Makar Sankranti-Ganga Sagar: প্রতিবছর মকর সংক্রান্তিকে বিশেষ উৎসব হিসেবে পালন করেন হিন্দুরা। এই তিথিতে তীর্থস্নান, আচার-অনুষ্ঠান পালন করাই রীতি। এবারও তার ব্যতিক্রম হচ্ছে না।
কাকে বলে মকর সংক্রান্তি?
প্রতিবছর পৌষ মাসে সূর্য দেবতা মকর রাশিতে প্রবেশ করেন। এই সময়টাকে বলা হয় মকর সংক্রান্তি। এই দিনে সূর্যদেবতা দক্ষিণ থেকে উত্তরের দিকে যাত্রা করেন।
মকর সংক্রান্তির সময়কাল
১৫ জানুয়ারি, ভোর ২টো ৪৩ মিনিটে সূর্য ধনু রাশি থেকে মকর রাশিতে প্রবেশ করবেন। পৌষমাসের শেষ দিনে শুক্লপক্ষের পঞ্চমী তিথিতে মকর সংক্রান্তি পালিত হয়। এই সোমবার পুজোর শুভ সময় সকাল ৭টা ১৫ মিনিট। সেই শুভ সময় থাকবে বিকেল ৫টা ৪৬ মিনিট পর্যন্ত।
আরও পড়ুন- না-চাইতেই জল, বিশেষ তিথি মৌনি অমাবস্যা, দূর করে ফেলুন যাবতীয় সমস্যা
এই দিনে করণীয়
শাস্ত্র অনুসারে এই দিনে পবিত্র নদীতে স্নানের পর হলুদ বস্ত্র পরে সূর্যদেবকে জলদান করতে হয়। সূর্যচালিশা পাঠ করতে হয়। সঙ্গে তিল, গুড়, খিচুড়ি এবং বস্ত্র দানেরও চল আছে। এই দিনে নিরামিষ ভোজন করারও চল আছে।
আরও পড়ুন- বামাক্ষ্যাপার শিষ্য, অলৌকিক শক্তির অধিকারী তারাক্ষ্যাপার মন্দির আজও মনস্কামনা পূরণের তীর্থক্ষেত্র
পিতা-পুত্রের মিলন
জ্যোতিষ শাস্ত্র অনুযায়ী, মকর রাশির অধিপতি হলেন শনিদেব। আর, সূর্যদেব হলেন শনিদেবের পিতা। তাই, মকর রাশিতে সূর্যদেবের প্রবেশের অর্থ হল, পুত্রের বাড়িতে পিতার প্রবেশ।
আরও পড়ুন- শ্যামনগর মূলাজোড় ব্রহ্মময়ী মন্দির, পৌষকালীর তীর্থস্থান
সাগর সঙ্গমে ভিড়
পৌরাণিক কাহিনি অনুযায়ী, এই বিশেষ দিনে সগর রাজার ৬০ হাজার সন্তান গঙ্গাদেবীর স্পর্শে বেঁচে উঠেছিলেন। গঙ্গাদেবীর মর্ত্যে কপিল মুনির আশ্রমে আগমনের এই তিথিতে সাগর সঙ্গমে বা গঙ্গাসাগরে মেলা বসে। ভক্তরা পুণ্যস্নান করেন।
আরও পড়ুন- স্বামী বিবেকানন্দ সম্পর্কে অনেকেই জানেন না যেসব তথ্য, জানলে গায়ে কাঁটা দেবে
মকর সংক্রান্তির পৌরাণিক কাহিনি
পুরাণ অনুযায়ী, সূর্যপুত্র শনি ছিলেন কৃষ্ণবর্ণ। সেই কারণে সূর্যদেব তাঁর স্ত্রী ছায়া ও সন্তান শনিকে ত্যাগ করেছিলেন। এরপর সূর্যদেব কুষ্ঠরোগে আক্রান্ত হন। যা দেখে, তাঁর অপর স্ত্রী সঞ্জনার সন্তান যমরাজ উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। তাঁর চেষ্টায় সূর্যদেবের কুষ্ঠ সারলেও এই রোগের জন্য সূর্যদেবের ক্ষোভ গিয়ে পড়ে ছায়া এবং শনির ওপর। সেই তেজে শনি ও তাঁর মায়ের ঘরবাড়ি পুড়ে যায়। যা দেখে দুঃখে কাতর হয়ে পড়েন যমরাজ। তিনি সূর্যদেবকে অনুরোধ করেন শনি ও ছায়াকে ক্ষমা করতে। সেকথা শুনে সূর্যদেব ছায়া ও শনির কাছে যান। সেই সময় সব পুড়ে যাওয়া ঘরে কিছু তিল অবশিষ্ট ছিল। সেই তিল দিয়েই শনি বরণ করে নেন সূর্যদেবকে। ছেলের এই শ্রদ্ধা দেখে তুষ্ট হয়েছিলেন সূর্যদেব। তিনি শনি ও ছায়ার জন্য নতুন ঘর বানিয়ে দেন। যার নাম হয় 'মকর'। এরপর সূর্যদেব ছেলের সেই নতুন ঘরে প্রবেশ করেন। যা মকর সংক্রান্তির সূচনা বলে ধরা হয়।