Advertisment

Shyamnagar Mulajore Kali: শ্যামনগর মূলাজোড় ব্রহ্মময়ী মন্দির, পৌষকালীর তীর্থস্থান

Shyamnagar Bromhomoyee Paushkali: প্রতিবছর পৌষমাসজুড়ে এই মন্দিরের সামনে মেলা বসে। এখানে দেবীকে পৌষমাসে জোড়া মুলো দিয়ে পুজো করার রীতি প্রচলিত আছে। ভক্তদের বিশ্বাস, এখানে যাঁরা পুজো দিয়ে থাকেন, দেবী তাঁদের কাউকে নাকি খালি হাতে ফেরান না।

author-image
Chinmoy Bhattacharjee
New Update
Shyamnagar। Bromhomoyee। Kali। Temple

Shyamnagar Bromhomoyee Temple: স্বয়ং রানি রাসমণিও তাঁর বাল্যকালে বহুবার এই মন্দিরে এসেছিলেন। আর, দেবীর পুজো দিয়েছিলেন।

Shyamnagar Bromhomoyee Kali Mandir: পৌষকালী পুজো। আর সেখানে শ্যামনগর মূলাজোড় কালীবাড়ির প্রসঙ্গ উঠবে না, তা কি হয়? এই কালীবাড়ি বা কালীমন্দির শ্যামনগর ব্রহ্মময়ী কালীমন্দির নামে পরিচিত। ১৮০৯ খ্রিস্টাব্দের ৩১ বৈশাখের পূর্ণিমা তিথিতে গোপীমোহন ঠাকুর, দেবী ব্রহ্মময়ী কালীমন্দিরের প্রতিষ্ঠা করেন। এই মন্দিরের বাম এবং ডানপাশে ছ'টি করে শিবমন্দির আছে। এই মন্দিরগুলো সম্পূর্ণ করেন গোপীমোহনের ছেলে প্রসন্নকুমার। মন্দিরের পাশেই রয়েছে গঙ্গা। শ্যামনগর স্টেশনের এক নম্বর প্ল্যাটফর্ম থেকে নেমে হেঁটে এই মন্দিরে যাওয়া যায়। পৌষকালী পুজো উপলক্ষে এখান বিরাট মেলা বসে। এবারও তার অন্যথা হয়নি।

Advertisment

একনজরে:-

  • শিয়ালদহ-নৈহাটি লাইনে শ্যামনগর স্টেশনে নামতে হবে।
  • শ্যামনগর স্টেশন থেকে এই মন্দিরে যেতে সময় লাগে দুই থেকে তিন মিনিট।
  • মন্দির খোলা থাকে সকাল ৭টা থেকে দুপুর ১২টা ৩০ পর্যন্ত। বিকেল ৪টা থেকে রাত ৮টা ৩০ অবধি।

এই মন্দির সম্পর্ক প্রচলিত আছে যে কলকাতার পাথুরিয়াঘাটার জমিদার ও প্রিন্স দ্বারকানাথ ঠাকুরের ভাই জমিদার গোপীমোহন ঠাকুর দেবী কালীকে কন্যা বলে মনে করতেন। পরবর্তীতে তিনি দেবীকে কন্যারূপেই পান। তাঁর কন্যার নাম ব্রহ্মময়ী ছিল বলে এই মন্দিরের নাম ব্রহ্মময়ী কালী। গোপীমোহন ঠাকুর সেই সময়ে বাল্যবিবাহ প্রথা মেনে তাঁর মেয়ের আট বছর বয়সেই বিয়ের ব্যবস্থা করেছিলেন। বিয়ের দিন সকালে তাঁর মেয়ে গঙ্গাস্নানে যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন। সেই মতো পালকিতে চাপিয়ে তাঁর মেয়েকে আহিরিটোলা ঘাটে গঙ্গাস্নানে পাঠান গোপীমোহন ঠাকুর। কিন্তু, গঙ্গাস্নানের সময় সমস্ত লোক নদী থেকে উঠে এলেও ব্রহ্মময়ী আর ওঠেননি।

Shyamnagar। Bromhomoyee। Kali। Mandir
Paushkali Shyamnagar Bromhomoyee: কথিত আছে, দেবী এখানে কাউকে খালি হাতে ফেরান না।

কন্যাশোকে প্রায় উন্মাদের মত হয়ে গিয়েছিলেন গোপীমোহন। কথিত আছে, এই সময় গোপীমোহন স্বপ্নাদেশ পান। সেই স্বপ্নাদেশে তাঁকে বলা হয়েছিল, মূলাজোড়ের গঙ্গার তীরে তাঁর কন্যাকে পাওয়া যাবে। সেই স্বপ্নাদেশ পেয়ে গোপীমোহন ঠাকুর মূলাজোড়ের গঙ্গার তীরে যান। সেখানে তাঁর কন্যার মৃতদেহ পান। এমনটাও কথিত আছে যে সেখানেই কষ্টিপাথরের দেবীমূর্তি পান গোপীমোহন ঠাকুর। সেই কষ্টিপাথরের বিগ্রহে দেবীমূর্তির নীচে শায়িত মহাদেব। তারপরই গোপীমোহন এই মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন। ভক্তদের দাবি, এই মন্দির প্রতিষ্ঠার পর থেকে বিভিন্ন অলৌকিক ঘটনা লক্ষ্য করা যায়।

আরও পড়ুন- না-চাইতেই জল, বিশেষ তিথি মৌনি অমাবস্যা, দূর করে ফেলুন যাবতীয় সমস্যা

এই কথা প্রচলিত আছে যে সাধক রামপ্রসাদ সেন একবার গঙ্গায় নৌকো চেপে তাঁর বাড়ি হালিশহরে যাচ্ছিলেন। আর, যাওয়ার পথে গান গাইছিলেন। দেবী এই মন্দিরে ছিলেন দক্ষিণমুখী। সাধক রামপ্রসাদের গান শোনার জন্য বিগ্রহ নাকি পশ্চিমমুখী হয়ে যায়। এমনটাই দাবি ভক্তদের। সাধক বামাক্ষ্যাপাও এই মন্দিরে এসে দেবী ব্রহ্মময়ীকে নিজে হাতে পুজো করেছিলেন। এই মন্দির একটি নবরত্ন মন্দির। এখানকার শিব মন্দিরগুলোর মধ্যে ১০টি বাংলার আটচালা আদলে তৈরি। আর, দুটি শিবমন্দির পঞ্চরত্ন।

আরও পড়ুন- বামাক্ষ্যাপার শিষ্য, অলৌকিক শক্তির অধিকারী তারাক্ষ্যাপার মন্দির আজও মনস্কামনা পূরণের তীর্থক্ষেত্র

শোনা যায়, স্বয়ং রানি রাসমণিও তাঁর বাল্যকালে বহুবার এই মন্দিরে এসেছিলেন। আর, দেবীর পুজো দিয়েছিলেন। পরবর্তীতে রানি রাসমণির তৈরি দক্ষিণেশ্বরের ভবতারিণী মন্দির অনেকটাই শ্যামনগর মূলাজোড় কালীমন্দিরের আদলে তৈরি হয়েছে। প্রতিবছর পৌষমাসজুড়ে এই মন্দিরের সামনে মেলা বসে। এখানে দেবীকে পৌষমাসে জোড়া মুলো দিয়ে পুজো করার রীতি প্রচলিত আছে। ভক্তদের বিশ্বাস, এখানে যাঁরা পুজো দিয়ে থাকেন, দেবী তাঁদের কাউকে নাকি খালি হাতে ফেরান না।

আরও পড়ুন- আজ দেবী পৌষকালীর পুজো, জেনে নিন বিস্তারিত

কীভাবে আসবেন এই কালী মন্দির? শিয়ালদহ-নৈহাটি লাইনে শ্যামনগর স্টেশনে নামতে হবে। শোনা যায়, লর্ড ডালহৌসির আমলে মূলাজোড়ের নাম পরিবর্তন করে করা হয়েছিল শ্যামনগর। শ্যামনগর স্টেশন থেকে এই মন্দিরে যেতে সময় লাগে দুই থেকে তিন মিনিট। মন্দির খোলা থাকে সকাল ৭টা থেকে দুপুর ১২টা ৩০ পর্যন্ত। বিকেল ৪টা থেকে রাত ৮টা ৩০ অবধি।

Kalighat Ma Kali Kalighat temple Kali Puja Kali Temple
Advertisment