পশ্চিমবঙ্গের মানচিত্রে শক্তির আরাধ্যভূমি বীরভূম। রাঙামাটির এই জেলা যেন অনন্য এক সিদ্ধভূমি। এই জেলাতেই রয়েছে তারাপীঠ। রয়েছে কঙ্কালীতলা। আছে দেবী ফুল্লরার মন্দির। এর পাশাপাশি আছে দেবী নলাটেশ্বরী, নন্দীকেশরী। পাশাপাশি রয়েছে শৈবতীর্থ বক্রেশ্বর। এছাড়াও রয়েছে আরও অসংখ্য তীর্থক্ষেত্র। যেমন দুবরাজপুরের লোবা পঞ্চায়েতের লোবা গ্রামে লোবা কালী মন্দির। বীরভূমের সদর সিউড়ি থেকে লোবা গ্রামের দূরত্ব প্রায় ৩৭ কিলোমিটার। আর দুবরাজপুর ব্লক থেকে লোবা গ্রামের দূরত্ব ১৪ কিলোমিটার। কথিত আছে, দেবী লোবা না-ডাকলে, ভক্তরা মন্দিরে পৌঁছতে পারেন না।
বীরভূম জেলার যে সমস্ত স্থান কালীপুজোর জন্য বিখ্যাত,তার মধ্যে এই লোবা কালীমন্দির অন্যতম। কয়েকশো বছরের প্রাচীন এই কালীপুজো। কথিত আছে, বহু মানুষ এই লোবা দেবীর মন্দিরে এসে তাঁদের উত্তরণের পথ খুঁজে পেয়েছেন। পূরণ করেছেন মনস্কামনা। উদ্ধার পেয়েছেন বহু আপদ-বিপদ থেকেও। কয়েকশো বছর আগে সিদ্ধপুরুষ রামেশ্বর দণ্ডী এই পুজো চালু করেছিলেন। তিনি নিজেই মূর্তি তৈরি করতেন। নিজেই পুজো করতেন। আবার, পুজোর পর মূর্তির বিসর্জন দিতেন।
রামেশ্বর দণ্ডী কাশীবাসী হওয়ার আগে লোবা গ্রামের ঘোষ আর চক্রবর্তী পরিবারের হাতে পুজোর দায়িত্ব দিয়ে যান। কার্তিক মাসের কালীপুজোয় এখানে খুব বড় আকারে পুজো হয়। সেই সময় গোটা দেশ থেকে ভক্তরা এই মন্দিরে আসেন। এছাড়াও প্রতি অমাবস্যায় হাজার দুয়েক ভক্ত এই মন্দিরে আসেন। তাঁরা প্রসাদ গ্রহণ করেন। ভক্তদের বিশ্বাস, এই মন্দিরে দেবীর কাছে প্রার্থনা করলে দেবী চিন্তা মুক্ত করে দেন। এর ফলে মন্দিরে উপস্থিত ভক্তদের মনে একটা প্রশান্তি বিরাজ করে।
আরও পড়ুন: অলৌকিক কাহিনিতে ভরপুর, যে মন্দিরে ভক্তদের যাবতীয় মনস্কামনা পূরণ করেন দেবী
এই মন্দিরে পার্থনার ফল হিসেবেই আশপাশে বিভিন্ন বাড়ির আর্থিক সমস্যা মিটেছে। এমনটাই মত ভক্তদের। গ্রামের মানুষের কাছে দেবী লোবা এসব কারণেই ভরসার প্রধান কেন্দ্রস্থল। এই মন্দিরে যে ভক্তরা আসেন, তাঁরাও অনেকেই বংশ পরম্পরায় এখানে আসছেন। কারণ, তাঁদের জীবনেও নানা সমস্যা মিটেছে এই মন্দির থেকেই।