অক্ষম থেকে নাম বদলে হয়েছে বিশেষ ভাবে সক্ষম। কিন্তু পরিস্থিতি, সমস্যা, লড়াইটা পাল্টায়নি। হুইল চেয়ার সহায়, কিন্তু কতক্ষন? ঠেলতে হলেও লাগে অন্য কাউকে। উঠতে গেলেও তাই। পুরো চলাফেরাটাই নিয়ন্ত্রিত। আর চিকিৎসা বা অন্য কোনও প্রয়োজনে হুইল চেয়ার থেকে অন্য কোথায় স্থানান্তরিত হতে হলে তো পুরোপুরি নির্ভর করতে হয় কারোর ওপর। এই নির্ভরতা স্বেচ্ছায় আসেনা। আসে নিরাপত্তাহীনতা থেকে। আর ক্রমশ কমতে থাকে রোগীর আত্মবিশ্বাস।
চেনা সমস্যা। তবু রাস্তা ঘাট, সিনেমাহল, রেস্তোরাঁ, পাবলিক টয়লেট বানানোর সময় শারীরিক প্রতিবন্ধীদের কথা ভাবাই হয় না। সেখানেই ব্যতিক্রম দিল্লি আইআইটির দুই পড়ুয়া - অমিত কুমার এবং ঋতুপর্ণা গুহ। দেশের প্রথমসারির প্রতিষ্ঠানের দুই ঝকঝকে তরুণের চোখ এড়ায়নি প্রতিবন্ধীদের সমস্যা। সম্প্রতি তাঁরা তৈরি করে ফেলেছে এমন এক হুইল চেয়ার, যা কাজ করে খুব সহজ উপায়ে। ব্যবহারকারী নিজেই খুব সহজে চালাতে পারবেন তা। প্রয়োজন মতো অন্য কোথাও স্থানান্তরিত হতে হলে সমস্যা অনেক কমবে এখনকার তুলনায়।
আরও পড়ুন: সৌন্দর্যের সংজ্ঞা কি তবে সত্যি বদলাচ্ছে? ম্যাকের বিজ্ঞাপন কী বলছে?
অমিত আর ঋতুপর্ণার এই আবিষ্কার তাঁদের এনে দিয়েছে ব্রিটেনের জেমস ডায়সন সম্মান। সারা পৃথিবীর নানা দেশ থেকেই এই সম্মানের জন্য আবেদন জমা পড়ে ব্রিটেনে। ভারত থেকেও জমা পড়েছিল শ'খানেক আবেদন। জেমস ডায়সন কর্তৃপক্ষ সেখান থেকে বেছে নিয়েছেন এঁদের আবিষ্কারকেই। পুরস্কার মূল্য হিসেবে ১ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা তুলে দেওয়া হবে তাঁদের হাতে।
শারীরিক প্রতিবন্ধকতা নিয়ে কাজ করে, সারা দেশের এমন অনেক প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল ঘুরে ভুক্তভোগীদের সমস্যাটা বোঝার চেষ্টা করেছিল ঋতুপর্ণা এবং অমিত। সেখান থেকেই এমন এক হুইল চেয়ার বানানোর তাগিদ অনুভব করে তাঁরা।
দেশের বেশিরভাগ আইআইটি পড়ুয়া অথবা গবেষকদের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষের একটা বড় অভিযোগ থাকে, দেশের প্রতিষ্ঠানে পড়ে দেশের মানুষের প্রতি এদের অবদান প্রায় থাকে না বললেই চলে। অমিত কুমার, ঋতুপর্ণা গুহর মতো গবেষকরাও যে আছেন, এ খবর তাদের কাছে বড়ই স্বস্তিদায়ক।