Health Tips for Summer Heat Wave: প্রাক বর্ষা নিয়ে বেশ কিছুদিন মাতামাতি হলেও বর্ষা আপাতত নিরুদ্দেশ। যাকে বলে একেবারে বিনা নোটিশে। গত বৃহস্পতিবারই তাপমাত্রার পারদ ছুঁয়েছিল ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এবং এই কয়েকদিনের অতিরিক্ত উষ্ণতায় নাজেহাল শহরবাসী। বৃষ্টির আশ্বাস দিতে পারছে না আবহাওয়া দপ্তরও। চিকিৎসকরা বলছেন এমন আবহাওয়ায় চোখ, কান, নাক, গলার সংক্রমণ হতে পারে, তাপমাত্রার তারতম্যের জেরে কনজাংটিভাইটিসের বা জয়বাংলার মত সমস্যারও সম্ভবনা রয়েছে। এ ছাড়াও গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা, সর্দিগর্মি, হঠাৎ করে রক্তচাপ কমে যাওয়া, ডিহাইড্রেশন, পেশিতে ব্যাথা ইত্যাদি গরমের খুব সাধারণ উপসর্গ। দেখে নিন এই সময়ে আপনার কী করা উচিৎ।
জলই হাতিয়ার: এই প্রবল গরমে অসুস্থ হয়ে পড়াটাই খুব স্বাভাবিক। তাই লড়াইয়ে মূল হাতিয়ার হল প্রচুর পরিমাণে জল খাওয়া। তবে রাস্তার ধারে বিক্রি হওয়া সরবত খাবেন না, এতে জলবাহিত রোগের সম্ভবনা বাড়ে। রোদে বেরোলে ব্যাগে জল রাখুন। চড়া রোদ থেকে বাড়ি ফিরে সঙ্গে সঙ্গেই ঠান্ডা পানীয় পান না করে কিছুক্ষণ জিরিয়ে নিয়ে তবেই জল খান। মাঝে মাঝে নুন-চিনির জল, ডাবের জল, গ্লুকোন-ডির জল পান করুন। ডিহাইড্রেশন হলে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে ইলেকট্রলও খেতে পারেন। কোল্ড ড্রিংক বা সফট ড্রিংক এড়িয়ে চলুন।
খাবারে নজর দিন: দুপুরে মাটন কষা, রাতে বিরিয়ানি, এসব নৈব নৈব চ। প্রচন্ড গরমে অতিরিক্ত তেল-মশলা দেওয়া খাবার না খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা। স্কুল, কলেজ বা অফিসের টিফিনে বাড়ির তৈরি সহজপাচ্য খাবার খান। রাস্তার ধারের কাটা ফলের বদলে বাড়িতে ফল কিনে এনে তা ভাল করে ধুয়ে খান। জলের পরিমান বেশি এমন ফল রাখুন তালিকায়, যেমন শশা, তরমুজ ইত্যাদি।
আরও পড়ুন: Summer Special: কুলিং জ্যাকেটের মতো কুলিং বোরখাও বানাবে রূপম
পেট ভর্তি রাখুন: দীর্ঘক্ষণ পেট খালি থাকলে শরীরে জলের অভাব হবে। আর তা থেকেই শরীরে অস্বস্তি শুরু হতে পারে। শরীরের সাধারণ তাপমাত্রা (৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস) বেড়ে গিয়ে মেটাবলিজমের হারও বাড়িয়ে দেয়। ফলে হৃদযন্ত্র ঠিকঠাক কাজ করতে পারে না। তাই খালি পেটে না থেকে বারবার অল্প অল্প করে খাওয়া যেতে পারে।
তাপমাত্রা সম্পর্কে সচেতন থাকুন: রোদ থেকে বেরিয়েই শীততাপনিয়ন্ত্রিত ঘরে ঢুকবেন না, বা শীততাপ নিয়ন্ত্রিত ঘর থেকে বেরিয়েই সোজা রোদে যাবেন না। শরীর তাপমাত্রার এই ক্রমাগত পার্থক্যটা মানিয়ে নিতে পারে না। এতে সর্দিগর্মির সমস্যা দেখা দিতে পারে। চড়া রোদ মাথায় সরাসরি না লাগানোই ভাল, কাজেই বেরোনোর সময় অবশ্যই সঙ্গে ছাতা এবং সানগ্লাস রাখুন, সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন।
কী পরবেন: সঠিক জামাকাপড় বাছুন। রোদে বেরোনোর সময় সাদা বা হালকা রঙের সুতির পোশাক পরুন। কালো বা গাঢ় রঙ এড়িয়ে চলুন। আঁটোসাঁটো পোশাকের বদলে ঢিলেঢালা পোশাক পরুন।
এছাড়াও, একাধিকবার স্নান করুন। এতে ঘামের জীবানু নাশ হবে। পরিস্কার পরিচ্ছন্ন থাকলে ত্বকের সংক্রমনের ভয়ও কমবে।
গরমে শিশুদের মধ্যে হাম, মাম্পস, এবং ত্বকের নানাবিধ সমস্যা দেখা দেয়। এ ছাড়াও টাইফয়েড, হেপাটাইটিসের মতো জলবাহিত রোগও দেখা দিতে পারে, তাই তাদেরকেও বাইরের জল, ঠান্ডা পানীয়, রাস্তার ফলের রস না দেওয়াই ভাল। বাড়ির খাবারও যাতে স্বাস্থ্যসম্মত হয় সেদিকেও নজর দেওয়া দরকার। ছোটদের বারবার ভেজা কাপড়ে গা মোছানোর পাশাপাশি তাদের পোশাকের দিকেও নজর দিন, হালকা সুতির পোশাক পরান আপনার খুদেকে। শিশু এবং বৃদ্ধদের যেহেতু রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অপেক্ষাকৃত কম, সেই কারণে এদের দিকে নজর দিতে হবে বেশি।