Advertisment

টালায় গড়াচ্ছে না বাসের চাকা, দীপাবলিতে আঁধারে বাস মালিক-কর্মীরা

"এমনই হাল বেবিফুডও কিনতে পারছেন না বাসের কন্ডাক্টররা। যেখানে সাড়ে ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা দিনে রোজগার ছিল। এখন তা দাঁড়িয়েছে ২৭০০-২৮০০ টাকায়। কন্ডাক্টরের কমিশন সাড়ে ৮ শতাংশ। তাহলে ভেবে দেখুন কী অবস্থা’’।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Diwali 2019, দীপাবলি, দিওয়ালি, কালীপুজো, কালীপুজা, kalipuja 2019, kalipujo 2019, tala bridge, bus owners, বাস মালিক

মালিকদের দাবি, বাস চালাতে গিয়ে তাঁদের পকেটের টাকা খরচ হয়ে যাচ্ছে। নিজস্ব ছবি।

আলোর উৎসবে চারপাশ যখন আলোকময়, তখন ওঁদের মনে গ্রাস করে রয়েছে একরাশ অন্ধকার। দীপাবলির আনন্দে ওঁদের মুখ ম্লান। আচমকা রুজিরুটি বন্ধ হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন বাস মালিক ও কর্মীরা। টালা সেতু থেকে বাস চলাচল বন্ধ হওয়ায় পকেটে টান পড়েছে। তাঁদের আশঙ্কা, এমন ভাবে চললে আগামী দিনে উত্তরের ২৭টি রুটে বাস চলাচলই বন্ধ হয়ে যেতে পারে। দীপাবলির আলোকমালায় ৩০হাজার মানুষ কাটাবেন আঁধারে।

Advertisment

৭ অক্টোবর থেকে শহরের উত্তরের টালা সেতু দিয়ে বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। তারপর নানা সময়ে নানা রুটে ২৭টি বাসকে ঘুরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এমনও হয়েছে ২৩৪ রুটের বাসকে এমনই নতুন রুট করা হয়েছিল যার ফলে ৪২ কিলোমিটারের রাস্তা দাঁড়িয়েছিল ৮২ কিলোমিটারে। বেলঘরিয়া থেকে গল্ফগ্রিন যেতে সময় লেগে গিয়েছে ৯ ঘণ্টা। এখানকার নানা রুটে আগে যেখানে ৫টি ট্রিপ হত, সেখানে ৩টে ট্রিপও হচ্ছে কোনওরকমে।

আরও পড়ুন: ‘ভাইফোঁটায় যেতে চেয়েছিলাম, মমতা কালীপুজোয় ডাকলেন’

উত্তর কলকাতা বাস-মিনিবাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক প্রদীপ বসু বলেন, "এখন প্রতি বাসে কম করে ৬০০-১০০০টাকা লোকসান হচ্ছে। ৬০০ বাস ও মিনিবাস চলছে। প্রতিদিন ২০ শতাংশ বাস চলছে। ৩০ হাজার বাস মালিক ও শ্রমিক একেবারে অথৈ জলে। এরই মধ্যে ২ মাসের জন্য অস্থায়ী ১০০ অটো চালু করেছে। তাতে ক্ষতি আরও বাড়ছে’’। প্রদীপবাবু আরও বলেন, "এমনই হাল বেবিফুডও কিনতে পারছেন না বাসের কন্ডাক্টররা। যেখানে সাড়ে ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা দিনে রোজগার ছিল। এখন তা দাঁড়িয়েছে ২৭০০-২৮০০ টাকায়। কন্ডাক্টরের কমিশন সাড়ে ৮ শতাংশ। তাহলে ভেবে দেখুন কী অবস্থা’’।

উত্তরের বাস পরিবহণের সমস্যা নিয়ে বৈঠক করেছেন পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। নতুন ফোরামও তৈরি করেছেন। বাসকর্মী তপন দাস বলেন, "যে ভাবে আয় হওয়া উচিত তা হচ্ছে না। মালিকদের প্রায় এক হাজার টাকা ক্ষতি হচ্ছে। তাঁরা বাস চালাতে চাইছেন না। প্রতি ট্রিপে যেখানে ১০০০-১৫০০ টাকা আসত। এখন সেখানে ৫০০ টাকা হচ্ছে। কী করে সংসার চালচ্ছি তার খবর কে রাখে? আমাদের আবার কী দীপাবলি’’!

আরও পড়ুন: মমতা-নোবেলজয়ী অভিজিতের ‘পুরানো সম্পর্ক’, কী বললেন মুখ্যমন্ত্রী?

একদিকে বাসকর্মী, অন্যদিকে বাসমালিক, সকলেই ফাঁপরে পড়েছেন। কোনও দিশা দেখতে পাচ্ছেন না তাঁরা। মালিকদের দাবি, বাস চালাতে গিয়ে তাঁদের পকেটের টাকা খরচ হয়ে যাচ্ছে। গৌতম দাস বলেন, "আমারা নতুন রুটে বাস চালিয়ে দেখছি পকেট থেকে টাকা চলে যাচ্ছে। যানজটের জন্য বাড়তি সময় লাগছে। মালিক-শ্রমিক কারও কিছু থাকছে না। প্রতিদিন এখন বাড়তি ৫০০ টাকা পকেট থেকে টাকা যাচ্ছে" ।

রাজ্যে এখন উৎসবের মরশুম। রাত পোহালেই কালীপুজো। উত্তরের এই ২৭টি বাস রুটের মালিক ও বাসকর্মীদের আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ ক্রমশ বাড়ছে। বাসকর্মীদের নুন আনতে পান্তা ফুরানোর অবস্থা। আলোর মাসে আঁধারের ঘনত্ব বাড়ছে।

kolkata news
Advertisment