তীর্থভূমি বাংলা। এর নানা প্রান্তে ছড়িয়ে আছে অজস্র মন্দির আর পুণ্যস্থান। এই সব তীর্থস্থানের মধ্য অনেকগুলোই বহু পুরনো। যেখানে যুগের পর যুগ ধরে পুণ্যার্থীরা যাতায়াত করেন। বিপদে-আপদে ঈশ্বরের শরণাপন্ন হন। নানাভাবে উপকৃত হন। শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে আজও সেই রীতি আগের মতই চলছে। এমনই এক পুরনো মন্দির রয়েছে রাজ্যের শিল্পশহর রানিগঞ্জে। যেখানে রয়েছে ৩০০ বছরের পুরনো বড়মা কালী মন্দির।
একটা সময় রানিগঞ্জের বড়বাজার এলাকা ছিল শ্মশানভূমি। কথিত আছে, সেই শ্মশানভূমির পাশ দিয়ে বয়ে যেত দামোদর নদ। ৩০০ বছর আগে এক মধ্যরাতে অন্ডালের বাসিন্দা তারাচরণ চট্টোপাধ্যায় দেবী কালীর স্বপ্নাদেশ পান। সেই স্বপ্নাদেশ অনুযায়ী তারাচরণ ছুটে আসেন রানিগঞ্জের জঙ্গলে। প্রতিষ্ঠা করেন দেবী বড়মা কালীর। তারপর থেকে নিয়মিত অন্ডাল থেকে যাতায়াত করেই দেবী কালীর নিত্যপূজা সামলেছে চট্টোপাধ্যায় পরিবার। আজও বংশপরম্পরায় সেই রীতি বহাল রয়েছে এই মন্দিরে।
সেই শ্মশানভূমি আজ ব্যস্ত জনপদ হয়ে উঠেছে। গোটা এলাকা এখন ব্যবসায়িক অঞ্চল হিসেবে রীতিমতো গমগম করে। আর, সময়ের হাত ধরে এই মন্দিরে বেড়েছে ভক্তদের ভিড়। প্রতিদিন এই মন্দিরে দেবীর হাতের খাঁড়া-ধোয়া জল পান করতে ভিড় করেন অজস্র ভক্ত। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা তো বটেই, দূর-দূরান্ত থেকে এখানে ছুটে আসেন ভক্তরা। তাঁরা দেবীর খাঁড়া ধোয়া জল পান করেন। ভক্তদের দাবি, এই জল পান করে নাকি তাঁদের নানা রোগ-ব্যাধি সেরে যায়। শুধু তাই নয়, বিভিন্ন সমস্যা থেেকও তাঁরা এই জল পান করার জেরেই মুক্তি পান।
আরও পড়ুন- জাগ্রত দেবী রক্ষা করেন বিপদে, দাপটকালীর পুজোয় ভিড় করেন কয়েক লক্ষ ভক্ত
এই মন্দিরে ৩০০ বছর আগে থেকেই রয়েছে একটি কুয়ো। সেই কুয়ো রয়েছে মন্দিরের চত্বরের মধ্যে। যা ঢেকে রাখা হয়। সাধারণত বলা হয়, সূর্যের আলো না-পড়লে কুয়োর জল নষ্ট হয়ে যায়। এখানকার কুয়োর জল কিন্তু অত্যন্ত স্বচ্ছ বলেই দাবি ভক্তদের। শুধু তাই নয়, এই জল সারাবছর থাকে। গ্রীষ্মে দামোদরের খাতে জল শুকিয়ে যায়। গরমে খনি অঞ্চল রানিগঞ্জে জলাভাব দেখা যায়। কিন্তু, এই কুয়োর জল কিছুতেই কমে না। এমনটাই দাবি ভক্তদের।