পশ্চিমবঙ্গের হাওড়া জেলার আমতা। এখানে রয়েছে দেবী মেলাইচণ্ডীর সতীপীঠ। এই সতীপীঠের পিছনের দিকে রয়েছে গ্রহরাজের মন্দিরটি। মেলাইচণ্ডী দেবীর মন্দিরের ডানদিক থেকে একটি রাস্তা বেরিয়ে গিয়েছে। সেই রাস্তা দিয়ে একটু গিয়েই বাম দিকে পড়বে শনিদেবের মন্দির। ভক্তদের দাবি, এই মন্দিরের বিগ্রহ, অর্থাৎ গ্রহরাজ অত্যন্ত জাগ্রত। কথিত আছে, এখানে শনিদেবের কাছে কেউ যদি কোনও প্রার্থনা করলে তা পূরণ হয়। তবে, যেহেতু শনিদেব কর্মফলদাতা। তাই ওই ব্যক্তির কর্মফলের ভোগান্তিও তাঁর পিছু ছাড়ে না।
ভক্তদের দাবি, এই মন্দিরের অনেক বয়স। ঠিক কবে এই মন্দির প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, তা নাকি আজ পর্যন্ত কেউ বলতে পারেননি। ভক্তদের আরও দাবি, প্রতিরাতে গ্রহরাজ এই মন্দিরে হেঁটে বেড়ান। বহু ভক্তই নাকি শনিদেবের পদচারণার শব্দ শুনেছেন। এই মন্দিরে শনিদেবের নিত্যপুজো হয়। ভক্তদের একাংশ আবার এই মন্দিরে গভীর রাতে শনিদেবের নীল কাপড় উড়তে দেখেছেন। সেই কাপড় উড়ে মন্দিরের ভিতরে ঢুকে গিয়েছে। এমনটাও দেখেছেন বলে দাবি বেশ কিছু ভক্তের।
এই মন্দিরে প্রতি শনিবার সকাল ৯টা থেকে শনিদেবের পুজো শুরু হয়। পুজো চলে রাত ৯টা পর্যন্ত। গ্রহরাজের বাৎসরিক পুজো হয় শ্রাবণ মাসে। শ্রাবণের শনিবারগুলোয় গ্রহরাজের পুজো শুরু হয় সকাল ৬টা থেকে। এই সময় শনিদেবের পুজো রাতভর চলে। প্রধান পুজো হয় রাতে। সেই সময় শনিদেবকে খিচুড়ি ভোগ দেওয়া হয়। সঙ্গে ছয় রকমের ভাজা থাকে, লেবু থাকে, পান থাকে। যার মধ্যে পানকে মুখশুদ্ধি হিসেবে ব্যবহার করার জন্য ভোগে দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন- কয়েক শতাব্দীর মন্দির, যেখানে সরস্বতীর সঙ্গে পূজিতা হন তাঁর দুই বোনও
এই মন্দির থেকে হুপিং কাশি-সহ বেশ কিছু রোগের ওষুধ দেওয়া হয়, একেবারে বিনামূল্যে। ভক্তদের দাবি, তাতে উপকৃত হয়েছেন বহু রোগী। বর্তমান সময়ে কুসংস্কার, অন্ধবিশ্বাসের মত শব্দ ব্যবহার করে অলৌকিক ঘটনাকে চেপে রাখার চেষ্টা হয়। সেখানে আমতার এই শনিমন্দির প্রতিদিন অলৌকিক ঘটনার সাক্ষী রাখছে। এমনটাই দাবি এখানকার ভক্তদের।