Learn about the mysterious Fishing Cat: পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপ্রাণী হল মেছো বিড়াল। এর বৈজ্ঞানিক নাম প্রিওনাইলুরাস ভিভেরিনাস। এদের বাঘরোলও বল হয়। ২০১২ সালে এই প্রাণীকে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপ্রাণীর স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। এই সিদ্ধান্তের মূল কারণ হল, বাঘরোল পশ্চিমবঙ্গের জলাভূমি ও গ্রামীণ পরিবেশের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত একটি বন্যপ্রাণী। পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জায়গায় বহু জলাভূমি রয়েছে। যা, পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই বাঘরোল সেই জলাভূমিরই সম্পদ হিসেবে বাস্তুতন্ত্র রক্ষায় সাহায্য করে।
দেখতে কেমন?
গৃহপালিত বিড়ালের চেয়ে আকারে খানিকটা বড় এই প্রাণীটি মাঝারি আকৃতির বন্য বিড়াল। এদের পা তুলনামূলকভাবে বড়। আর, এদের থাবাগুলোও বড়। যা আংশিকভাবে জলচর জীবনে অভ্যস্ত প্রাণীর থেকে থাকে। এদের মুখে বড় বড় গোঁফ দেখা যায়। যা জলের নড়াচড়া বুঝতে সাহায্য করে। এই প্রাণী প্রধানত জলাভূমি, পুকুর ও ম্যানগ্রোভ অরণ্যে বসবাস করে।
কোথায় বেশি পাওয়া যায়?
পশ্চিমবঙ্গের সুন্দরবন অঞ্চল, হাওড়া, হুগলি এবং উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলায় মেছো বিড়াল বেশি দেখা যায়। কারণ, রাজ্যের অন্যান্য প্রান্তের চেয়ে এই সব অঞ্চলে জলাভূমির সংখ্যা বেশি। এই বিড়ালরা সাধারণত রাতে শিকার করে এবং মাছ, কাঁকড়া ও ব্যাঙের মত বিভিন্ন ছোট প্রাণী খায়।
কেন এই প্রাণী রাজ্যপ্রাণী?
পশ্চিমবঙ্গের নদীমাতৃক এবং জলাভূমিতে ভরা পরিবেশের সঙ্গে এই প্রাণীর জীবনযাত্রা খুবই সামঞ্জস্যপূর্ণ। মেছো বিড়াল রাজ্যের প্রাকৃতিক জীববৈচিত্র্যের প্রতীক হিসেবে পরিচিত। বাস্তুতন্ত্র রক্ষায় এর গুরুত্ব অপরিসীম। তবে দুঃখের বিষয় যে, আজ এই প্রাণী বিলুপ্তির মুখে রয়েছে। জলাভূমির সংখ্যা কমে যাওয়া এবং বসতির চাপ বৃদ্ধি পাওয়ার জন্য এদের বাসস্থান ক্রমশই সংকুচিত হচ্ছে। তাই এদের সংরক্ষণে সরকারি এবং বেসরকারি স্তরে চেষ্টা চলছে। রাজ্যপ্রাণী ঘোষিত হওয়ায় এই প্রাণীগুলোর প্রতি সরকারি নজরদারি বাড়বে। একথা মাথায় রেখেই বাঘরোলকে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপ্রাণী বলে ঘোষণা করা হয়েছে।
আরও পড়ুন- গরমে জল না দিলে শুকিয়ে যাচ্ছে গাছ? এই উপায়ে রাখুন তরতাজা
জলাজমির কাছাকাছি থাকে
সাধারণ বিড়ালরা জল দেখে ভয় পায়। জল এড়িয়ে চলে। কিন্তু, এই সব মেছো বিড়ালগুলো দক্ষ সাঁতারু। এদের মূলত দক্ষিণ এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াতেই বেশি দেখা যায়। যার মধ্যে দেশের পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলোর মধ্যে এই বিড়ালগুলোকে দেখা যায় পশ্চিমবঙ্গে। এরা জলাভূমির কাছাকাছি থাকতে বেশি পছন্দ করে। কারণ, এদের খাদ্য মূলত জলাজমি থেকেই মেলে।