সারাদিনের ব্যস্ততা এবং মানসিক চাপ কাটিয়ে এখন ভাল থাকা খুব দায়। তার সঙ্গেই চারিদিকের পরিবেশ- উদ্বেগ সৃষ্টি হওয়া স্বাভাবিক। সেই কারণেই নিজেকে ভাল রাখা খুব জরুরি। দরকার পড়লে অবশ্যই চিকিৎসা করাতে হবে বেশ কিছু শারীরিক হরমোনের। মেডিকেল শাস্ত্র অনুযায়ী আপনার উদ্বেগ, মনখারাপ অতিরিক্ত ভাবনা সবকিছুর জন্যই কিন্তু দায়ী শারীরিক হরমোন। সেগুলি ঠিক থাকলে এর থেকে রেহাই পেতে সুবিধা হবে।
বিশেষজ্ঞ এবং পুষ্টিবিদ রাশি চৌধুরীর বক্তব্য, অনেক সময়ই মনে হয় যে মানসিক ভাবে কেউ দুর্বল হয়ে পড়ছেন, সবকিছুই হাতের বাইরে বেরিয়ে যাচ্ছে এবং এই নিয়েই মানুষ অবসাদে ভুগতে শুরু করেন। যেটি কিন্তু খুবই খারাপ। তবে এর পেছনের কারণ সম্পর্কে অনেকেই জানতে নারাজ। এটি কিন্তু শুধু আপনার মানসিক অশান্তি একেবারেই নয়, এটি আপনার পারিপার্শ্বিক হরমোনাল সমস্যা।
তিনটি হরমোনের কথা উল্লেখ করেন রাশি। স্ট্রেস হরমোন, সেক্স হরমোন এবং থাইরয়েড হরমোন। এই তিনটি প্রভাব কিন্তু মানবদেহে খুবিই বেশি। সুতরাং কী করতে হবে না! এই তিনটিকে বেশ আয়ত্বে রাখতে হবে।
স্ট্রেস হরমোন : যখনই আমাদের মানসিক চাপ থাকে তখনই শারীরিক বেশ কিছু হরমোন যেমন অ্যাড্রেনালিন এবং কর্টিসল এগুলি বেশি মাত্রায় ক্ষরণ হয় এবং সেই থেকেই হতে পারে সমস্যা। মানসিক চাপ বাড়তে থাকে এবং দিনের পর দিন একই পরিস্থিতি বজায় থাকলেই কিন্তু ঝামেলা আরও বাড়ে। শরীর ক্লান্ত থাকা কিংবা বিশ্রাম চাওয়া এটি কিন্তু বেজায় স্বাভাবিক তারপরেও দরকার স্ট্রেস থেকে বিলুপ্তি। এবং এর সঙ্গে স্ট্রেসের প্রচুর যোগ! স্ট্রেস বাড়লে এইসব হরমোনের ক্ষরণ ক্রমশই বাড়তে থাকে। তাই নিজেকে অল্প হলেও হাসিখুশি রাখুন, সুস্থ থাকুন, আনন্দে রাখুন। বাঁধনে রাখবেন না।
সেক্স হরমোন : এস্ট্রোজেন এবং টেস্টস্টেরন হরমোনের প্রভাবে কিন্তু মারাত্বক পরিমাণে উদ্বেগ বাড়তে পারে। সেই কারণেই ঋতুচক্রের সময় হোক কিংবা মেনোপজের পর এমনকি শিশু জন্মের পরেও কিন্তু বেজায় মানসিক সমস্যা দেখা দেয়। সেই কারণেই বিশেষ করে এই নির্দিষ্ট সময়গুলোতে শান্ত থাকতে হবে। এবং অবশ্যই ভাল খাওয়াদাওয়া করার, মনের ইচ্ছে অনুযায়ী সবকিছু করতে হবে।
থাইরয়েড হরমোন : এটি এখনকার দিনে খুব স্বাভাবিক। ছোট থেকে বড় সকলের এই রোগের লক্ষণ থাকতে পারে। হার্ট-রেট বেড়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে অত্যধিক ভাবনা চিন্তা এবং হাত পা কাঁপা এবং সেই সঙ্গেই মানসিক অশান্তির লক্ষণ মেলে সবসময়। কোনও কিছুতেই মন বসানো যায় না।
এই হরমোনগুলো আয়ত্বে রাখলেই কিন্তু অনেক সমস্যার সমাধান। প্রতি দুই তিন মাস অন্তর স্ট্রেস হরমোন এবং থাইরয়েড চেক করতে হবে। তার সঙ্গেই ভাল থাকতে হবে নিজের মত করে। মানসিক জোর দিয়ে কোনও কাজ করা চলবে না। যেরকম ভাল থাকেন ঠিক সেটিই করুন।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন