Advertisment

Ram Temple Kali: রাম মন্দির অভিষেকের দিনও রাবণের শ্বশুরের দেবীর আরাধনা, বিগ্রহ জাগ্রত, দাবি ভক্তদের

Sri Chaitanyadeb: এই গ্রামের পূর্বদিকে উত্তর-দক্ষিণ বরাবর একটি রাস্তা ছিল। যে রাস্তা দিয়ে হরিদ্বার থেকে গঙ্গাসাগর পর্যন্ত যাওয়া যেত। সেই রাস্তার নাম ছিল 'দ্বার-ই জঙ্গল'। কথিত আছে, সেই রাস্তা ধরেই শ্রীচৈতন্যদেব দক্ষিণবঙ্গের ছত্রভোগ হয়ে নৌকোয় চেপে চলে গিয়েছিলেন পুরীতে।

author-image
Chinmoy Bhattacharjee
New Update
Moyda Kalibari। Devi_Kali

Moyda Kalibari। Devi_Kali: স্টেশন থেকে মন্দিরের দূরত্ব প্রায় দুই কিলোমিটার।

Moyda Kali: দক্ষিণ ২৪ পরগনা। যা আঁকড়ে রয়েছে বহু বিখ্যাত জায়গাকে। শিল্প থেকে কৃষি কিংবা ঐতিহ্যের প্রবাহ, আজও বয়ে চলেছে এই জেলার নানা প্রান্ত দিয়ে। বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ অরণ্য এই জেলাতেই। যা সমগ্র বাংলার নাম বিশ্বের দরবারে তুলে ধরেছে। উজ্জ্বল করেছে এই জেলা তথা গোটা রাজ্যের নাম। এমন এক ঐতিহ্যসম্পন্ন জেলারই অংশ হল বহরু।

Advertisment
  • প্রায় ৭৩ শতক জায়গাজুড়ে রয়েছে এই কালী মন্দির।
  • প্রতি শনি ও মঙ্গলবার এখানে ভক্তদের ব্যাপক ভিড় হয়।
  • অন্যান্য দিন পুজো শুরু হয় সকাল ১০টায়। শনি ও মঙ্গলবারে ১২টায়।

অন্যতম একটি প্রাচীন জনপদ এই বহরুর অন্তর্গত ময়দা এলাকা। কথিত আছে, ব্রিটিশ শাসনের আগে পর্তুগিজরা এই ময়দা অঞ্চলে বন্দর বা বাণিজ্যকেন্দ্র গড়ে তুলেছিল। বাংলা সাহিত্যে রায়মঙ্গল কাব্যেও উল্লেখ রয়েছে ময়দা গ্রামের। এই গ্রামের পূর্বদিকে উত্তর-দক্ষিণ বরাবর একটি রাস্তা ছিল। যে রাস্তা দিয়ে হরিদ্বার থেকে গঙ্গাসাগর পর্যন্ত যাওয়া যেত। সেই রাস্তার নাম ছিল 'দ্বার-ই জঙ্গল'। কথিত আছে, সেই রাস্তা ধরেই শ্রীচৈতন্যদেব দক্ষিণবঙ্গের ছত্রভোগ হয়ে নৌকোয় চেপে চলে গিয়েছিলেন পুরীতে।

Moyda Kalibari।Devotees
Moyda Kalibari: প্রতি শনি ও মঙ্গলবার এখানে ভক্তদের ব্যাপক ভিড় হয়।

আরও পড়ুন- শ্যামনগর মূলাজোড় ব্রহ্মময়ী মন্দির, পৌষকালীর তীর্থস্থান

রেলপথে শিয়ালদহ থেকে বহরু স্টেশনের দূরত্ব ৪৪ কিলোমিটার। আসতে হবে লক্ষ্মীকান্তপুর অথবা নামখানা লোকালে চেপে। বহরু স্টেশনের ১ নম্বর প্ল্যাটফর্ম থেকে বেরোলেই দেখা যাবে রিকশা স্ট্যান্ড। রয়েছে মোটরভ্যানও। যাতে চেপে ভক্তরা যাতায়াত করেন ময়দা কালীবাড়িতে। স্টেশন থেকে মন্দিরের দূরত্ব প্রায় দুই কিলোমিটার। মোটরভ্যানে যেতে সময় লাগে প্রায় ১৫ মিনিট।

Moyda Kalibari ।Baharu। South 24 Parganas
Moyda Kalibari-Baharu-South 24 Parganas: এই মন্দির কয়েকশো বছরের পুরোনো।

আরও পড়ুন- বিপুল সমালোচনার ঝড়, কোন জাদুকাঠিতে তা সামলাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী, আসল সত্যি এটাই?

