নারদ মামলাগ্রহণে কলকাতা হাইকোর্টের পদ্ধতিগত ত্রুটি ধরা পড়েছে। এছাড়াও সিবিআইয়ের আবেদন মেনে মামলা স্থানান্তরের প্রক্রিয়ার মধ্যে হাইকোর্ট নিজস্ব ক্ষমতা প্রয়োগ করে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে কী ভাবে নিম্ন আদালতের রায়ে স্থগিতাদেশ জারি করল- তা নিয়েও প্রশ্ন তুললেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অরিন্দম সিনহা। এ প্রসঙ্গে হাইকোর্টের অস্থায়ী প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দলকেও চিঠি দিয়েছেন তিনি।
হাইকোর্ট কী ভাবে সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতের রায় খারিজ করল, প্রথমে তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন বিচারপতি সিনহা। চিঠিতে বিচারপতি সিন্হা ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতিকে লিখেছেন যে, কোনও ডিভিশন বেঞ্চ কি রিট পিটিশনের ভিত্তিতে মামলা গ্রহণ করতে পারে এবং তার শুনানি করতে পারে? এক্ষেত্রে ভারতীয় সংবিধানের অনুচ্ছেদ ২২৮ -র উল্লেখ করেছেন বিচারপতি সিনহা। তাঁর লেখা চিঠিতে উল্লেখ, ' হাই কোর্টের এক যোগে কাজ করার বিষয়ে সচেতন হওয়া প্রয়োজন। এ ক্ষেত্রে আদালতের আচরণ কলকাতা হাই কোর্টের ঐতিহ্যের অনুরূপ নয়। আমরা উপহাসের পাত্রে পরিণত হয়েছি।'
দ্বিতীয়ত বিচারপতি অরিন্দম সিনহার প্রশ্ন, ফৌজদারী আইনের ৪০৭ ধারা মোতাবেক এই হস্তান্তর আবেদনটি হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে ওঠে। গত ১৭ই মে সিবিআই একটি ইমেল পাঠায়, যেখানে অতিরিক্ত সলিসিটার জেনারেল ওয়াই জে দস্তুরের সম্মতির উল্লেখ ছিল। এই উল্লেখে ভিত্তিতেই আবেদনটি ডিভিশন বেঞ্চে গৃহীত হয়। এই পদ্ধতিতেই আপত্তি জানিয়েছেন বিচারপতি অরিন্দম সিনহা। তাঁর যুক্তি, হাইকোর্টের অ্যাপিল সাইড রুলস অনুযায়ী কোনও একজন বিচারপতি একা এই ধরণের আবেদনের শুনানি করবেন। তবুও প্রথম ডিভিশন বেঞ্চ এই মামলাটি নিজের দায়িত্বে নেয় রিট পিটিশন হিসেবে বিষয়টিকে বিবেচনা করে। তাহলেও সংবিধানের ২২৮ নম্বর অনুচ্ছেদের আওতাভুক্ত হিসেবে বিষয়টি একক বিচারপতির কাছে যাওয়া উচিত ছিল। এক্ষেত্রে সিবিআইয়ের পাঠানো আবেদনকে তাই কখনই রিট পিটিশন হিসেবে গণ্য করা উচিত নয়। কারণ আইনের ব্যাখ্যার বিষয়ে তেমন কোন গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উত্থাপিত হয়নি।
নারদকাণ্ড কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। তবে শেষ অবধি সুপ্রিম কোর্টে আগাম আবেদন করেও কার্যত লাভ হয়নি কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার। হাইকোর্টের বৃহত্তর বেঞ্চেই মামলা ফেরত পাঠানো হয়। গত দু'দিনের শুনানির পর নারদকাণ্ডে শুক্রবারই কলকাতা হাইকোর্টের বৃহত্তর বেঞ্চ চার হেভিওয়েট নেতা-মন্ত্রীদের শর্তসাপেক্ষে অন্তর্বর্তী জামিন মঞ্জর করেছে।
Read in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন