King Cobra Species Discovery: দীর্ঘ ১৮৮ বছর ধরে কিং কোবরাকে একটিমাত্র প্রজাতি ওফিওফ্যাগাস হান্না (Ophiophagus hannah) বলে ধরে নেওয়া হচ্ছিল। কিন্তু সাম্প্রতিক এক যুগান্তকারী (জেনেটিক এবং রূপগত) গবেষণা সেই ধারা সম্পূর্ণ বদলে দিয়েছে। ইউরোপীয় জার্নাল অফ ট্যাক্সোনমিতে ২০২৩ সালের ১৬ অক্টোবর প্রকাশিত গবেষণায় দেখা গেছে, কিং কোবরা আসলে একটি নয়, চারটি আলাদা এবং মারাত্মক প্রজাতি।
কীভাবে জানা গেল এই রহস্য?
২০২১ সালে চালানো এক ডিএনএ গবেষণার ভিত্তিতে বিজ্ঞানীরা কিং কোবরার নমুনা বিশ্লেষণ করেছেন। এতে দেখা গিয়েছে, কিং কোবরার একাধিক আলাদা জেনেটিক লাইনেজ রয়েছে। এরপর ১৫৩টি জাদুঘরে সংরক্ষিত নমুনার ওপর বিস্তারিত রূপগত বিশ্লেষণও চালানো হয়েছে। আঁশের প্যাটার্ন, রঙ, দাঁতের গঠন, ব্যান্ডিং এসবই গবেষষণায় বিবেচনা করা হয়েছে।
আরও পড়ুন- রাসায়নিক নয়, চুলে রং আনতে মেহেন্দি-চায়ের গুঁড়োই যথেষ্ট, সাদা চুল ঢাকবে সহজেই!
আনুষ্ঠানিকভাবে চারটি প্রজাতির নামকরণ:
- উত্তর কিং কোবরা (ওফিওফ্যাগাস হান্না)
- সুন্দা কিং কোবরা (ওফিওফ্যাগাস বাঙ্গারাস)
- পশ্চিমঘাট কিং কোবরা (ওফিওফ্যাগাস কালিঙ্গ)
- লুজন কিং কোবরা (ওফিওফ্যাগাস সালভাটানা)
আরও পড়ুন- কারিপাতা নয়, এর সঙ্গে এই একচামচ তেল মিশিয়ে লাগান, খুশকি-রুক্ষতা উধাও হবে!
অ্যান্টিভেনম এবং জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থায় বিপ্লব
এতদিন পর্যন্ত একটি মাত্র প্রজাতির জন্য অ্যান্টিভেনম তৈরি করা হত। কিন্তু এখন জানা গেছে, এই চারটি ভিন্ন ভিন্ন প্রজাতির বিষের প্রকৃতি আলাদা। ফলে অঞ্চলভিত্তিক অ্যান্টিভেনম তৈরি করা ছাড়া উপায় নেই। এই আবিষ্কার স্থানীয় জনস্বাস্থ্য নীতিতেও বড় পরিবর্তন আনবে বলে মত বিজ্ঞানীদের।
আরও পড়ুন- পাকা চুল কালো হবে ঘরোয়া কায়দায়! নারকেলের খোসা দিয়ে বানান চুলের ভেষজ রং
সংরক্ষণে নতুন চ্যালেঞ্জ
বিভিন্ন অঞ্চলভিত্তিক কিং কোবরা সংরক্ষণ পরিকল্পনা এখন থেকে প্রজাতিভিত্তিকভাবে করতে হবে। কারণ কিং কোবরার প্রজাতিগুলি চামড়ার জন্য শিকারিদের নজরে রয়েছে। পাশাপাশি তাদের আবাসস্থল ধ্বংস হচ্ছে এবং মানুষ-সাপ সংঘাতেও এই প্রজাতি বিলুপ্তির পথে। ফলে প্রজাতি ভেদে এই সব সাপ সংরক্ষণ করতে হবে।
আরও পড়ুন- এক চামচ নারকেল তেলে আদা মিশিয়ে লাগান চুলে, অকালে পাকা চুল ও চুল পড়া কমবে চোখে পড়ার মত!
ভবিষ্যতের দিকনির্দেশনা
গবেষকেরা মনে করছেন, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার কিছু দ্বীপপুঞ্জে এখনও নতুন কিং কোবরা প্রজাতি লুকিয়ে থাকতে পারে। জিনোমিক ম্যাপিংয়ের মাধ্যমে আরও নির্দিষ্টভাবে বিষের গঠন এবং বৈশিষ্ট্য বিশ্লেষণ করা হবে। যা এর প্রাণঘাতী কামড় থেকে জীবন বাঁচাতে আরও কার্যকর চিকিৎসার পথ খুলে দেবে।
একটি কিং কোবরা এক ছোবলে মানুষকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিতে পারে। এতদিন তার পরিচয়ই পুরোপুরি জানা ছিল না! এই যুগান্তকারী আবিষ্কার শুধু বিজ্ঞান নয়, চিকিৎসা এবং কিং কোবরা সংরক্ষণ- সবকিছুতেই নতুন পথ দেখাচ্ছে। আর এটিই প্রমাণ করে, প্রকৃতির রহস্য এখনও অনেকটাই অজানা।