এখানে বহু বছর ধরে পূজিত হচ্ছেন লঙ্কেশ্বর রাবণের শ্বশুর তথা মন্দোদরীর বাবা ময় দানবের আরাধ্যা দেবী পাতালভেদী দক্ষিণাকালী। প্রায় প্রতিদিন এই মন্দিরে ভক্তদের ভিড় লেগেই থাকে। আর, শনি-মঙ্গলবার সেই ভিড় অন্য দিনগুলোকে রীতিমতো টেক্কা দিয়ে যায়। ফুল, মালা, ডালা নিয়ে এই মন্দিরে দেবীকে সন্তুষ্ট করতে হাজির হন ভক্তরা। ২২ জানুয়ারি অযোধ্যায় রাম মন্দিরে অভিষেক। সেদিনও ভক্তদের অনেকেই ভিড় করবেন জাগ্রত এই পাতালভেদী কালীর মন্দিরে। কারণ, ভক্তদের বিশ্বাস, জাগ্রত দেবীর কৃপায় তাঁদের মনস্কামনা পূরণ হয়। কেটে যায় বিপদ-আপদ।

Ram Temple। Ayodhya
Ram Temple-Ayodhya: ২২ জানুয়ারি অযোধ্যার রাম মন্দিরের অভিষেক।

আরও পড়ুন- স্বামী বিবেকানন্দ সম্পর্কে অনেকেই জানেন না যেসব তথ্য, জানলে গায়ে কাঁটা দেবে

প্রায় ৭৩ শতক জায়গাজুড়ে রয়েছে এই কালী মন্দির চত্বর। প্রত্যেক মঙ্গল ও শনিবার এখানে রোগগ্রস্ত মানুষ, নিঃসন্তান নারী, চাকরি, ব্যবসা, মামলা-মকদ্দমা অথবা অন্য সকল ক্ষেত্রে কার্যসিদ্ধির জন্য ভক্তরা ভিড় করেন। মন্দিরের পূজারির তরফে একটি কবচ দেওয়া হয়। যার নাম 'আদ্যাশক্তি রক্ষাকবচ।' এখানে শনি এবং মঙ্গলবার বেলা ১২টায় দেবীর পুজো হয়। আর, সপ্তাহের অন্যান্য দিন পুজো শুরু হয় সকাল ১০টায়। অনেক ভক্তকেই মনস্কামনা পূরণের পর এখানে দণ্ডী কাটতে দেখা যায়।

Moyda Kalibari। Pond।Adi Ganga
Moyda Kalibari। Pond।Adi Ganga: এই পুকুর একসময় আদিগঙ্গার অংশ ছিল।

আরও পড়ুন- সন্তানের খুনি মা! সূচনা শেঠ, ইন্দ্রাণী মুখোপাধ্যায়দের মত ঘটনা কি এই কারণেই বাড়ছে?

এই মন্দিরের প্রাঙ্গণে রয়েছে একটি পুকুর। কথিত আছে, এই পুকুর নাকি একসময় আদি গঙ্গার অংশ ছিল। আজও এই পুকুর বা 'গঙ্গা'র জলে শুদ্ধ হয়েই পরিবার-পরিজনদের ভালোর জন্য, তাঁদের মঙ্গলের জন্য মন্দির চত্বরে ধূপকাঠি, মোমবাতি জ্বালান ভক্তরা। প্রত্যেক বছর কালীপুজো, দুর্গানবমী আর কিছুদিন আগেই চলে যাওয়া মকর সংক্রান্তির দিনে এখানে ভক্তদের ঢল নামে। আয়োজন হয় মেলার।

আরও পড়ুন- পৌষ সংক্রান্তিতে সিদ্ধিলাভ! আদ্যাপীঠের মহাগুরু, কে এই অন্নদাঠাকুর?

মন্দির চত্বরেই রয়েছে দেবীর ভোগঘর। এই মন্দির চত্বরের পরিচ্ছন্নতা চোখ টানবেই। কথিত আছে, বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের দেবী চৌধুরাণী উপন্যাসের ভবানী পাঠকের বাড়ি ছিল এই অঞ্চলেই। তাঁর ভাই মহাদেব পাঠক দীর্ঘদিন এই মন্দিরে দেবীর উপাসনা করেছিলেন। বড়িশার জমিদার সাবর্ণ রায়চৌধুরী পরিবার মন্দিরটি প্রতিষ্ঠা করেন বলেই দাবি মন্দির কর্তৃপক্ষের। সেই কারণে সাবর্ণ রায়চৌধুরী পরিবারের নামেই জ্যৈষ্ঠ পূর্ণিমা, দুর্গা নবমী এবং দীপাবলিতে বিশেষ পুজোর আয়োজন করা হয় এখানে।

Temple pujo work Kali Puja Kali Temple pujo food pujo
Advertisment