আসন্ন সমাবর্তনে সাম্মানিক ডিলিট এবং ডিএসসি প্রাপকের নাম চূড়ান্ত করাকে কেন্দ্র করে মতানৈক্যর সৃষ্টি হল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে। জানা গিয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয় প্রস্তাবিত চারজন সাম্মানিক ডিলিট প্রাপকের নামকে ঘিরেই রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ের সঙ্গে সাময়িক বিতর্কের পরিস্থিতি তৈরি হয় যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অরবিন্দ ভবনে। কবি শঙ্খ ঘোষ, সলমন হায়দার, সিএনআর রাও এবং সংঘমিত্রা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম আলোচনায় উঠে আসে। এদের মধ্যে দু'জনের নাম নিয়ে দ্বিমত প্রকাশ করেন রাজ্যপাল। সূত্রের খবর, রাজ্যপাল বৈঠকে জানান, এক্ষেত্রে রাজভবনে বৈঠক করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। কিন্তু রাজ্যপালের এই বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে সমর্থন করা হয়নি। বরং তাঁরা ওই চারজনের নামের সিদ্ধান্তেই স্থির থাকেন। তখন কর্তৃপক্ষ জানায়, এই বৈঠকেই সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করতে হবে। শেষমেশ রাজ্যপাল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গেই সহমত হন, এমনটাই সূত্রের খবর।
আরও পড়ুন- ‘মমতার বিরুদ্ধে মুখ খোলায়’ গ্রেফতার কংগ্রেস নেতা, তোলপাড় বঙ্গ রাজনীতি
প্রসঙ্গত, শুক্রবার আচার্য হিসেবে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের কোর্ট মিটিং বা প্রশাসনিক বৈঠকে যোগ দেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। সাধারণত এমন বৈঠকে উপস্থিত থাকেন না রাজ্যপাল। কিন্তু নজিরবিহীন ভাবে রাজ্যপালের আজকের এই বৈঠকে যোগদান ঘিরে শিক্ষামহলে তৈরি হয়েছে জোর জল্পনা। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রশাসনিক বৈঠকে যাওয়া নিয়ে রাজ্যপাল বলেন, “যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মান ক্রমাগত উন্নত হওয়া উচিত, এবং তাকে অবশ্যই নিজের প্রাতিষ্ঠানিক মর্যাদা ধরে রাখতে হবে”।
আরও পড়ুন- রাজ্যপালের নিরাপত্তা নিয়ে নজিরবিহীন সিদ্ধান্ত
উল্লেখ্য, ১৯ সেপ্টেম্বর বাবুল সুপ্রিয় হেনস্থাকাণ্ডের পর এই প্রথম বিশ্ববিদ্যালয়ে পা রাখলেন আচার্য ধনকড়। গত মাসে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়কে বিশ্ববিদ্যালয় চত্বর থেকে ‘উদ্ধার’ করার ঘটনাকে ঘিরে মমতা সরকারের সঙ্গে বাগবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন রাজ্যপাল। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার স্নেহমঞ্জু বসু জানিয়েছিলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের কোর্ট মিটিংয়ে রাজ্যপালের অংশ নিতে আসার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে। সাধারণভাবে কোর্ট মিটিংয়ে উপস্থিত থাকেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, সহ-উপাচার্যরা, বিভিন্ন বিভাগীয় প্রধান, এবং রাজ্যের উচ্চশিক্ষা দফতরের প্রতিনিধিরা।
আরও পড়ুন- পশ্চিমবঙ্গে “নিরাপত্তাহীন রাজ্যপাল”! কী বলছেন রাজনীতিকরা?
সমাবর্তনে সাম্মানিক ডিগ্রি প্রাপকদের বাছাই করার প্রক্রিয়া সম্পর্কে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সংগঠনের এক আধিকারিক জানান, সাধারণভাবে দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে বিভিন্ন বিভাগীয় প্রধানদের নিয়ে গঠিত এক্সিকিউটিভ কাউন্সিলের দ্বারাই নির্বাচিত হন প্রাপকরা। এই নামের তালিকা পাঠানো হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কোর্টে, যেখানে তালিকা চূড়ান্ত হওয়ার পর তা যায় আচার্যের কাছে, যিনি তা অনুমোদন করেন।