ঐতিহ্য আর নস্ট্যালজিয়া। কলকাতা শহরের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গীভাবে যুক্ত। ধর্মতলার হগ মার্কেট এ দুটো শব্দকে একসঙ্গে ধারণ করে রেখেছে দীর্ঘকাল ধরে। এই বাজার প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ব্রিটিশ শাসনকালে, সন ১৮৭৪-এ। তারপর প্রায় দেড়শ বছর হতে চলল। হগ মার্কেট নিজেকে বিস্মৃত হতে দেয়নি। শহরে অনেক ঝকঝকে তকতকে বাজার হয়েছে, নিত্যনতুন খুলছে শপিং মল, তা সত্ত্বেও কৌলীন্য হারায়নি এ বাজার। শহরের প্রাণকেন্দ্র ধর্মতলার খুব কাছেই অবস্থিত হগ মার্কেট পুজো কিংবা ঈদের মতন উৎসবের দিনগুলিতে রীতিমত লোকারণ্যে পরিণত হয়ে চলেছে ব্যতিক্রমহীনভাবেই।
স্থাপত্যের দিক থেকে দেখলে হগ মার্কেট একেবারেই উপনিবেশকালকে মনে পড়িয়ে দেয়। বর্তমানে হগ মার্কেটে দোকানের সংখ্যা ২০০০-এরও বেশি। (Express photo by: Shashi Ghosh)
লোকে বলে, এখানে মেলে আলপিন থেকে এলিফ্যান্ট।সে কথায় খুব বেশি অবিশ্বাসও করে না কেউ। (Express photo by: Shashi Ghosh)
চকচকে হগ মার্কেটের আশেপাশে চোখ মেললে প্রদীপের নিচের আঁধারের মত চোখে পড়বে ঘিঞ্জি গলি-ঘুঁজিও। (Express photo by: Shashi Ghosh)
আরও ফটোস্টোরি দেখতে ক্লিক করুন: এবার গালিবের আন্দাজ-এ-বঁয়াকে কুর্নিস করল তিলোত্তমার রাস্তা
মুরগি কিংবা মাটন থেকে শুরু করে আমিষের সমস্ত রকমারির হদিশ পাওয়া যাবে হগ মার্কেটের অন্দরে। (Express photo by: Shashi Ghosh)
আগে এখানে হাট বসত। হাটের দ্রব্যাদি থেকে আধুনিক ওজনযন্ত্রের যাত্রাপথ পেরিয়ে এসেছে হগ মার্কেট। (Express photo by: Shashi Ghosh)
দীর্ঘ জীবনকালে অনেক তরুণকে প্রবীণ হতে দেখেছে এ বাজার। এ বাজারকে নজরবন্দি করে রেখেছে বহু প্রবীণ চোখ।(Express photo by: Shashi Ghosh)
আরও ফটোস্টোরি দেখতে ক্লিক করুন: খেরোর খাতা: বাঙালি নববর্ষের অন্যতম সঙ্গীর শেষের শুরু
আমিষাশীরাই শুধু নন, শুদ্ধ শাকাহারী মানুষজনও এ বাজারে আসেন প্রাত্যহিক, তাজা সবজির খোঁজে। (Express photo by: Shashi Ghosh)
উনবিংশ শতাব্দীতে মুরগি খাওয়া নিয়ে অনেক বাছবিচার ছিল। এখন আর সে দিন নেই। স্বাস্থ্যবান ব্রয়লার থেকে সরেশ দেশি, সব রকমের রামপাখিই আজ মিলেমিশে থাকে ভোক্তার অপেক্ষায়। । (Express photo by: Shashi Ghosh)
আলো-আঁধারির হগ মার্কেটেও চলে বিকিকিনি। (Express photo by: Shashi Ghosh)
এ ভবনটি তৈরির পর কেটে গিয়েছে ১৪৩ বছর। এর মধ্যে ভারতের স্বাধীনতা পেতেই লেগেছে বেশিরভাগ সময়। ইংরেজরা ভারত ছেড়েছে, রূপ পাল্টেছে হগ মার্কেটের। তবে তৎকালীন ইংরেজ স্থাপত্যের আদলে তৈরি লাল রঙের ভবনটিতে তেমন কোনো বদলের ছোঁয়া লাগেনি। কলকাতা সম্পর্কিত কৌতূহলী ভ্রমণকারীদের কাছে এই হগ মার্কেট অন্যতম পর্যটনবিন্দুও বটে।
কোথাও তখনও ভিড়, কোথাও বিক্রিবাটা শেষ। একই বাজারপথের দুই ছবি। (Express photo by: Shashi Ghosh)
আরও ফটোস্টোরি দেখতে ক্লিক করুন: এলেম প্রাচীন দেশে: ছবিতে দেখুন নকুবাবুর দুর্লভ সংগ্রহশালা
দীর্ঘ ঐতিহ্যবাহী এ বাজার এখনও অবশ্য পরিচ্ছন্নতার প্রশ্নে ততটা আধুনিক নয়। (Express photo by: Shashi Ghosh)
বাজার মানেই হিসেব নিকেশ। (Express photo by: Shashi Ghosh)
দামি ও নামি হোটেল রেস্তোরাঁর ভেটকি ফিলের মতন মেনুর জন্য প্রয়োজনীয় কাঁচামাল এখান থেকেই পাড়ি দেয় হেঁশেলে। (Express photo by: Shashi Ghosh)
আরও ফটোস্টোরি দেখতে ক্লিক করুন: ইঁটভাটার রোজনামচা: ছবিতে প্রান্তিক মানুষের গল্প
আধুনিক হগ মার্কেটে নিজের মত করে স্বমহিমায় টিকে আছে বাটখারা-দাঁড়িপাল্লা। (Express photo by: Shashi Ghosh)
‘ভুলি ভেদাভেদজ্ঞান হও সবে আগুয়ান’ (Express photo by: Shashi Ghosh)
শুধু যে দর্শনীয় স্থান হিসেবেই হগ মার্কেটের কদর মিলেছে সাধারণ মানুষের কাছে, তাই নয়। অসংখ্য মানুষের জীবিকা নির্বাহ হচ্ছে এই হগ মার্কেটকে কেন্দ্র করে। এখানো কারও স্থায়ী দোকান রয়েছে, কেউ বা অস্থায়ী আস্তানা গেড়েছেন হগ মার্কেটের পাশে। বহু মানুষ হকারিও করছেন এই প্রাণচঞ্চল কেন্দ্রটিকে ঘিরে। নিউ মার্কেট ঘিরে তৈরি হয়েছে নানা হোটেল গেস্ট হাউস। এত রকমারি জিনিসের সম্ভার মেলে বলেই, দীর্ঘদিন ধরে একটা কথা চালু আছে, নিউ মার্কেটে মেলে বাঘের দুধও।
ওস্তাদ ওস্তাগরদের খোঁজ মেলে এই হগ মার্কেট চত্বরেই। ঝাঁ চকচকে টেলার শপ ছেড়ে অনেকেই এখানে আসেন তাঁদের খোঁজে। (Express photo by: Shashi Ghosh)