কোটি টাকার বেশি দিয়ে শোভন চট্টোপাধ্যায়ের পৈতৃক বাড়ি কিনে নিলেন 'বান্ধবী' বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। আইনি সমস্যায় জর্জরিত শোভন। আদালতে মামলার পর মামলা চলছে। তাই প্রবল অর্থ সংকটে তিনি, দাবি কলকাতার প্রাক্তন মেয়রের। এই অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতে পাশে পেয়েছেন 'বান্ধবী'কে। শোভন চট্টোপাধ্যায়ের জানিয়েছেন, বেহালার পৈতৃক বাড়িটি তিনি কোটি টাকারও বেশি দিয়ে বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়কে বিক্রি করে দিয়েছেন। আইনত বর্তমানে ওই বাড়ির মালিক বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়।
চলতি বছরের মাঝামাঝি নিজের স্থাবর-অস্থাবর সব সম্পত্তি 'বান্ধবী' বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়কে লিখে দিয়েছিলেন শোভন চট্টোপাধ্যায়। স্ত্রী রত্না চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে সম্পর্কের টানাপোড়েনের জন্যই তাঁর ওই সিদ্ধান্ত বলে জানিয়েছিলেন। কিন্তু, আর্থিক অনটনের কারণে এবার নিজের পৈতৃক বাড়িটি সেই বৈশাখীকেই বিক্রি করলেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী।
শোভন-রত্না বিবাহ বিচ্ছেদের মামলা চলছে। কিন্তু বর্তমানে স্বামী শোভন চট্টোপাধ্যায়ের বেহালার পৈতৃক বাড়িতেই থাকেন রত্না চট্টোপাধ্যায়। তাঁর সঙ্গেই ওই বাড়িতে বসবাস করেন শোভন-রত্নার পুত্র ও কন্যাও।
বাড়ি বিক্রি প্রসঙ্গে শোভন চট্টোপাধ্যায় বলেছেন, 'আমার আয়ের পথ বন্ধ। মহেশতলার গুদামের ভাড়াও আমাকে দেওয়া হয় না। সে নিয়ে ও বিবাহ বিচ্ছেদের মামলা চলছে আদালতে। কিন্তু আমার রোজগার নেই, অর্থ সংকট চলছে। এদিকে আইনি লড়াইয়ের জন্য অর্থ প্রয়োজন। তাই বৈশাখী আমাকে অর্থ দিয়ে সাহায্যের কথা জানিয়েছিলেন। কিন্তু, আমি তা গ্রহণ করিনি। আমার যেহেতু বেহালায় একটি বাড়ি রয়েছে, তাই সেটি তাঁকে বিক্রি করে দিয়েছি। সেই অর্থ দিয়েই আপাতত প্রয়োজন মিটবে। আইনত এখন আমার বেহালার পৈতৃক বাড়ির মালিক বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। এই সহায়তার জন্য ওঁকে অনেক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা।'
আরও পড়ুন- অন্য মহিলার সঙ্গে সম্পর্কে মনোজিৎ, স্বামীর থেকে ডিভোর্স চাইলেন বৈশাখী
কী বলছেন বৈশাখী? আপাতত নিজেকে শোভনবাবুর বাড়ির আইনি মালিক বলে দাবি করে তিনি বলেন, 'কিছু দিনের মধ্যেই শোভনের স্ত্রী রত্না চট্টোপাধ্যায়ের কাছে নোটিস দিয়ে ওই বাড়ি খালি করার কথা জানাব। তাতে কাজ না হলে আইনের দ্বারস্থ হবো। তবে আশা করবো উনি নিজের সম্মান বজায় রেখেই বেহাল বাড়ি ছেড়ে দেবেন। এটা ঠিক যে শোভনের মেয়ে ছোট। তাই ওঁর কন্যা যদি মা-কে ছেড়ে ওই বাড়িতে থাকতে চায় তবে সে থাকতে পারবে। এমনকী ঋষি যদি আমার কাছে আবেদন করে বেহালার বাড়িতে থাকার তবে সেটা বিবেচনা করে দেখবো। কিন্তু রত্নাকে সেই সুযোগ দেওয়া যাবে না।'
বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই মন্তব্যের পরই হুঙ্কার ছেড়েছেন শোভন-পত্নী তথা বেহালা পূর্বের তৃণমূল বিধায়ক রত্না চট্টোপাধ্যায়। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে তিনি বলেন, 'ক্ষমতা থাকলে আমাকে বের করে দেখাক। সব কিছু অত সহজ নয়। আমৃত্যু আমি ও আমার সন্তানরা এই বাড়িতেই থাকবো।'
শোভন-বৈশাখী-রত্না বিবাদ বঙ্গীয় চর্চার অন্যতম বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। যা এখন অন্য মাত্রা পেল।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন