জাগ্রত অলৌকিক-কাণ্ডে ভরপুর নারনা কালী মন্দির, দেবী পূজিতা দুর্গা রূপে

ভক্তসংখ্যা যতই হোক না-কেন, দেবীর আশীর্বাদে কোনওদিন আয়োজনে কমতি হয় না।

ভক্তসংখ্যা যতই হোক না-কেন, দেবীর আশীর্বাদে কোনওদিন আয়োজনে কমতি হয় না।

author-image
Chinmoy Bhattacharjee
New Update
Narna Kali Temple

এই মন্দির ২৫০ বছরের পুরোনো। দেবী নাকি এখানে প্রতিদিন রাতে পরিবার নিয়ে স্নান করেন। জাগ্রত এই মন্দির রয়েছে হাওড়া জেলার ডোমজুড়ের নারনা গ্রামে। ২৫০ বছর আগে স্থানীয় এক বাসিন্দা এই জঙ্গলঘেরা নারনা গ্রামের পুকুরে স্নান করতে নেমে ঘট খুঁজে পেয়েছিলেন। সেই রাতেই স্বপ্নে তিনি ঘটস্থাপন এবং পূজা শুরুর স্বপ্নাদেশ লাভ করেন। সেই অনুযায়ী, প্রথম কয়েক বছর চলে ঘটপুজো। তার পর একসময় তিনি দেবীর মৃন্ময়ী মূর্তি স্থাপন করেন। পূজার সেই ঐতিহ্য আজও বয়ে নিয়ে চলেছেন নারনা গ্রামের বাসিন্দারা। এই মন্দিরে নানা উপাচারে সকাল-সন্ধ্যায় চলে দেবীর আরাধনা।

Advertisment

এই মন্দিরে যেতে হলে ৬ নম্বর জাতীয় সড়ক ধরতে হবে। সেখান থেকে কোনা হয়ে জগদীশপুরের ওপর দিয়ে পৌঁছতে হবে। অথবা হাওড়া থেকে ট্রেন বা বাসে চেপে ডোমজুড়ে পৌঁছে সেখান থেকে ধরতে হবে টোটো। জগদীশপুরের ওপর দিয়ে এলে দ্বিতীয় হুগলি সেতু থেকে সময় লাগবে প্রায় একঘণ্টা। আর দ্বিতীয় পথ ধরে এলে ডোমজুড় থেকে টোটোয় সময় লাগবে আধঘণ্টা। এই মন্দিরে দেবীর সঙ্গে রয়েছেন লক্ষ্মী, সরস্বতী, গণেশ, কার্তিক। দেবী এখানে কালীরূপে অবস্থান করলেও দুর্গারূপে পূজিতা হন।

ভক্তদের কাছে এই নারনা কালীমন্দির অত্যন্ত জাগ্রত বলেই পরিচিত। স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছে দেবীর নানা মাহাত্ম্যের কথাও শোনা যায়। বছরভর এই মন্দিরে দূর-দূরান্ত থেকে ভক্তের আনাগোনা লেগেই থাকে। মনস্কামনা পূর্ণ হলে দেবীকে যথাযথ উপাচারে পূজা দিয়ে যান ভক্তরা। মন্দিরের পাশেই রয়েছে একটি পুকুর। স্থানীয় বাসিন্দারা এই পুকুরকে 'কালী পুকুর' বলে থাকেন। এখানে জাল ফেলা, জলে নামা বা অন্য যে কোনও কাজকর্ম করা নিষিদ্ধ। কারণ, ভক্তদের বিশ্বাস এখানে প্রতিরাতে দেবী তাঁর সন্তানদের নিয়ে স্নান করেন।

আরও পড়ুন- জাগ্রত দেবী শ্বেতকালী, রোজ রাতে স্নান করেন দামোদরে

Advertisment

এই মন্দিরে প্রতিবছর গুড ফ্রাইডের দিন সারারাত ধরে বাৎসরিক কালীপুজো হয়। সেই রাতে ভক্ত সমাগমে ভরপুর থাকে এলাকা। ভক্তদের ভিড়ে তিলধারণের জায়গা পর্যন্ত থাকে না। পূজা উপলক্ষে প্রায় একসপ্তাহ ধরে মেলা, কীর্তন, গীতাপাঠ, যাত্রাপালার আসর চলে। সেই দিন অন্নকূট উৎসবও আয়োজিত হয়। মন্দির প্রাঙ্গণের দুটি উনানে চলে ভোগরান্না। কথিত আছে, এই মন্দিরে ভক্তসংখ্যা যতই হোক না-কেন, দেবীর আশীর্বাদে কোনওদিন আয়োজনে কমতি হয় না।

Temple Kali Puja pujo