আপনি যখন কাজে মগ্ন আপনার ডেস্কে, তখন ঘাড়ে ব্যথা কি মনোযোগে ব্যঘাত ঘটাচ্ছে? জেনে রাখুন, ঘন্টার পর ঘন্টা ডেস্কে বসে কাজ করার ফলে ঘনিয়ে আসছে বিপদ। আর সেইকারণেই, যে সব কর্পোরেট সেক্টরে অনেকক্ষন ধরে বসে বা দাঁড়িয়ে কাজ করতে হয়, সে সব অফিসে যোগাসনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। কিন্তু আপনি কি সে সুবিধা পান?
আট ঘন্টার বেশি সময় ধরে বসে থাকলে ডিস্কে, ঘাড়, ও পিঠে ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। যে সব কর্পোরেট অফিসে জিম বা যোগাসনের ব্যবস্থা নেই, তাদের কিন্তু ঘোর বিপদ। মূলত এইসব অফিসের কর্মীদের বিভিন্ন ধরনের ঘাড়ের সমস্যা দেখা যায়। তবে সেই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায়ও আছে। প্রতি ঘন্টা অন্তর একবার করে হেঁটে এলে এই ধরনের সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পারেন। কিন্ত এতেই শেষ নয়। অর্থোপেডিক ড: নবীন চাঁদ দাম্বেকোরি জানাচ্ছেন, দীর্ঘ সময়ব্যাপী বসে থাকলে নিম্নোক্ত সমস্যার মুখোমুখি হতে পারেন আপনি:
কার্ডিওভাসকুলার জটিলতা: অনেকক্ষণ ধরে একই ভাবে বসে কাজ করার ফলে উচ্চ রক্ত চাপ ও উচ্চ মাত্রায় কলেস্টেরল বাড়তে পারে। এই কার্ডিওভাসকুলার জটিলতা আপনার জীবনে ঝুঁকি নিয়ে আসতে পারে।
ডায়াবেটিসের ঝুঁকি: যখন একজন ব্যক্তি দীর্ঘ সময় বসে থাকেন, তখন শরীরের পেশীর কোষগুলি উৎপাদিত ইনসুলিনকে সহজেই সাড়া দেয় না। ফলস্বরূপ, অগ্ন্যাশয় আরও ইনসুলিন তৈরি করে, যা থেকে ডায়াবেটিস হতে পারে।
পেশী অধঃপতনের ঝুঁকি: কর্পোরেট জীবনধারায় মানুষের বাড়তে থাকে হাইপারলর্ডিস, টাইট হিপস এবং লাম্প গ্লিউটস।
আরও পড়ুন, সাধারণ দিনগুলো হয়ে উঠুক প্রাণবন্ত, দেখে নিন কী করবেন
পায়ের সমস্যা: অনেকক্ষণ পা ঝুলিয়ে বসে থাকলে পায়ে রক্ত চলাচল ব্যহত হয়। শিরাতে রক্ত জমাট বাঁধতে থাকে, যার ফলে পা ফুলে যেতে পারে।
চাপের মাত্রা বৃদ্ধি: পেশীর মুভমেন্টের সঙ্গে সঙ্গে মুড ঠিক রাখার যে হরমোন তা রক্ত এবং অক্সিজেনের সঙ্গে সরবরাহ হয়। অতএব, যখন একজন ব্যক্তি দীর্ঘ সময় বসে থাকেন তখন পেশির মুভমেন্ট খুব বেশি হয় না। ফলে বাড়তে পারে চাপের মাত্রা।
মেরুদণ্ডের গঠনের ভারসাম্যহীনতা: দীর্ঘ সময় ধরে বসার ফলে মেরুদন্ড সহ ডিস্কের ক্ষতি, কাঁধে ব্যথা হতে পারে।
যখনই কোনো ব্যক্তির পোস্ট্রাল সমস্যা দেখা দেবে, রাতারাতি প্রথমেই এক্স-রে বা এমআরআই স্ক্যান করা প্রয়োজন। তারপরেই নিয়ম মেনেই ব্যায়াম করা বা ফিজিওথেরাপির পরামর্শ দেওয়া হয়ে থাকে। রইল এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়ার আরও কিছু সমাধান।
যোগব্যায়াম: সকাল সন্ধ্যা নিয়ম করে যোগ ব্যায়াম করা প্রয়োজন।
নিয়মিত হাঁটা: প্রতি ঘন্টায় অন্তত একবার ৫ মিনিটের জন্য হাঁটাচলা করুন। যার ফলে শরীরের রক্ত সঞ্চালন স্বাভাবিক থাকবে।
শারীরকে টানটান করুন মাঝের মধ্যে: প্রতি ঘণ্টায় আপনার হাত পা প্রসারিত করুন।
সঠিকভাবে বসুন: কাজ করার সময় খেয়াল রাখুন আপনার পা যেন ফ্লোরের সঙ্গে সমান ভাবে লেগে থাকে। এবং পিঠ সোজা করে বসুন।
ঘাড়ের ব্যায়াম: সোজাভাবে বসুন, তারপর মাথা ধীরে ধীরে একপাশে কাঁধে রাখুন, পুনরায় বিপরীত দিকেও একই ভাবে কাঁধে মাথা দিন। কাজের ফাঁকে ৫ মিনিটের জন্য ব্যায়ামটি করলে, ঘাড়ের সমস্যা দেখা দেবে না।