/indian-express-bangla/media/media_files/2025/06/01/RHUhbEfKrKPZYunD5k3S.jpg)
DIY hair pack grey hair Bengali: চুলে স্বাভাবিক রং আনুন— মেহেন্দি আর বাদাম দিয়ে। (ছবি- প্রতীকী)
Beauty tips Lifestyle: চুল অকালে পেকে যাওয়া, শুষ্কতা এবং প্রাণহীনতা আমাদের অনেকেরই বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাজারের রাসায়নিকযুক্ত চুলের রং কিছুটা ফল দিলেও এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় চুল আরও বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। অথচ, ঘরোয়া উপায়েই কিন্তু চুলের রং ঘন, উজ্জ্বল আর কালচে করে তোলা সম্ভব— তা-ও একমুঠো ভেজানো বাদাম দিয়েই!
সাদা চুল হওয়ার কারণ কী?
- জেনেটিক বা বংশগত কারণ
– পরিবারে কারও যদি অল্প বয়সে চুল পাকা শুরু হয়, তাহলে আপনার ক্ষেত্রেও তা হতে পারে। - মেলানিন উৎপাদনের ঘাটতি
– মেলানিন একটি প্রাকৃতিক পিগমেন্ট, যা চুলে রঙ দেয়। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শরীরে মেলানিন উৎপাদন কমে যায়, ফলে চুল পেকে যায়। - অপর্যাপ্ত পুষ্টি ও ডায়েট সমস্যা
– ভিটামিন B12, আয়রন, কপার, জিঙ্ক এবং প্রোটিনের অভাবে চুলের রঙ হারাতে পারে। - অক্সিডেটিভ স্ট্রেস ও ফ্রি র্যাডিকেলস
– দূষণ, ধূমপান, বা অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপন চুলের কোষ ক্ষতিগ্রস্ত করে এবং পাকা চুলের সম্ভাবনা বাড়ায়। - হরমোনের ভারসাম্যহীনতা
– থাইরয়েড সমস্যা বা হরমোনাল ডিজঅর্ডার চুল পাকার কারণ হতে পারে। - মানসিক চাপ ও দুশ্চিন্তা
– অতিরিক্ত স্ট্রেস বা ট্রমা শরীরের বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় বাধা সৃষ্টি করে, যার প্রভাবে চুল পাকা হওয়া শুরু হতে পারে। - অতিরিক্ত কেমিক্যাল ব্যবহারে ক্ষতি
– হেয়ার ডাই, স্ট্রেইটেনার, ব্লিচ ইত্যাদি দীর্ঘমেয়াদে চুলের স্বাভাবিক পিগমেন্ট নষ্ট করে ফেলতে পারে। - ধূমপান
– গবেষণায় দেখা গেছে ধূমপান চুল পাকার ঝুঁকি ৪ গুণ পর্যন্ত বাড়াতে পারে।
মেহেন্দি দিয়ে হেয়ার কালার
চুলে মেহেন্দি ও বাদাম একসঙ্গে ব্যবহার করলে উপকার কী? বাদামে রয়েছে:
-
ভিটামিন ই, যা মাথার ত্বকে রক্তসঞ্চালন বাড়ায়
-
ফ্যাটি অ্যাসিড, যা চুলে প্রাকৃতিক আর্দ্রতা বজায় রাখে
-
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা চুল পাকার গতি কমায়
আরও পড়ুন- ২০২৫ সালে কলকাতার বিলাসবহুল আবাসনগুলো, নতুন বিনিয়োগের সুযোগ ও আধুনিক শহুরে লাইফস্টাইলের দিশা
কী কী লাগবে?
-
একমুঠো বাদাম
-
জল (ভিজানোর জন্য)
-
নারকেল তেল বা জলপাই তেল
-
শুকনো মেহেন্দি পাতা (গুঁড়ো)
আরও পড়ুন- কারি পাতা এবং জিরা দিয়ে তৈরি এই ঘরোয়া হেয়ার মাস্ক, পাবেন লম্বা আর চকচকে চুল!
ঘরোয়া উপায়ে চুল রং, প্রাকৃতিক হেয়ার কালার
কীভাবে তৈরি করবেন এই প্য়াক?
-
বাদাম ধুয়ে রাতভর জলে ভিজিয়ে রাখুন।
-
সকালে খোসা ছাড়িয়ে ব্লেন্ড করে পেস্ট তৈরি করুন।
-
লোহার কড়াইতে এই পেস্ট দিন এবং নাড়তে থাকুন।
-
রঙ হালকা বাদামি হলে তাতে নারকেল তেল যোগ করুন।
-
মিশ্রণটি ঠান্ডা হতে দিন।
আরও পড়ুন- পাকা চুল কালো করুন পেঁয়াজ আর নারকেল তেলেই! ঘরোয়া টোটকায় ফল মিলবে দ্রুত
ব্যবহারবিধি:
-
ঠান্ডা মিশ্রণে গুঁড়ো মেহেন্দি মেশান।
-
পরিষ্কার ও শুকনো চুলে ভালোভাবে লাগান।
-
৩০ মিনিট অপেক্ষা করুন।
-
ঠান্ডা জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন, শ্যাম্পু ব্যবহার করবেন না।
আরও পড়ুন- কিং কোবরা বনাম পাইথন, প্রকৃতির দুই দৈত্যের লড়াইয়ে কে আসল রাজা?
সতর্কতা ও পরামর্শ
ব্যবহারকারী রিমা সেন জানিয়েছেন যে ১৫ দিনের ব্যবহার করেই তিনি ভালো ফল পেয়েছেন। তবে,
-
হেয়ার প্যাক ব্যবহারের আগের দিন চুলে তেল দেবেন না
-
ব্যবহারের পরে রোদে যাবেন না
-
নিয়মিত ব্যবহারেই পাবেন ভালো ফল
আরও পড়ুন- চোখের নীচের কালো দাগ এবং বলিরেখা দূর করতে আলু ও নারকেল তেল ব্যবহার করুন– সহজ প্রাকৃতিক উপায়!
এবং
আরও পড়ুন- এই ৫ ধরনের চা খাচ্ছেন তো? পশ্চিমবঙ্গের জনপ্রিয় চা ও তার ৭টি উপকারিতা জানলে অবাক হবেন!
নিয়মিত ব্যবহার করা যাবে?
এই প্যাকটি সপ্তাহে ১–২ বার ব্যবহার করা যায়। এক মাসের মধ্যেই আপনি চুলের রঙে উজ্জ্বলতা এবং স্বাস্থ্য ফিরে পাবেন। প্রাকৃতিক এই হেয়ার প্যাকে চুলের রং হবে ঘন এবং প্রাণবন্ত।
কতদিনে রেজাল্ট পাওয়া যাবে?
কার্যকারিতা নির্ভর করে যেসব বিষয়গুলোর ওপর:
-
চুল কতটা পাকা তার ওপর নির্ভর করবে
-
পুরো সাদা হলে বেশি সময় লাগতে পারে
-
সামান্য গ্রে হলে দ্রুত রেজাল্ট
-
কতক্ষণ ভিজিয়ে রেখেছেন বাদাম, তার ওপরও নির্ভর করে, অন্তত ৮ ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখা দরকার, তাতে তেল ও প্রোটিন ভালভাবে বের হয়
ব্যবহার করতে পারবেন যারা:
-
যাদের চুল স্বাভাবিক বা শুষ্ক ধরনের
-
যারা পাকা চুল প্রাকৃতিকভাবে ঢাকতে চান
-
কেমিক্যাল হেয়ার ডাইয়ে অ্যালার্জি রয়েছে
-
যারা দীর্ঘমেয়াদি, নিরাপদ সমাধান খুঁজছেন
ব্যবহার করা উচিত নয় যাদের:
-
যাদের মেহেদি বা বাদামে অ্যালার্জি আছে
-
চুলে সাম্প্রতিক হেয়ার ট্রিটমেন্ট (পার্ম, রিবন্ডিং) করিয়েছেন
-
স্ক্যাল্পে খোলা ক্ষত বা একজিমা আছে
-
গর্ভবতী বা স্তন্যদানকারী মা— ব্যবহারের আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত
সতর্কতা ও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
সতর্কতা:
-
মেহেদি ও বাদাম পেস্ট ব্যবহারের আগে প্যাচ টেস্ট করুন, একটু ত্বকে লাগিয়ে দেখে নিন যে কোনও খারাপ প্রতিক্রিয়া হচ্ছে কি না!
-
মিশ্রণ তৈরি করার পর তা ২০–৩০ মিনিট রেখে ফ্রেশ অবস্থায় ব্যবহার করুন
-
একদিনে ১ বারের বেশি ব্যবহার করবেন না
সম্ভাব্য পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া:
-
অতিরিক্ত ব্যবহারে চুলে রুক্ষতা আসতে পারে। তা-ই সপ্তাহে হিসেব রেখে ব্যবহার করবেন।
-
অ্যালার্জির ক্ষেত্রে স্ক্যাল্পে জ্বালা, লালচে ভাব বা ফুসকুড়ি হতে পারে। এসব ক্ষেত্রে সতর্ক থাকবেন।
-
যদি মাথার ত্বক অতিমাত্রায় সংবেদনশীল হয়, তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ব্যবহার করবেন না
রাতেই ব্যবহার ভালো নাকি দিনে?
দিনে ব্যবহার করাই উত্তম। মেহেদি বা মেহেন্দি এবং বাদামের পেস্ট দিনের আলোতে ব্যবহার করলে আরও বেশি উপকার পাওয়া সম্ভব। তাছাড়া:
-
মিশ্রণটি চুলে ১–২ ঘণ্টা রেখে ধুয়ে ফেললে স্ক্যাল্প পর্যাপ্তভাবে শুষে নিতে পারে
-
রাতে ব্যবহার করলে পিলো কভার নোংরা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে
-
চুল ভেজা থাকলে রাতে ঘুমালে ঠান্ডা লাগার ঝুঁকি বাড়ে
তাই দিনে সময় করে চুলে লাগিয়ে ভালোভাবে চুল ধুয়ে নেওয়াই স্বাস্থ্যকর পদ্ধতি। মাথায় লাগানোর পর শুকোনোর জন্য বেশ কিছুক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়। অনেকেই ফ্যানের তলায় বসে চুল শুকিয়ে নেন। মোদ্দা কথা লাগানোর পরপরই মাথায় জল দিতে নেই। তাতে যা মাথায় লাগানো হল, তা ধুয়ে যেতে পারে। ওই জন্যই ঘণ্টা দুয়েক মাথায় রাখার কথা বলা হয়েছে।