এসএসসি দুর্নীতি মামলায় কাঠগড়ায় মন্ত্রী পরেশ অধিকারী এবং তাঁর মেয়ে। গতকাল রাত আটটার মধ্যে তাঁকে সিবিআই দফতরে হাজিরা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয় কলকাতা হাইকোর্টের তরফে। সেই বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এই নজিরবিহীন নির্দেশের পর গতকালই সন্ধেবেলা উত্তরবঙ্গ থেকে সকন্যা পদাতিক এক্সপ্রেসে ওঠেন মন্ত্রী পরেশ অধিকারী। গন্তব্য ছিল অবশ্যই কলকাতা। কিন্তু বুধবার সকালে ট্রেন কলকাতায় পৌঁছলেও দেখা মিলল না তাঁদের।
তাহলে কোথায় গেলেন তাঁরা? এদিন সকালে নির্ধারিত সময়ে শিয়ালদহে ট্রেন ঢুকলেও মন্ত্রী বা তাঁর কন্যা অঙ্কিতাকে নামতে দেখা যায়নি স্টেশনে। তাহলে কি তাঁরা আগেই কোনও স্টেশনে নেমে গিয়েছেন? এমনটাই উঠছে প্রশ্ন। সিবিআই দফতর সূত্রে খবর, পরেশবাবুকে ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি। মন্ত্রী নিজেও সিবিআইয়ের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেননি। বিচারপতি শুনানিতে জানিয়েছেন যে পরেশ অধিকারীর মেয়ের নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে রয়েছে প্রভাবশালী হাত। যদিও এই তত্ত্ব উড়িয়ে দিয়েছেন খোদ মন্ত্রী। গতকাল তিনি বলেন, ‘যখন এই ঘটনা ঘটেছে তখন আমি মন্ত্রী ছিলাম না।’
অভিযোগ, কোর্টের নির্দেশে কোচবিহারে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের শিক্ষক নিয়োগের জন্য এসএসসি তালিকা প্রকাশ করেছিল। তফসিলি জাতিভুক্তদের জন্য মেধা তালিকার ওয়েটিং লিস্টে প্রথম স্থানে নাম ছিল ববিতা বর্মনের। ববিতা বর্মনের পর দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে ছিল লোপামুদ্রা মণ্ডল ও ছায়া রায়ের নাম। অথচ পরবর্তীতে এসএসসি-র ওয়েবসাইটে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের তফসিলি জাতির জন্য সংরক্ষিত আসনের ওয়েট লিস্টে দেখা যায় ববিতার নাম চলে গিয়েছে দ্বিতীয় স্থানে। প্রথম স্থানে রয়েছে পরেশ অধিকারীর মেয়ে অঙ্কিতা অধিকারীর নাম।
আরও পড়ুন অনলাইনে পরীক্ষার দাবিতে বেনজির বিক্ষোভ, উপাচার্যের ঘরের দরজায় লাথি, উত্তাল রবীন্দ্রভারতী
এছাড়া, চাকরি প্রার্থীদের ইন্টারভিউয়ের সময়েও অঙ্কিতাকে দেখা যায়নি বলে অভিযোগ। এরপরই ২০১৮ সালে আদালতে মামলা করেন ববিতা। প্রায় চার বছর পর সেই মামলায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ হল। কিন্তু এখন প্রশ্ন হল কলকাতায় আসার ট্রেনে উঠেও গন্তব্যে না গিয়ে কোথায় উধাও হয়ে গেলেন মন্ত্রী এবং তাঁর কন্যা। পাশাপাশি এও জানা গিয়েছে, সিঙ্গল বেঞ্চের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চে মামলা করেছেন পরেশের আইনজীবীরা।