ব্যারাকপুর স্টেশনে এক নম্বর প্ল্যাটফর্মের সঙ্গেই রয়েছে হনুমান মন্দির। ব্যারাকপুরের ওপর দিয়ে যাঁরা ট্রেনে যাতায়াত করেন, তাঁরা প্রতিদিনই এই মন্দির দেখতে পান। মন্দিরটি কিন্তু আজকের নয়, বহুদিনের। এক অশ্বত্থ বা পিপল গাছের নীচে মাটির মূর্তি বসিয়ে প্রথমে এখানে হনুমানজির পুজো করা হত। বর্তমানে সেই জায়গাতেই রয়েছে এক সাজানো গোছানো মন্দির। যা তৈরি হয়েছে ১৯৭১ সালে। ক্রমশ এই জাগ্রত মন্দিরের কথা ছড়িয়ে গিয়েছে জনসাধারণের মধ্যে। ব্যারাকপুর ও পার্শ্ববর্তী অঞ্চলের বহু মানুষ এই মন্দিরে পুজো দিতে আসেন। নিজেদের মনস্কামনা পূরণের জন্য এই মন্দিরে প্রার্থনা জানান।
হনুমানজির পাশাপাশি এখানে রয়েছে রামসীতা, শিব ও অন্যান্য দেবতাদের মূর্তিও। শুধু পুজোপাঠই নয়। এই মন্দিরকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন সমাজ সেবামূলক কাজও চলে নিয়মিত। কাঁচরাপাড়া থেকে দমদম, বারাসত থেকে রিষড়া- বিস্তীর্ণ অঞ্চলের বাসিন্দারা এই মন্দিরে যাতায়াত করেন। ভক্তদের দাবি, এই মন্দিরের হনুমানজি অত্যন্ত জাগ্রত। তিনি অকাতরে ভক্তদের মনোবাঞ্ছা পূরণ করেন। বহু পুরোনো, জটিল এবং দূরারোগ্য রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিও এই মন্দিরে এসে হনুমানজির কৃপায় রোগ থেকে মুক্তি পেয়েছেন বলেই দাবি ভক্তদের।
<পড়ুন: বাইশে ফ্লপের বাহার, মন্দা বাজার! তেইশের শুরুতেই ‘ধম্ম-কম্মে’ মন বলিউড তারকাদের>
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, এই মন্দিরের এক ভক্তের ছেলে আট বছর বয়সেও কথা বলতে পারছিল না। কিন্তু, তবুও ওই ব্যক্তি এই মন্দিরে নিয়মিত যাতায়াত করছিলেন। ভগবানের কাছে প্রার্থনা করে যাচ্ছিলেন নিয়মিত। তার জেরে ওই ব্যক্তির ছেলে আজ কথা বলতে পারে। শুধু তাই নয়, সেই ছেলে বর্তমানে অনেক উঁচু ক্লাসে পড়ছে। এমনভাবেই বহু অসুস্থ রোগী এই মন্দিরে নিয়মিত যাতায়াত এবং পুজোপাঠের মাধ্যমে উপকৃত হয়েছেন। অনেক বেকার যুবক-যুবতীর কর্মসংস্থানের জন্য প্রার্থনা পূরণ করেছেন হনুমানজি। অনেক বিবাহযোগ্যা মেয়ের বিয়ে হচ্ছিল না। তাঁদের বিয়ে হয়েছে এই মন্দিরে প্রার্থনার পর।
আরও পড়ুন- যে মন্দিরে মানত করলে কঠিন রোগ থেকে মেলে মুক্তি, কোলে আসে সন্তান
ভক্তরা জানিয়েছেন, স্বাধীনতা লাভের সময়কাল থেকেই এখানে পুজোপাঠ চলছে। মন্দিরের বাবাজি ধর্মরাজ তিওয়ারি, গৌতমদাসজি মহারাজ নামে এক সন্ন্যাসীর পরামর্শ এবং অনুপ্রেরণায় এখানে সেই সময় পুজোপাঠ চলছিল। পাশাপাশি চলতে শুরু করে সমাজসেবাও। তা আজও চলছে। এমনকী, করোনা অতিমারির সময়ও এই মন্দিরের তরফে স্থানীয় বাসিন্দাদের বিনামূল্যে খাদ্য পরিবেশন করা হয়েছে। বিনামূল্যে অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা দেওয়া হয়েছে। রেলের জমিতে এই মন্দির। সেই মন্দির এতই জাগ্রত যে রেলের আধিকারিকরা কোনওদিন এই মন্দিরকে ব্যারাকপুর স্টেশন চত্বর থেকে সরানোর চেষ্টা পর্যন্ত করেননি। এমনটাই দাবি ব্যারাকপুরের এই হনুমান মন্দিরের ভক্তদের।