বেতন বাড়ানোর আশ্বাস সত্ত্বেও চিড়ে ভেজেনি। এর মধ্যেই শিক্ষকদের বদলি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে বিতর্কের মুখে পড়লেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার নজরুল মঞ্চে পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির জরুরি সভায় শিক্ষকদের বেশ কিছু দাবি-দাওয়া মেনে নিলেও তাঁদের বদলির কারণ নিয়ে বলতে গিয়ে শিক্ষিকাদের প্রসঙ্গে বেফাঁস মন্তব্য করেন শিক্ষামন্ত্রী। পার্থ বলেন, ‘‘এত বেশি মহিলা শিক্ষিকা স্ত্রী রোগে ভুগছেন, আমি নিজে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছি। এটা কী হচ্ছে!’’ শিক্ষিকাদের বদলি নিয়ে যে ভাষায় মন্ত্রী মন্তব্য করেছেন তা নিয়ে সমালোচনার ঝড় বইছে বিভিন্ন মহলে।
আরও পড়ুন: প্রাথমিক শিক্ষকদের বেতন বাড়ানোর আশ্বাস শিক্ষামন্ত্রীর
পার্থবাবুর বক্তব্য, ‘‘যখন বলেছিলাম অসুস্থ হলে বদলি করে দেব। সেক্ষেত্রে সবাই অসুস্থ হয়ে পড়ছে। এত বেশি মহিলা শিক্ষিকা স্ত্রী রোগে ভুগছেন, আমি নিজে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছি। এটা কী হচ্ছে! জেনুইন কিছু থাকলে নিশ্চয়ই আপনারা আবেদন করবেন’’। এ প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, ‘‘আমি তো শিক্ষিকাদের বলেছি জেলার লোককে জেলায় বদলি করতে। প্রয়োজনে পাশের জেলায় বদলির ব্যবস্থা করতে। কিন্তু দেখা গিয়োছ, অবিবাহিত অবস্থায় কল্যাণীতে কাজ করেন। বিয়ে করে চলে গেছেন কাকদ্বীপ। তাঁর স্বামী থাকেন হয়তো বেহালায়। এবার তাঁকেও পোস্টিং করতে হবে কাকদ্বীপে’’। পার্থবাবুর এই মন্তব্যে তখন শ্রোতাদের মধ্যে হাসির রোল ওঠে নজরুল মঞ্চে।
আরও পড়ুন: তৃণমূলে ফেরার প্রশ্নই নেই, ভাল লোকেরাই দল ছাড়ছে: বৈশাখী
তবে এভাবে ‘রোগের’ কথা বলায় জোরদার বিতর্ক শুরু হয়েছে। কেন এই মন্তব্য সেই প্রশ্ন উঠেছে সর্বত্র। কেন্দ্রীয় নারী ও শিশু কল্যাণ দফতরের প্রতিমন্ত্রী দেবশ্রী চৌধুরীর বক্তব্য, ‘‘এটা একেবারে হাস্যকর। ওই সভায় অনেক মহিলা হাজির ছিলেন সেখানে এমন বক্তব্য কাম্য নয়। এভাবে বলা একেবারেই অনভিপ্রেত। এত বড় রাজ্যের মন্ত্রী বিবেচনা করে বলা উচিত ছিল’’।
শিক্ষামন্ত্রীর ওই বক্তব্যের পর প্রেক্ষাগৃহে ফিসফিস শুরু হয়ে যায়। শিক্ষিকারা বিষয়টি নিয়ে নিজেদের মধ্য আলোচনা শুরু করেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষিকা বলেন, ‘‘বিষয়টা এভাবে প্রকাশ্যে মন্ত্রীর মুখে শুনে লজ্জা লাগছিল। এভাবে স্পেসিফিকেশন না করলেই পারতেন’’।