সব্যসাচী-তৃণমূল আইনি দ্বৈরথে ধাক্কা খেল দল। আপাতত স্বস্তিতে বিধাননগরের মেয়র সব্যসাচী দত্ত। আগামিকাল অর্থাৎ বুধবার আস্থা ভোট হচ্ছে না। বিধাননগর পুরনিগমের মেয়রের পদ থেকে সব্যসাচী দত্তের বিরুদ্ধে যে অনাস্থা প্রাস্তাব আনা হয়েছিল, তা ত্রুটিপূর্ণ, ফলে বুধবার আস্থা ভোট হবে না বলে জানিয়ে দিল কলকাতা হাইকোর্ট। এদিন বিচারপতি সমাপ্তি চট্টোপাধ্যায়ের বেঞ্চ জানায়, আস্থা ভোটের জন্য যে তলবি চিঠি বা নোটিস পুর কমিশনার পাঠিয়েছিলেন, তা তিনি আইনানুগভাবে পাঠাতে পারেন না। বরং, বিধাননগরের চেয়ারপার্সন কৃষ্ণা চক্রবর্তীকে এই চিঠি পাঠাতে হবে। কৃষ্ণা চক্রবর্তী এই নোটিস জারি করার ২ দিনের মধ্যে আস্থা ভোট করাতে হবে। তবে, সব্যসাচী দত্তকে আস্থা ভোটে যে অংশ নিতে হবে তা স্পষ্ট করে দিয়েছে আদালত। উল্লেখ্য, সব্যসাচীর আইনজীবীরাও বলেন যে তাঁদের মক্কেলও আস্থা ভোট এড়াতে চান না। সব্যসাচী কেবল তাঁর বিরুদ্ধে জারি হওয়া পুর কমিশনারের নোটিসের আইনি বৈধতাকেই চ্যালেঞ্জ করেছেন।
এদিনের রায়ে দৃশ্যতই উচ্ছ্বসিত সব্যসাচী দত্ত। তিনি এদিনের এই রায়কে স্বাগত জানিয়েছেন। তিনি বলেন, "নোটিস দিলেও কাউন্সিলররা কথা বলতে চাইলে কথা বলব, নোটিস না দিলেও তাঁরা চাইলে কথা হবে"। এদিকে, এদিনের রায়ের পরই বিধাননগর পুরভবনে ডেপুটি মেয়র তাপস চট্টোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে জরুরি বৈঠকে বসেছেন তৃণমূল কাউন্সিলররা।
উল্লেখ্য, সব্যসাচী দত্তের বিরুদ্ধে দল অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে আসার পরই তিনি আইনজ্ঞদের পরামর্শ গ্রহণ করেন। এরপরই অনাস্থা প্রস্তাবের তলবি চিঠি নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দেয়র করেন সব্যসাচী দত্ত।
ঠিক কী কী অভিযোগ করেছেন সব্যসাচী দত্ত?
* পুরসভার কমিশনারের বিশেষ বৈঠক ডাকার নোটিসের আইনি বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন মেয়র সব্যসাচী। নোটিসটি ভেবেচিন্তে লেখা হয়নি। সেটি লেখা হয়েছে একেবারে ‘যান্ত্রিক ভাবনায়’, তাই তা খারিজের আবেদন জানিয়েছেন সব্যসাচী।
* পুরসভায় বিশেষ বৈঠক ডেকে ৯ জুলাই নোটিস দেন কমিশনার। কিন্তু গত ২৭ জুন থেকে ছুটিতে রয়েছেন কমিশনার। ছুটিতে থাকাকালীন কীভাবে নোটিসে সই করলেন কমিশনার? ওই সই জাল করা হয়েছে কিনা, সে প্রশ্ন তুলেছেন সব্যসাচী।
* সব্যসাচীর অভিযোগ, রাজ্য সরকার প্রতিহিংসাবশতই চক্রান্ত করে কয়েকজন কাউন্সিলরকে দিয়ে ওই নোটিসে সই করিয়েছে।
*সব্যসাচীর আরও অভিযোগ, বিধাননগর পুরসভা গঠিত হওয়ার পর পুরনো রাজারহাট-গোপালপুর পুর এলাকায় বহু বেআইনি নির্মাণ দেখা গিয়েছে। অনেকক্ষেত্রেই সেখানে পুর আইন মানা হয়নি। এ ধরনের বেআইনি কাজে মদত দেওয়া কাউন্সিলররাই তাঁকে সরাতে চান বলে দাবি করেছেন বিধাননগরের মেয়র।