অমাবস্যায় বিশেষ কালীপুজোর রীতি বরাবরের। এবারের কৌশিকী অমাবস্যাতেও সেই বিশেষ রীতি পালিত হবে মন্দির থেকে মন্দিরে। আর, সেই মন্দির যদি অতি জাগ্রত বলে পরিচিত হয়, তো কথাই নেই। ভক্তদের ভিড় যথারীতি একটু বেশিই হবে। তেমনই এক জাগ্রত কালীমন্দির রয়েছে শিয়ালদহ-বনগাঁ রেলপথের গোবরডাঙায়। স্টেশন থেকে ভ্যান বা টোটোয় চেপে এই মন্দিরে যাওয়া যায়।
মন্দিরটি তৈরি করেছিলেন গোবরডাঙার জমিদার কালীপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায়। ইংরেজি ১৮৮৮ সালে (বাংলায় ১২২৯ সালের ১ বৈশাখ) এই মন্দির তৈরি হয়। কালীপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায় মন্দির তৈরি করেন বলে এর নাম হয় প্রসন্নময়ী কালী মন্দির। কথিত আছে, দেবী কালীর কৃপাতেই জন্মগ্রহণ করেছিলেন কালীপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায়। সেই জন্যই তাঁর নাম রাখা হয় কালী প্রসন্ন।
উঁচু বেদির ওপর তৈরি এই মন্দির দক্ষিণমুখী। গর্ভগৃহে রয়েছে শ্বেতপাথরের বেদি। এখানকার কালীমূর্তি উচ্চতায় আড়াই ফুট, কষ্টিপাথর দিয়ে তৈরি। কালীর পদতলে শায়িত শিবমূর্তিটি আবার শ্বেতপাথরের। দেবীকে এখানে সোনা-রুপোর অলঙ্কারে সজ্জিতা। দেওয়া হয় নিত্যভোগ, চলে সন্ধ্যারতি। প্রতিবছর নববর্ষ, শারদীয়ার অষ্টমী, কার্তিক অমাবস্যা এখানে বিশেষ পূজাপাঠ চলে। আর, প্রতি শনি-মঙ্গলবারে হয় বিশেষ পূজা। এই সব উৎসবে অংশ নিতে দূর-দূরান্ত থেকে ভক্তরা এই মন্দিরে আসেন।
আরও পড়ুন- ভাগ্য বদলে দিতে পারে এই দিন, এবার কৌশিকী অমাবস্যার পুণ্যতিথি কতক্ষণ থাকবে?
এই সব ছাড়াও শিবরাত্রি এবং গাজনও এখানে সাড়ম্বরে পালিত হয়। মন্দিরের চৌহদ্দির মধ্যেই পূর্ব ও পশ্চিমমুখী ছয়টি করে ১২টি আটচালা শিবমন্দির আছে। প্রতিটি মন্দিরেই নিত্য শিবলিঙ্গ পুজো হয়। আগে এখানে গোষ্ঠ উৎসবের আয়োজন হত। এখন অবশ্য সেই সব বন্ধ।
তবে, উৎসব বন্ধ হলেও আগের মতই একটি মেলা আজও এখানে চলে। চৈত্র সংক্রান্তিতে মেলা শুরু হয়। মুখোপাধ্যায় বাড়ির সামনে এই মেলায় বিভিন্ন মশলার কেনাবেচা হয়। অনেকে এই কারণে এখানকার মেলাকে বলে মশলা মেলা। কেউ আবার পুরোনো রীতি মেনে গোষ্ঠ মেলাই বলে থাকেন। বিক্রেতাদের থেকে তোলা অর্থ প্রসন্নময়ী কালীর পুজোয় কাজে লাগানো হয়।