে এই বিচারপ্রক্রিয়া যেমন চলছে তেমনই চলবে। এই মামলায় হস্তক্ষেপ করছে না হাইকোর্ট। পাশাপাশি হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণ, ‘‘তদন্তপ্রক্রিয়ায় কোনও অনিয়ম হচ্ছে না’’।
উল্লেখ্য, পার্ক স্ট্রিট গণধর্ষণ মামলায় দুই মূল অভিযুক্তের বিরুদ্ধে প্রায় দেড় বছর আগে চার্জ গঠন করা হয়েছিল। কিন্তু এই দু’জনের বিচার প্রক্রিয়া এখনও শেষ হয়নি। চার্জ গঠন হলেও কেন দ্রুত বিচার প্রক্রিয়া শেষ করা হচ্ছে না, এই প্রেক্ষিতে হাইকোর্টে বিচারপতি জয় সেনগুপ্তের এজলাসে দ্বারস্থ হন এই দুই অভিযুক্তের মধ্যে একজনের আইনজীবী। উল্লেখ্য, পার্ক স্ট্রিট গণধর্ষণ মামলায় ইতিমধ্যেই অন্য তিন অভিযুক্তকে ১০ বছর কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছে কলকাতার নগর দায়রা আদালত। নিম্ন আদালতের এই রায়দানের আগেই ২০১৫ সালের ১৩ মার্চ এনসেফ্যালাইটিসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় নির্যাতিতার।
আরও পড়ুন: মমতা সরকারের মন্ত্রীদের শিক্ষাগত যোগ্যতা একনজরে
প্রসঙ্গত, ২০১২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে পার্ক স্ট্রিটে একটি নাইট ক্লাবের বাইরে থেকে গাড়িতে তুলে নিয়ে এক মহিলাকে গণধর্ষণের অভিযোগে উত্তাল হয়ে ওঠে রাজ্য রাজনীতি। এ ঘটনাকে ‘সাজানো ঘটনা’ বলে বিতর্কে জড়িয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ ঘটনায় কলকাতা পুলিশের তদন্তে ৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। সেই তদন্তে মুখ্য ভূমিকা পালন করেছিলেন কলকাতা পুলিশের তৎকালীন গোয়েন্দা প্রধান দময়ন্তী সেন। এরপর হঠাৎ কলকাতা পুলিশ থেকে বদলি করে দেওয়া হয় সুদক্ষ আইপিএস দময়ন্তীকে। একাংশের মতে, দময়ন্তীর ‘সক্রিয় ভূমিকা’ না-পসন্দ ছিল তৎকালীন সরকারের। সেজন্যই নাকি তাঁকে সরতে হয়েছিল।
আরও পড়ুন: রাতে মন্ত্রীর ফোন বৈশাখীকে, ‘তুমি আছ বলেই লড়তে পারছ’
এ ঘটনায় প্রথমে তিন অভিযুক্তকে পাকড়াও করতে পারলেও অধরাই থেকে গিয়েছিল দুই মূল অভিযুক্ত। এই দু'জনের মধ্যে এক অভিযুক্তের গা ঢাকা দেওয়ার পিছনে টলি পাড়ার এক নায়িকার হাত ছিল বলেও দাবি করেছিল পুলিশ। শেষ পর্যন্ত ২০১৬ সালে গাজিয়াবাদ থেকে মূল দুই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে কলকাতা পুলিশ। ২০১৮ সালের এপ্রিলে তাদের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করা হয়েছিল বলে খবর।