"এসো হে আর্য, এসো অনার্য, হিন্দু, মুসলমান," বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথের ভারততীর্থে বাদ যাননি খ্রীষ্টান, ব্রাহ্মণ, হুন,পাঠান, মোঘলরাও। সেই ভারততীর্থকে স্মরণ করে দু’দিন ধরে কবিগুরুর জীবন দর্শনের নানা দিক নিয়ে ১৩ ঘণ্টা চর্চা চলল। একদিকে সামাজিক চেতনা, বিদ্বেষের বিরুদ্ধে জেহাদ, অন্যদিকে প্রতিভার অন্বেষণ। বাড়তি প্রাপ্তি জেলা থেকে প্রায় ২০০-র ওপর শিল্পীর অংশ নেওয়া।
রবীন্দ্রনাথের নানা ভাবনা তথা নানা দিক নিয়ে দু’দিন ধরে অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল আবৃত্তি শিল্পী সংস্থা। রবিবার ও সোমবার জীবনানন্দ সভাঘর ও রবীন্দ্রসদনে এই অনুষ্ঠান হয়। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর যে আজও কতটা প্রাসঙ্গিক সেকথা একাধিকবার উঠে আসে আলোচনায়। রবীন্দ্র গবেষক পিনাকী ভাদুরী, মিনাক্ষী সিনহা, রবীন্দ্র নৃত্যের গবেষক কৌশিক চক্রবর্তী-সহ বিশিষ্টরা আলোচনায় অংশ নেন। ছিল রবিকবিতার কোলাজ, স্বদেশ চেতনায় রবীন্দ্রনাথ, গীতাঞ্জলী, শিশু মানস ও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, সমাজ চেতনায় রবীন্দ্রনাথ, এমন নানা চিন্তাভাবনা।
আরও পড়ুন: শুনানির লাইভ সম্প্রচার ইউটিউবে! নজিরবিহীন সিদ্ধান্ত কলকাতা হাইকোর্টের
সংস্থার কর্ণধার জয়ন্ত ঘোষ বলেন, "আমরা অনুষ্ঠান শুরুই করেছিলাম কবিগুরুর ভারততীর্থ স্মরণ করে। সর্বধর্মের সহাবস্থানের কথাই ছিল বিশ্বকবির ভাবনা। আজকের সামাজিক পরিস্থিতিতে রবীন্দ্র ভাবনা স্মরণ করা খুবই জরুরি। শুধু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নানা কর্মকান্ড নিয়ে আলোচনা, আবৃত্তি, নৃত্য নিয়েই দু’দিন ১৩ ঘণ্টা কেটে গিয়েছে। সামজচেতনা, পরিবেশ চেতনার ভাবনা নিয়েও আলোচনা হয়েছে।"
জেলার প্রতিভার সন্ধানেও কাজ করছে এই সংস্থা। মালদা, মুর্শিদাবাদ, নদিয়া, পূর্ব বর্ধমান, পশ্চিম বর্ধমান, হাওড়া, হুগলি, দুই ২৪ পরগণা থেকে প্রায় দুশোর ওপর শিল্পী এসেছিলেন। নদিয়ার বেথুয়াডহরির পার্থসারথী চৌধুরী, মুর্শিদাবাদের রঘুনাথগঞ্জের শুচিষ্মিতা সাহা, নৈহাটির পৌলমী ভট্টাচার্যরা বেশ নজর কেড়েছেন অনুষ্ঠানে। রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি করছেন অপর্ণা দেবনাথ। তিনিও ছুটে এসেছেন অনুষ্ঠানে। অপর্ণার কথায়, "আজও সমাজে জাত-পাত, ধর্মীয় বিভাজনের চেষ্টা অব্যাহত। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সর্বধর্ম সমন্বয়ের কথা বলেছেন। এখানে আলোচনায়, কবিতায় সেই উপলব্ধি জানান দিচ্ছিল। তাছাড়া গ্রাম-বাংলার শিল্পীরাও সুযোগ পেয়েছে এই অনুষ্ঠানে।"
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন