বাংলার জাগ্রত দেবী। নামটা বড়ই অদ্ভূত। কিন্তু, গত কয়েকশো বছর ধরে এই দেবীর মহিমায় পুষ্ট হয়েছেন অগণিত ভক্ত। দেবীর নাম শুয়োরে কালী। যার সঙ্গে জড়িয়ে আছে অজস্র অলৌকিক কাহিনি। এখানকার কালীপুজোর রীতি একটু ভিন্ন ধরনের। তবে, কালীভক্তরা এতে আশ্চর্য হয়তো হবেন না। কারণ, বিভিন্ন জায়গায় কালীপুজোর বিভিন্ন ধরনের রীতি প্রচলিত আছে। শুধু এপার বাংলাতেই রয়েছে একাধিক রীতি ও নীতি।
নদিয়ার বামাখালিতে প্রতি মঙ্গলবার হয় এই পুজো। যার আদিপীঠ রয়েছে বর্তমান বাংলাদেশের রাজশাহিতে। যেখানে আজও প্রতি মঙ্গলবার পুজো শেষের পর নদিয়ার বামাখালিতে শুরু হয় দেবী কালীর আরাধনা। ভারতের স্বাধীনতার পর থেকে এমন নিয়মই চলে আসছে। রাজশাহিতে এই পুজো চলছে প্রায় ২৫৪ বছর ধরে। এই পুজোর বিশেষত্ব, এখানে পাঁঠা বা অন্য কিছু নয়। বলি দেওয়া শুয়োর ছানা।
বামাখালির পুজোর শুরুতে ৫১ জন পুরুষকে চূর্ণী নদীতে ডুব দিয়ে ঘরা ভরে জল নিয়ে আসতে হয়। এরপর মানত অনুযায়ী নির্দিষ্ট সংখ্যক শুয়োর এখানে বলি দেওয়া হয়। বাংলাদেশে এই পুজো হয় মূর্তির সামনে। এখানে ঘটে দেবীর আরাধনা করা হয়। শুয়োরে কালী পুজোর অন্যতম বিশেষত্ব, এই পুজোর জন্য কোনও পুরোহিতের প্রয়োজন হয় না। কথিত আছে, অলৌকিকভাবে পুজোর দায়িত্বে থাকা ব্যক্তি দেবীর কাছ থেকে বার্তা পান। তিনি এরপর যাঁর হাতে দাঁ তুলে দেন, তিনিই শুয়োর বলি দেন।
আরও পড়ুন- সিংহেশ্বরী সতীপীঠ, এখানে হামেশাই ঘটে দেবীর অলৌকিক কর্মকাণ্ড
এখানে আসতে গেলে কলকাতা থেকে গেদে লোকালে চেপে নামতে হবে মাজদিয়া স্টেশনে। সেখান থেকে টোটো চেপে পৌঁছনো যায় এই শুয়োরে কালীপীঠে। আবার কৃষ্ণনগর থেকে বাসে শিবনিবাস বাসস্ট্যান্ডে নেমে টোটোয় যাওয়া যায় বামাখালি। ভক্তদের দাবি, দেবী শুয়োরে কালী মনোবাঞ্ছা পূরণ করেন। শুধু তাই নয়, তিনি নানারকম বিপদ-আপদ থেকেও ভক্তদের রক্ষা করেন। দেবী যে অত্যন্ত জাগ্রত, তা এখানকার ভক্তরা দারুণভাবে উপলব্ধি করতে পারেন।