সারদাকাণ্ডে টাকা ফেরানো নিয়ে অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তীকে তীব্র কটাক্ষ করলেন প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ কুণাল ঘোষ। সারদা তদন্তে ইডি-সিবিআইয়ের তৎপরতা দেখেই টাকা ফেরানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন মিঠুন, বুধবার এ ভাষাতেই রাজ্যসভায় তৃণমূলের প্রাক্তন সাংসদ মিঠুনকে বিঁধলেন সাংবাদিক কুণাল ঘোষ। সারদার টাকা ফেরানোয় বলিউডের সুপারস্টারকে রোল মডেল ভাবার কোনও কারণ নেই বলেও এদিন ঠারোঠোরে বুঝিয়ে দেন কুণাল। বুধবার সল্টলেকের সিজিও কম্পলেক্সে ইডি-র জিজ্ঞাসাবাদের মুখামুখি হন কুণাল। সেখান থেকে বেরবার পথেই সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে একদা সতীর্থ মিঠুনকে বেঁধেন তিনি।
প্রসঙ্গত, সারদাকাণ্ডে নাম জড়িয়েছিল মিঠুন চক্রবর্তীর। এই সূত্রে ইডি-র জিজ্ঞাসাবাদের পর টাকা ফেরানোর প্রস্তাব দেন অভিনেতা। সেইমতো টাকাও ফেরান মিঠুন। সারদা তদন্তে মিঠুনের টাকা ফেরানোর বিষয়টিকে কার্যত ‘দৃষ্টান্ত’ হিসেবে তুলে ধরে আরও টাকা উদ্ধারের পরিকল্পনা করে তদন্তকারী সংস্থা।
আরও পড়ুন: মুকুলদার সঙ্গে আমায় মুখোমুখি বসিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করুন: কুণাল ঘোষ
ঠিক কী বলেছেন কুণাল ঘোষ?
সারদা মামলায় মিঠুন চক্রবর্তীর টাকা ফেরানোর ব্যাপারে এদিন কুণাল বলেন, ‘‘মিঠুনকে আমিও খুব শ্রুদ্ধা করি। এটা সরলীকরণের বিষয় নয়। তাঁর সঙ্গে সংস্থার যে বোঝাপড়া হয়েছিল, তাতে একটি অনুষ্ঠানের ৯টি এপিসোডের কাজ করেছিলেন, ৭টি সম্প্রচারিত হয়েছে। তাই হয়তো মিঠুনদার মনে হতে পারে কাজ না করে পয়সা পেয়েছি। তাই ফেরত দিয়েছেন। সিট তদন্ত করেছে, শ্যামল সেন কমিশন তদন্ত করেছে। তখন মিঠুন চক্রবর্তীর বিবেক কোথায় ছিল? সিবিআই-ইডির পর বিবেক জেগে গেল! সিবিআই-ইডি না এলে কি মিঠুন চক্রবর্তীর টাকা ফেরত দেওযার বিবেক জাগত? তাঁকে আপনারা রোল মডেল করবেন?’’
আরও পড়ুন: ব্যাকফুটে মুকুল, বিজেপিতে দিলীপই শেষ কথা
এরপরই কুণাল বলেন, ‘‘কুণাল ঘোষকে কখনও বোঝাতে হয়নি। সারদা থেকে আমার আয়ের এক তৃতীয়াংশ আয়কর দফতরকে দিয়েছি। সেসময় মিডিয়াকে বাঁচানোর জন্য ৫০ লক্ষ টাকা সুদীপ্ত সেনকে দিয়েছিলাম। চেকে দিয়েছি, সব রেকর্ড আছে। এরপর মিডিয়া যখন ধুঁকছে, যাতে চলতে থাকে, সেজন্য পরিচিতদের থেকে আর্থিক সাহায্য নিয়েছি।’’
উল্লেখ্য, সারদা কেলেঙ্কারিতে নাম জড়িয়ে যাওয়ার পরই কার্যত ‘ভেঙে’ পড়েছিলেন মিঠুন চক্রবর্তী। এ মামলায় নিজের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে, তাই তিনি টাকা ফেরাতে চান বলে সেসময় ইডিকে জানিয়েছিলেন মিঠুন। পাশাপাশি তদন্তকারীদের মিঠুন একথাও বলেছিলেন যে, সারদার বেআইনি ব্যবসার কথা আগে জানলে তিনি ওই সংস্থার সঙ্গে চুক্তি করতেন না। প্রসঙ্গত, সারদাকাণ্ডে নাম জড়ানোর পর থেকেই কার্যত ‘অন্তরালে’ চলে যান অভিনেতা। তৃণমূলের সঙ্গেও দূরত্ব তৈরি হয় অভিনেতার। বহুদিন পর সেই মিঠুন চক্রবর্তীর টাকা ফেরানো নিয়ে যে ভাষায় এদিন খোঁচা দিলেন কুণাল, তাতে কিছুটা অবাক সংশ্লিষ্ট মহলের একাংশ।