Advertisment

মুখগহ্বরের সমস্যায় ডায়াবেটিস কি ভীষণ মাত্রায় ক্ষতিকর? উপকার পাবেন কী করে!

ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের অবশ্যই তাঁদের দাঁত পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পরিষ্কার করার জন্য ডেন্টিস্টের কাছে যেতে হবে।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

সমস্ত রোগের সূত্রপাত ঘটায় ডায়াবেটিস। রক্তে অতিরিক্ত গ্লুকোজের মাত্রা, কিডনি, হার্ট, চোখ, ব্রেন এবং শরীরের অন্যান্য অন্ত্রের সমস্যা ঘটায়। তার সঙ্গে হাই ব্লাড প্রেসার এক অন্যতম বাহক। কিন্তু শুধু এখানেই শেষ নয়, অতিরিক্ত মাত্রায় ডায়াবেটিস ওরাল হেলথ বা মুখগহ্বরের নানান সমস্যার সৃষ্টি করে।

Advertisment

ডা. অভিজিৎ শরণ (DNB, সিনিয়র পরামর্শক চিকিৎসক, মেডিকা উত্তরবঙ্গ ক্লিনিক) জানান, ডায়াবেটিস দাঁত এবং মাড়ির অসুস্থতা বৃদ্ধি করতে সক্ষম। রক্তে অতিরিক্ত গ্লুকোজের মাত্রা পেরিয়ডেন্টাল সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে। এসবের সঙ্গে সঙ্গে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে দিতে পারে। মাড়ি ফুলে যাওয়া, রক্ত পড়া, দাঁতে হলুদ ছোপ এককথায় এই সমস্যাগুলি যে হাই ব্লাড সুগারের ফলস্বরূপ তা বুঝতে অনেকেই ব্যর্থ হন।

কী কী সমস্যার সৃষ্টি হয়?

মাড়ির ফোড়া, পিরিওডন্টাল রোগ, ছত্রাকের সংক্রমণ যেমন থ্রাশ, দাঁত ক্ষয়, মুখের আলসার, স্বাদ পরিবর্তিত হওয়া এবং মুখ শুকনো অনুভব করা।

পেরিওডন্টাল বা মাড়ির রোগ হল এক ধরনের সংক্রমণ যা মাড়ির চারপাশে ক্ষয় করে এবং দাঁতকে চোয়ালের সঙ্গে ধরে রাখতে দেয় না। চোয়ালের হাড়ের মধ্যে দাঁত আটকে থাকা হাড় ধ্বংসের ফলে চিবানোতে সমস্যা হতে পারে। কখনও কখনও আটকে থাকা হাড়ে খাবার জমে ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ ঘটায় এবং সেই থেকে প্লাক গঠন হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। সময় অনুযায়ী চিকিৎসা না করলে, মাড়ি থেকে রক্তপাত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। মাড়ির রোগের লক্ষণ হল;
• লাল মাড়ি, ফুলে যাওয়ার সঙ্গে রক্তপাত
• মাড়ি থেকে ক্রমাগত পুঁজ বের হওয়া
• দাঁত আলগা হয়ে যায় এবং মাড়ি থেকে দূরে সরে যায়
• বাজে স্বাদ অনুভব হয়
• শ্বাসের সঙ্গে বাজে গন্ধ
• প্লাক এবং টারটার জমতে থাকে

এছাড়াও মুখের ভেতর থ্রাস বা ক্যান্ডিডিয়াসিস হল সবচেয়ে সাধারণ মৌখিক ছত্রাকের সংক্রমণ যা মুখগহ্বরের ইস্টের অত্যাধিক বৃদ্ধির ফলে সৃষ্ট হয়, যা স্বাভাবিকভাবেই মুখের মধ্যে ঘটে। শুকনো মুখ, লালারসে উচ্চ গ্লুকোজের মাত্রা এবং সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য দুর্বল প্রতিরোধের কারণেই মৌখিক গহ্বরে ক্যান্ডিডিয়াসিস বৃদ্ধি পায়। মৌখিক থ্রাশ মুখের ভিতরের আবরণে সাদা বা লাল হিসাবে প্রদর্শন করে। কখনও কখনও ওরাল থ্রাশ বেদনাদায়ক আলসার সৃষ্টি করতে পারে। রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিরা ওরাল থ্রাশ এড়াতে পারে।

আরও পড়ুন শরীরের একটি নির্দিষ্ট জায়গা থেকে কি মেদ কমানো সম্ভব?

ডায়াবেটিস রোগীদের যে কারণেই দাঁত এবং মাড়ির সমস্যার সৃষ্টি হয়, তাদের মাঝে মাঝেই মুখ ভীষণ মাত্রায় শুকনো হয়ে যায়। যথারীতি তাদের লালারসে সুগারের পরিমাণ বেশি থাকে। মুখে উপস্থিত ব্যাকটেরিয়া, লালারসে উপস্থিত সুগারের উপাদানের সঙ্গে মিশে অ্যাসিড গঠনের কারণ হতে পারে যা ধীরে ধীরে দাঁতের এনামেল দ্রবীভূত করে এবং একটি গহ্বর সৃষ্টি করে। তবে সমস্যা যেমন আছে এর সমাধানও তেমন আছে। কিছু নিয়ম ও চিকিৎসকের পরামর্শ ধীরে ধীরে মুখগহ্বরের সমস্যার সমাধান করতে পারে।

যে নিয়মগুলি মেনে চলা উচিত:

ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের অবশ্যই তাদের দাঁতের পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পরিষ্কার করার জন্য দাঁতের ডাক্তারের কাছে যেতে হবে। এছাড়াও, গহ্বর এবং মাড়ির রোগ প্রতিরোধ করতে তাদের অবশ্যই মৌখিক স্বাস্থ্যবিধি বজায় রাখতে হবে। এছাড়াও,

• ডায়েটে প্রচুর পরিমাণে সবুজ এবং শাক যুক্ত করুন।
• ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী আপনার ওষুধ নিন।
• দিনে দুবার ফ্লোরাইড সমৃদ্ধ টুথপেস্ট দিয়ে দাঁত পরিষ্কার করুন।
• দাঁতের ফ্লস দিয়ে আপনার দাঁত পরিষ্কার করুন যাতে দুটি দাঁতের মধ্যে খাদ্যের অবশেষ জমা না হয়।
• শুকনো মুখ এড়িয়ে চলুন-প্রচুর জল পান করুন বা চিনিমুক্ত গাম চিবান।
• সিগারেট খাওয়া থেকে বিরত থাকুন

নিয়মিত দাঁত মাজার অভ্যাস রাখুন, কোনও ভালও ওরাল মাউথ ওয়াশ দিয়ে স্টেরেলাইজ করুন। সপ্তাহে একদিন নিম দাতন ব্যবহার করুন।

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন

health diabetes
Advertisment