Advertisment

বাংলার 'মিষ্টি গল্প': ধর্মরাজের পুজো থেকে বাঁকুড়াবাসীর মণিকোঠায়, মেচা সন্দেশ আজও সমান জনপ্রিয়

মেচা সন্দেশের ইতিহাস কিন্তু গ্রামবাংলার পুজো-পার্বণ দিয়েই শুরু।

author-image
Anurupa Chakraborty
New Update
NULL

বাঁকুড়ার বেলিয়াতোড়ে মেচা সন্দেশ

বাংলার আনাচে কানাচে মিষ্টির কথা যখন হচ্ছেই তখন বাঁকুড়ার মেচা সন্দেশের কথা উঠবে না, এমন হওয়ার নয়। গড়ন কিছুটা পান্তুয়ার মতো হলেও স্বাদে কিন্তু একেবারেই আলাদা। মেচা সন্দেশের ইতিহাস কিন্তু গ্রামবাংলার পুজো-পার্বণ দিয়েই শুরু। আজকের বিশেষ প্রতিবেদনে এই প্রাচীন মিষ্টির কাহিনী জানুন।

Advertisment

তা-ও প্রায় ২০০ বছর আগের কথা। এই মিষ্টির স্রষ্টা শ্রী গিরিশ চন্দ্র দাস মোদক। নিজে হাতে গুড়ের লাড্ডুকে অন্য রূপ দিয়েছিলেন তিনি। তাঁর পরবর্তী প্রজন্মের বর্তমান সদস্য শ্রী ভগবান দাস মোদক বললেন, যেটুকু ইতিহাস তাঁর বাবার থেকেই শোনা। ধর্মরাজের পুজো উপলক্ষেই মেলা বসে বাঁকুড়ার বেলিয়াতোড় অঞ্চলে। শ্রাবণের পূর্ণিমায় ধর্মরাজের গাজন মেলা উপলক্ষেই চলে আনন্দ এবং বিরাট আয়োজনেই পুজো হয়।

publive-image
সন্দেশ বানানোর আগে গাঠিয়া তৈরি হচ্ছে।

ধর্মরাজ এখানে একাধারে বিষ্ণু এবং মহেশ্বর। ভগবানবাবু বলেন, "একবার বাবার উৎসবেই গুড়ের লাড্ডু বর্ষাকালে ডেলা পাকিয়ে যায় কিংবা জল কেটে যায়। তখন অগত্যাই নতুন নিয়মে, ঢেঁকিতে সেই লাড্ডু গুঁড়ো করে পুনরায় হাতে গোল আকৃতি দিয়ে শালপাতার ওপর রাখা হয়।" তবে মেচা সন্দেশের নামের কোনও ইতিহাস নেই, শুধুই মনগড়া। আজও কিন্তু সমানতালে ধর্মরাজের পুজোয় এটি দেওয়া হয়। এছাড়াও অন্যান্য সময় তো বটেই! ভগবান বাবুর বক্তব্য, "প্রকৃত মেচা সন্দেশ খেলে সেই স্বাদ একেবারেই কেউ ভুলতে পারবেন না।"

আরও পড়ুন বাংলার ‘মিষ্টি গল্প’: স্বয়ং রামকৃষ্ণদেবের প্রিয় ছিল এই মিষ্টান্ন, কামারপুকুরের ‘সাদা বোঁদে’ স্বাদে অনন্য

তবে শালপাতায় রাখার নিয়ম একটু অবাক হওয়ার মত। ভগবান বাবু বললেন, অনেক দিন ধরেই চলে আসছে এই নিয়ম - সবথেকে বড় কথা অতিরিক্ত মিষ্টি এই পাতা শুষে নেয় এবং তার সঙ্গেই শাল পাতার যে সুন্দর গন্ধ রয়েছে সেটি কিন্তু এর সঙ্গে মিশে যায়। তিনি আরও বললেন, কলকাতার বহু জায়গায় সুনাম পেয়েছেন এই মিষ্টি নিয়ে। এছাড়া সুদূর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতেও তার মিষ্টি পৌঁছেছে, সেখানকার মানুষ যথেষ্ট প্রশংসা করেছেন।

publive-image
মেচা সন্দেশ বানানো হচ্ছে

দাম কেমন এই মিষ্টির? ভাল মেচা সন্দেশের ১টির দাম ১০ টাকা। এক কেজি ২০০ টাকা। আবার সুগার ফ্রি মেচা সন্দেশ বানানো হয়, মানুষ খেয়ে যথেষ্ট খুশি। তাই এর চাহিদা ক্রমশ বাড়ছে।

আরও পড়ুন বাংলার ‘মিষ্টি গল্প’: ইংরেজ সাহেবের মন কাড়ে এই মিষ্টি, নজরকাড়া ‘মনোহরার’ ইতিহাস

কীভাবে বানানো হয় এই মিষ্টি?

সমগ্র প্রক্রিয়া বেশ জটিল। তবে উপকরণ হিসেবে লাগে, ক্ষীর, গাওয়া ঘি, এলাচ, পেস্তা, কাজু, চিনি এবং ছোলার বেসন। ছোট ছোট ভাগে একে গাওয়া ঘিয়ে হালকা ভেজে নিয়ে সেই থেকে গাঠিয়া বানানো হয় তারপর নানা প্রক্রিয়ায় একে লাড্ডুর রূপ দেওয়া হয়, সবশেষে চিনির রসে ডুবিয়ে রাখা হয়।

publive-image
সুগার ফ্রি মেচা সন্দেশ
sweets of bengal mecha sondesh
Advertisment