সারাদিনের ব্যস্ততা কাটিয়ে নিজের শরীরের দিকে নজর দেওয়ার সময় একেবারেই হয় না বললেই চলে।অতিরিক্ত কাজের ফলে খাবার স্কিপ করা, অপর্যাপ্ত ঘুম এবং সেই থেকে মানসিক চাপ শরীরে ভিতরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গগুলির ভীষণ সমস্যা ঘটায়। তার সঙ্গে বাইরের খাবার তো আছেই।
Advertisment
আবার অনেকেই এমনও আছেন নিজের বুদ্ধিতেই বানিয়ে নিয়েছেন ডায়েট চার্ট। এতে লাভ কিন্তু কিছুই নেই, চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া খাবার খেলে তা বিফলে যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি। কী পরিমাণে কোন খাবার খেলে তা হজম করতেও সহজ হবে সেই সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া উচিত। খাবার হজম সঠিকভাবে না হলে অম্বল, কোষ্ঠকাঠিন্য, গ্যাসের সমস্যা এবং তার সঙ্গে বুকে জ্বালাভাব অনুভব হয়। তাই হজম বিরোধী বিষয় প্রসঙ্গে অবশ্যই জানা দরকার কারণ এটি বিপাকের সঙ্গে সঙ্গে সামগ্রিক স্বাস্থ্যকে ধ্বংস করতে পারে।
আয়ুর্বেদিক বিশেষজ্ঞ গীতা ভারা এই প্রসঙ্গে বেশ কিছু ধারণা দিয়েছেন। তার বক্তব্য, সঠিক খাবার না খেলে তো বটেই তবে অনেকসময় লক্ষ্য করা যায় যে একজন ব্যক্তি যদি স্বাস্থ্যকর এবং সুষম খাদ্যও গ্রহণ করেন তবুও এটি হজমের টক্সিন তৈরি করতে পারে। সুতরাং শুধু খারাপ বা জাঙ্ক ফুড খাওয়াই হজমের বিপাক ঘটায় না, সঙ্গে অবশ্যই জড়িত থাকে কিছু খারাপ অভ্যাস যার ফলে শরীরের এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। ভারসাম্যহীন খাদ্যের মতো আমাদের খারাপ অভ্যাসের কারণে শরীরে টক্সিন বৃদ্ধি পায়। সেগুলি কী কী?
• ক্ষুধামন্দা: খাবার ইচ্ছে শরীরে না থাকার অর্থই হজমের সমস্যা। পাচনতন্ত্রের গোলমাল সঠিকভাবে হজম করতে সক্ষম নয়। তাই এমতাবস্থায় খাবার খেলেও শরীরের অপকারই হবে।
• কাঁচা এবং ঠান্ডা খাবার: যদি আমাদের হজমের প্রক্রিয়া দুর্বল হয় তাহলে কাঁচা এবং ঠান্ডা খাবার হজম করা কঠিন হয়ে পড়ে। এটি বদহজম, অন্ত্রের অনিয়ম ইত্যাদি সৃষ্টি করে। তাই খাবার রান্না করে এবং গরম করেই খাবেন।
• বদহজম: বদহজম মানেই শরীরে অম্বলের লক্ষণ। তাই এরম অনুভূত হলে আগেই শরীরকে রিলাক্স রাখুন। এরকম সময় বেশি কিছু খাবেন না। খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। অত্যধিক মাত্রায় খেলে এর রেহাই নেই।
• খাবারের সঙ্গে অত্যাধিক জল খাওয়া উচিত নয়: খাবার খেলেই হবে না তার সঙ্গে হজম হতেও দিতে হবে। খাবার হজমের জন্য পাচনতন্ত্রের সক্রিয়তা প্রয়োজন আর অতিরিক্ত জল সেবন সেটি ক্রমশই নিষ্ক্রিয় করে তোলে। তাই খেতে বসে জল কমই খাবেন।
• মানসিক চাপ: আপনি কি লক্ষ্য করেছেন যে আপনি যখন সত্যিই চাপ বা মন খারাপ করেন তখন আপনি খেতে পারেন না? যখন আমরা চাপে থাকি, আমাদের ক্ষুধামন্দা এমনিই চলে আসে। বিশ্রাম এবং ডাইজেস্ট মোডে থাকা ভীষণ প্রয়োজন দক্ষতার সঙ্গে আত্মীকরণ করতে।
• অনিয়মিত খাদ্যাভ্যাস: খাবার এড়িয়ে যাওয়া, ক্ষুধা ছাড়াই খাওয়া, এক বেলায় অতিরিক্ত অংশ, খাবারের অনুপযুক্ত সময়, ঘুমানোর আগে খাওয়া বা ব্যায়াম করা আমাদের হজমের প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করতে পারে। তাই প্রতিদিন একই সময়ে এবং সঠিক সময়ে খাবার খাওয়া অভ্যাস করুন।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন