Jamun Seeds Powder: আমাদের চারপাশে এমন অনেক প্রাকৃতিক উপাদান রয়েছে যা হাজার বছর ধরে আয়ুর্বেদিক চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়ে আসছে, কিন্তু আধুনিক যুগে সেগুলো অনেকটাই উপেক্ষিত। তারই একটি হল জামের বীজের গুঁড়ো। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে এই ঘরোয়া উপাদানটি এককথায় অসাধারণ।
ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য কেন জামের বীজ গুরুত্বপূর্ণ?
জামের বীজে থাকে এমন দুটি গুরুত্বপূর্ণ যৌগ – জ্যাম্বোলিন (Jamboline) এবং জ্যাম্বোসিন (Jambosine), যা শরীরের স্টার্চকে চিনিতে রূপান্তরিত করার প্রক্রিয়াকে ধীর করে। এর ফলে রক্তে গ্লুকোজ হঠাৎ করে বাড়ে না।
আরও পড়ুন- সামান্য অর্থেই দূর করুন বাথরুমের দাগ! ঘরোয়া কায়দাই বাঁচাবে আপনার বিপুল খরচ
খালি পেটে খেলেই ফল বেশি?
ব্যাঙ্গালোরের অ্যাস্টার CMI হাসপাতালের ডায়াবেটিস বিশেষজ্ঞ ডা. পূজা পিল্লাই জানিয়েছেন— প্রতিদিন সকালে খালি পেটে এক চা চামচ জামের বীজের গুঁড়ো গরম জলের সঙ্গে খেলে ভালো উপকার পাওয়া যায়। চাইলে আপনি এটি ওটস, স্মুদি বা দইয়ের সঙ্গে মিশিয়েও খেতে পারেন।
আরও পড়ুন- ফেলে দেবেন না কলার খোসা! এর উপকারিতা জানলে আপনি অবাক হতে বাধ্য
আরও যেসব উপকারিতা মেলে জামের বীজ থেকে:
-
রক্তে চিনির মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে
-
হজমে সহায়তা করে ও কোষ্ঠকাঠিন্য কমায়
-
লিভারের কার্যকারিতা উন্নত করে
-
দেহে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সরবরাহ করে
-
প্রদাহ হ্রাস করে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
আরও পড়ুন- ফেলে দেবেন না কলার খোসা! এর উপকারিতা জানলে আপনি অবাক হতে বাধ্য
কতটা খাওয়া নিরাপদ?
বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, দিনে এক চা চামচের বেশি জামের বীজের গুঁড়ো খাওয়া উচিত নয়। কারণ অতিরিক্ত সেবনে হাইপোগ্লাইসেমিয়া বা রক্তে শর্করার মাত্রা খুব কমে যেতে পারে—বিশেষ করে যাঁরা ডায়াবেটিসের ওষুধ খাচ্ছেন।
আরও পড়ুন- এই ঘরোয়া কায়দা আরশোলার যম, আটার গুলিতেই ম্যাজিকের মত কাজ!
কারা ব্যবহার থেকে বিরত থাকবেন?
-
গর্ভবতী ও স্তন্যদানকারী মহিলারা
-
যারা ইনসুলিন ইনজেকশন নিচ্ছেন
-
শিশুদের ক্ষেত্রে ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া নয়
শুধু ফল নয়, ফলের বীজও রত্ন!
গ্রীষ্মের এই সময়ে বাজারে যখন তাজা জাম সহজলভ্য, তখন আপনি কেবল ফল খেয়ে নয়, তার বীজ শুকিয়ে গুঁড়ো করেও ব্যবহার করতে পারেন। আপনি চাইলেই বাজারে পাওয়া জৈব বা অর্গানিক জামের বীজ পাউডার বেছে নিতে পারেন, কিন্তু সেটি যেন অ্যাডিটিভ-মুক্ত ও বিশুদ্ধ হয়, তা নিশ্চিত করুন।
কিভাবে তৈরি করবেন ঘরোয়া উপায়ে?
-
তাজা জাম খাওয়ার পর বীজ আলাদা করে নিন
-
ভালো করে ধুয়ে ছায়ায় শুকিয়ে নিন
-
শুকনো বীজ গ্রাইন্ডারে গুঁড়ো করে রেখে দিন
-
একটি এয়ারটাইট বোতলে রেখে ফ্রিজে রাখুন
জামের বীজের গুঁড়ো শুধুমাত্র ভেষজ ওষুধই নয়, এটি একটি সুপারফুড। তা যদি পরিমিতভাবে এবং নিয়মিত খাওয়া হয় তবে ডায়াবেটিস রোগীদের রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখা সহজ হয়। তবে যেমনটি বারবার বলা হচ্ছে— চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া নতুন কিছু শুরু করবেন না।