Advertisment

ধনতেরাস মানেই জাতীয় আয়ুর্বেদ দিবস, জানেন কেন?

জানেন, কেন ভারত সরকারের আয়ুর্বেদ, যোগ, ন্যাচারোপ্যাথি, উনানি, সিদ্ধ এবং হোমিওপ্যাথি মন্ত্রক এই দিনটিকে 'জাতীয় আয়ুর্বেদ দিবস' হিসেবে পালন করে আসছে ২৮ অক্টোবর, ২০১৬ থেকে?

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
dhanteras 2019

ধনতেরাস ঠিক কার উৎসব? অলঙ্করণ: অভিজিৎ বিশ্বাস

কার্তিক মাসের কৃষ্ণপক্ষের ত্রয়োদশ দিনে সাধারণভাবে পালিত হয় ধনতেরাস নামক উৎসব। সেটা বেশি খটোমটো মনে হলে এভাবেও ভাবতে পারেন - কালীপুজোর দুদিন আগে ধনতেরাস। অর্থাৎ আজ, শুক্রবার। সন্ধ্যা ৭.০৮ মিনিট থেকে রাত ৮.২২ মিনিট পর্যন্ত নতুন সোনা, রূপো, বা অন্যান্য ধাতব বস্তু কেনাকাটা করার শুভ সময়, এমনটাই বলছে তিথিনক্ষত্র। অনেকে আরও বড় কিছুও কেনেন এদিন, যেমন গাড়ি।

Advertisment

আমরা সকলেই জানি, ভারতের নানা অঞ্চলে ধনতেরাস পালিত হয় মূলত 'ধন'-এর উৎসব হিসেবে। প্রধানত উত্তর এবং পশ্চিম ভারতে 'ধনতেরাস' মানেই হলো দেওয়ালির সূচনা, লক্ষ্মীর আরাধনা, ঘরদোর পরিষ্কার করা, সোনাদানা বা নতুন বাসনকোসন কেনা। দেখাদেখি গত বেশ কয়েক বছর ধরে অসংখ্য বাঙালিও সোৎসাহে নেমে পড়েছেন ধনতেরাস পালনে, যদিও এবছর কলকাতার সোনার বাজারে এসেছে ভাটার টান

কিন্তু ধনতেরাস মানে যে আদতে 'ধন' নয়, লক্ষ্মীপুজো নয়, সোনাদানা কেনা নয়, তা জানেন কি? এও কি জানেন, যে ভারত সরকারের আয়ুর্বেদ, যোগ, ন্যাচারোপ্যাথি, উনানি, সিদ্ধ এবং হোমিওপ্যাথি (সংক্ষেপে AYUSH) মন্ত্রক এই দিনটিকে 'জাতীয় আয়ুর্বেদ দিবস' হিসেবে পালন করে আসছে ২৮ অক্টোবর, ২০১৬ থেকে?

আরও পড়ুন: রবি ঠাকুরের নামে আছে জুরাসিক যুগের ডাইনোসর, জানতেন?

তার কারণ, ধনতেরাসের দিন পূজিত হতেন ধন্বন্তরী, যিনি ভারতীয় শাস্ত্রমতে আয়ুর্বেদের দেবতা, যাঁর কল্যাণে আমরা লাভ করেছি সুপ্রাচীন এই চিকিৎসা পদ্ধতি। অতএব 'ধনতেরাস' শব্দটির উৎস 'ধন' নয়, 'ধন্বন্তরী ত্রয়োদশী', সংক্ষেপে ধনতেরাস। হিন্দু পুরাণে বলে, সমুদ্র মন্থনের সময় উঠে আসেন ধন্বন্তরী, এক হাতে অমৃতপূর্ণ কলস, অন্য হাতে আয়ুর্বেদের বই। পুরাণে তিনি বর্ণিত হয়েছেন দেবতাদের 'বৈদ্য' অর্থাৎ চিকিৎসক হিসেবে।

কবে কীভাবে এই উৎসব পুরোদস্তুর ধনসম্পদের উৎসবে পরিণত হলো, কবেই বা 'গড অফ হেলথ' ধন্বন্তরীর জায়গায় অধিষ্ঠিত হলেন 'গডেস অফ ওয়েলথ' মা লক্ষ্মী, তা জানা যায় না, কিন্তু আজও বহু বাড়িতে ঘরদোর পরিষ্কার করে, সাধ্য থাকলে নতুন করে রঙ করে, ধনতেরাসের দিন সন্ধ্যাবেলা ধন্বন্তরীর পুজো করা হয়। প্রদীপ দেওয়া হয় তুলসীতলায় বা বাড়ির দোরগোড়ায়, যাতে যমরাজ এই উৎসবের আমেজে অকস্মাৎ বাধা না দিতে পারেন।

অবশ্য দেশের বেশিরভাগ অঞ্চলেই আসন্ন দীপাবলি উৎসবের আনন্দে ধনতেরাসের দিন লক্ষ্মীরই পুজো হয়। বাড়ির প্রধান প্রবেশপথ সাজানো হয় আলো দিয়ে, আলপনা বা রঙ্গোলি দিয়ে। ধনতেরাসের রাতে সারা রাত ধরে জ্বলে প্রদীপ। ভজন, পূজন, মিষ্টির নৈবেদ্য দিয়ে স্বাগত জানানো হয় লক্ষ্মীকে। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে তৈরি হয় বিভিন্ন প্রকারের নৈবেদ্য।

নতুন কিছু কিনতে হলে, বিশেষ করে সোনা, রূপো, বাসন বা অন্য কোনও ধাতু, এর চেয়ে ভালো দিন আর নেই, এমনই বিশ্বাস হিন্দুদের মধ্যে। অর্থাৎ নতুন 'ধন' হয়ে ওঠে সৌভাগ্যের প্রতীক। বর্তমান অর্থনৈতিক টালমাটালের সময় তা কতদূর প্রযোজ্য হবে, তা অবশ্য জানা নেই।

Diwali
Advertisment