রাত পোহালেই মহালক্ষ্মীর আরাধনা। যদিও বাস্তবিক জীবনে দেবীর আরাধনার বিশেষ কোনও দিন নেই। তারপরেও কোজাগরী লক্ষ্মী পুজো মানেই আদি ভগবতীর আরাধনা। এইদিন নিয়ম মেনে, শিষ্ঠাচারে দেবীকে ঘরে আহ্বান করা হয়।
তিনি বিষ্ণুর পত্নীলক্ষ্মী। বিষ্ণুর হৃদয়ে তাঁর স্থান। কিন্তু নারায়ণ প্রিয়া হওয়ার পরেও লক্ষ্মী পুজোয় একেবারেই ব্যবহার করা যায় না তুলসী পাতা। এদিকে, নারায়ণকে তুলসী দান না করলে পুজো সম্পন্ন হয় না। তবে ঠিক কেন লক্ষ্মী আরাধনায় তুলসী একেবারেই চলে না? পুরাণে রয়েছে এর ব্যাখ্যা।
তুলসী শুধু পুজো কিংবা শুভ অনুষ্ঠান নয়, বরং আয়ুর্বেদে এর ভূমিকা বিরাট। গঙ্গাজল তুলসী দিয়ে শুদ্ধ করা হয় সর্বত্র। কিন্তু লক্ষ্মী পুজোয় এর ব্যবহার নৈব নৈব চ। পুরাণ মতে তুলসী দেবী নারায়নের স্ত্রী। নারায়ণ এর শালগ্রাম শিলা রূপের স্ত্রী তুলসী দেবী। তাই, লক্ষ্মীর সঙ্গে একেবারেই তাঁর সাংসারিক সম্পর্ক ভাল নয়। দ্বন্দ্ব এবং বিদ্বেষ লেগেই রয়েছে। এমনকি এও শোনা যায়, দেবী তুলসীর অভিশাপে নারায়ণ শিলা কিংবা পাথরে রূপান্তরিত হয়েছিলেন। স্বামীকে এহেন অবস্থায় দেখেই ক্রোধে ফেটে পড়েন লক্ষ্মীদেবী।
আরও পড়ুন < কোজাগরী পূর্ণিমায় কোন রাশির জাতক কী ভোগ দিলে, সন্তুষ্ট হবেন দেবী লক্ষ্মী >
নারায়ণ এর আশির্বাদ ধন্য দেবী তুলসী। তাই এটি ছাড়া নারায়নের পুজো অসম্পূর্ণ। কিন্তু শিবশক্তি পরিবারের কাউকেই তুলসী অর্পণ করা যায় না। সিদ্ধিদাতা গণেশ থেকে ভগবান শিব কিংবা দেবী দুর্গা - এদের আরাধনায় তুলসী লাগে না। কথিত আছে গণেশ এবং তুলসীর মধ্যেই গোলযোগ বেজায়।
লক্ষ্মী পুজো মানেই লাল কিংবা গোলাপী বসন - শ্বেত বসন একেবারেই চলে না। এমনকি সাদা ফুল পর্যন্ত ব্যবহার করা চলে না। এছাড়াও, আড়ম্বরের মধ্যে থাকবে শঙ্খধ্বনি এবং উলু। সঙ্গে যদি নারায়ণ আরাধনা হয়, তবে ঘণ্টা চলতে পারে। শব্দ যত কম হয়, ততই ভাল। লক্ষ্মী চঞ্চলা, তাই এই পুজোর দিন কোন্দল - বিবাদ যেন না হয়।