বয়সের ভারে কাহিল অবস্থা হেমন্ত সেতু ওরফে টালার ব্রিজের। তাই আপাতত বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে বাস সহ যাবতীয় বড় বাণিজ্যিক গাড়ি। বিপর্যয়ের হাত থেকে রক্ষা পেতে আগাম পদক্ষেপ হিসেবে কয়েকদিন আগে লরি চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে বৃহস্পতিবার উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক হয়েছে, তারপরেই এমন সিদ্ধান্ত বলে সূত্রের খবর। এর ফলে, এখন টালা ব্রিজ দিয়ে কেবলমাত্র যাতায়াত করতে পারবে ছোট গাড়িই। সম্প্রতি টালা ব্রিজের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে রিপোর্ট জমা দিতে ভারতীয় রেলের অধীনস্ত পরামর্শদাতা সংস্থা রাইটস। এই রিপোর্টে বলা হয়েছে, দীর্ঘদিন মেরামত না করার ফলে আশঙ্কাজনক অবস্থায় রয়েছে টালা ব্রিজ। ফলে যেকোনও সময় ভেঙে পড়তে পারে ব্রিজটি। উৎসবের মরশুমে তাই বড়সড় বিপদ এড়াতেই প্রশাসনের এমন সিদ্ধান্ত বলে মনে করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: বাইকেও হলুদ নম্বর প্লেট? ঐতিহাসিক সিদ্ধান্তের পথে মমতা সরকার
ছবি: শশী ঘোষ
ছবি: শশী ঘোষ
আরও পড়ুন: কলকাতা মেট্রোর নয়া ফরমান: যাত্রী স্বাগত, কিন্তু ভারী ব্যাগ দূর হঠো
নবান্নে সূত্রে আরও জানা যাচ্ছে, যে আজ অর্থাৎ বৃহস্পতিবার বিকালেই বিজ্ঞপ্তি জারি করে টালা ব্রিজ দিয়ে বড় গাড়ির চলাচলে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করবে রাজ্যের পরিবহণ দফতর। এদিন রাত থেকে ট্রাফিক একটু কমলেই পুলিশ যান নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব নিয়ে নেবে। ফলে আগামীকাল থেকে বাস চলাচল একপ্রকার বন্ধ হয়ে যাবে বলে মনে করা হচ্ছে। উত্তর শহরতলির সঙ্গে কলকাতা শহরের যোগসূত্র হিসেবে টালা ব্রিজ বিরাট ভূমিকা পালন করে থাকে। ফলে এই রাস্তায় বাস লরি বন্ধ থাকায় তীব্র যানজটের আশঙ্কা করা হচ্ছে।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন জানান, শুক্রবার দুপুর দুটোর সময় টালা ব্রিজ বিষয়ে তাঁর সঙ্গে বৈঠক করবে পূর্ত দফতর( পি ডব্লিউ ডি) এবং রাইটস এর আধিকারিকরা। টালা ব্রিজ মেরামত করার জন্য যান চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ করে দেওয়া হবে কি না তা নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গৃহীত হবে এই বৈঠকে। তবে প্রাথমিকভাবে যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে তা হল, ব্রিজের দুপ্রান্তে হাইটবার বসানো হবে। যাতে কোনো ভারী যানবাহন ব্রিজে উঠতে না পারে। এছাড়া, 'গ্রেটার ক্যালকাটা গ্যাস'-এর পাইপ লাইনও গিয়েছে টালা ব্রিজের ফুটপাতের তলা দিয়ে। সেই পাইপ লাইনও তুলে ফেলা হবে বলে খবর। টালা ব্রিজের ওপর থেকে ভার কমানোর জন্য কংক্রিটের স্ল্যাব তুলে ফেলার কাজও ইতিমধ্যে শুরু হয়ে গিয়েছে। জানা যাচ্ছে, টালা ব্রিজের নিচ থেকে বসতি সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। তবে টালা ব্রিজ বন্ধ হলে শ্যামবাজারগামী বিকল্প পথ কী হবে তা নিয়ে এখনও চূড়ান্ত হয়নি।