ওজন কমানো কিন্তু একেবারেই সহজ নয়। খাবারের মোহ মায়া ত্যাগ করে একনিষ্ঠতার সঙ্গে ওজন কমানোর প্রক্রিয়ায় লিপ্ত হলে তবেই মেলে ফলাফল। কিন্তু এমনটা আদৌ কজন পারে? প্রতিদিনের ব্যস্ততা আর কাজের মাঝে এদিক ওদিক খাওয়া-দাওয়া একটু হয়েই থাকে আর শেষমেশ ওজন কমার জায়গায় নয়তো একই থাকছে আর নয়তো বেড়ে চলেছে।
আবার অনেকেই অতিরিক্ত মাত্রায় ডায়েট আর শরীরচর্চার অধীনে সঠিক পরিমাণে খাবার খেতেও ভুলে যান। তবে এর সমাধান আছে। ওজন কমানোর অর্থ কি খাবারের থেকে দূরত্ব? একেবারেই না। পুষ্টিবিদ বিধি চাওলার মন্তব্যে, সঠিক এবং সুস্বাদু খাবার খেয়েও কিন্তু অতিরিক্ত ওজন কমানো যায়। কীভাবে?
কিছু এমন ধরনের সমন্বিত খাবার রয়েছে যেগুলি খেতেও যেমন সুস্বাদু তেমনই ভীষণ মাত্রায় উপকারী। এগুলি ডায়েট বজায় রাখতেও সাহায্য করে তার সঙ্গে শরীরের কিছু কিছু জায়গার অতিরিক্ত মেদ কমাতে, বিপাক বৃদ্ধি করতে এবং শরীরের ফুলে যাওয়া কম করতেও সক্ষম। এবং তিনি আরও বলেন, সকালের জলখাবার কোনওভাবেই এড়িয়ে যাবেন না। এতে আপনার পুষ্টি হ্রাস হয় এবং শরীরের অম্লতা বৃদ্ধি পায়।
তাহলে কী কী ধরনের খাবার খেলে শরীরের ওজন কম হবে জেনে নিই?
১. ডিম এবং ক্যাপসিকাম: ডিম নিজেই একটি প্রোটিন জাতীয় খাদ্য আর ক্যাপসিকাম সঠিক মাত্রায় ওজন হ্রাস করতে সহায়তা করে। তাই দুটি একসঙ্গে ভীষণ মাত্রায় শরীরের প্রয়োজনীয়তা মেটাতে সক্ষম। ডিম ভিটামিন, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং স্বাস্থ্যকর চর্বি সমৃদ্ধ, সেইসঙ্গে কোলিন, একটি পুষ্টি যা বিপাক বৃদ্ধিতে সহায়ক। অন্যদিকে ক্যাপসিকাম ভিটামিন সি সমৃদ্ধ। উল্লেখযোগ্যভাবে ওজন হ্রাস ত্বরান্বিত করতে পারে এটি দারুন।
২. গাজর এবং তিল মাখন: গাজরে থাকে প্রায় ১০ শতাংশ কার্বস এবং সাধারণ শর্করা এবং ফাইবার সম্পন্ন। বিটা ক্যারোটিন ফর্ম, ভিটামিন কে, বি-ভিটামিন এবং পটাসিয়াম, ভিটামিন এ সমৃদ্ধ। তিল মাখন বা তাহিনি নামে পরিচিত দ্রব্যটি, ক্যালসিয়ামে উচ্চ এবং আপনার ক্ষুধা এবং ক্যালরি গ্রহণ কমিয়ে আপনাকে ওজন কমাতে সাহায্য করতে পারে।
আরও পড়ুন সুগারের সমস্যা? এই তিনটি অভ্যাসে রোগ থাকবে নিয়ন্ত্রণে
৩. ডুমুর এবং ব্রাজিল বাদাম: ডুমুর বেশ স্বাস্থ্যকর একটি খাদ্য, এতে ক্যালরি কম আর প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আছে যা কোষের ক্ষতিকারক পদার্থগুলিকে কম করতে সহায়তা করে। অন্যদিকে ব্রাজিল বাদাম সেলেনিয়ামের একটি বড় উৎস, এটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা আপনার শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে সাহায্য করে এবং বিপাককে উৎসাহিত করে। দুটি একত্রে ভীষণভাবে ওজন কম করতে সহায়ক।
৪. অ্যাভোকাডো এবং লাল লঙ্কা: অ্যাভোকাডোতে রয়েছে ওলিক অ্যাসিড, যা আপনাকে দীর্ঘ সময় ধরে পরিপূর্ণ অনুভব করতে সাহায্য করে। লাল লঙ্কায় রয়েছে ক্যাপসাইসিন, একটি ক্ষুধা দমনকারী। ক্যাপসাইসিন তৃপ্তি বাড়িয়ে তোলে। যা আপনাকে ক্যালরি গ্রহণ কমিয়ে পেটের মেদ কমাতে সাহায্য করতে পারে। এটি উচ্চ ফাইবার এবং আপনাকে সন্তুষ্ট বোধ করতে সাহায্য করতে পারে।
৫. মুসুর ডাল এবং টমেটো: স্যুপ তো অনেকরকম খেয়েছেন তবে মুসুর আর টমেটোর খেয়েছেন কি? ক্যালোরি কম তবে খিদে মেটাতে সহায়ক এবং সঠিক মাত্রায় পুষ্টিও সরবরাহ করে। টমেটো আপনার লেপটিন প্রতিরোধ বজায় রাখতে সাহায্য করতে পারে এবং এইভাবে আরও ওজন কমাতে পারে।
তাই খাবার থেকে দূরে থাকবেন না, বরং সঠিক মাত্রায় খাবার খান আর শরীরচর্চা বজায় রাখুন।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন