Advertisment

সারাদিনে শরীর সঠিক মাত্রায় না চললে কী হতে পারে জানেন?

দীর্ঘ সময় ধরে নিষ্ক্রিয়তা, অপর্যাপ্ত ঘুম এবং ব্যস্ত সময়সূচির কারণে চাপ, উদ্বিগ্ন, হতাশ এবং অস্থির হয়ে ওঠা এবং বিরক্ত হওয়া খুব স্বাভবিক।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

অলসতা সব মানুষের মধ্যে একটু হলেও বর্তমান। শুয়ে বসে থাকতে অনেকেই ভীষণ ভালবাসেন। আর মহামারির জেরে সেই আশা পূর্ণ হয়েছে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে কি? পড়ুয়া থেকে চাকুরিজীবী সকলেই বসে রয়েছেন বাড়িতে। ওয়ার্ক ফ্রম হোমের ঘেরাটোপে এক জায়গায় ঠায় বসে থেকে ওষ্ঠাগত প্রাণ। 

Advertisment

বাড়িতে লাগাতার কম্পিউটারের সামনে বসে থাকা হোক বা মাথা নিচু করে মুঠোফোনে বদ্ধ থাকা, দুটির মধ্যে একটিও কিন্তু ভাল নয়। এর ফলে হতে পারে নানান সমস্যা। ঘাড় মাথা ব্যথা তো বটেই সঙ্গে স্পনডিলাইটিস, চোখ যন্ত্রণা, শিরদাঁড়ায় চিনচিনে ব্যথা অনুভব হয় অনেকের। এটিই নিষ্ক্রিয় জীবনধারার লক্ষণ। 

নিষ্ক্রিয় জীবনধারার অর্থ কী? 

হার্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউটের মতে মানবদেহের প্রয়োজন নির্দিষ্ট সময় অনুযায়ী শরীর সচল রাখা, নয়তো ১৫০ মিনিট মাঝারি পরিসরে নয়তো ৭৫ মিনিট জোড়ালো পরিসরে শারীরিক ক্রিয়াকলাপে অংশ নেওয়া উচিত। সেইসঙ্গে অবশ্যই সপ্তাহে দুই থেকে তিনদিন পেশী সক্রিয় করণের দিকেও নজর দেওয়া উচিত। এই নিয়মগুলি মেনে না চলার অর্থ শরীরে বিভিন্ন অংশ শিথিল হয়ে যাওয়ার সূচনা। যার ফলে ব্যথা বেদনা যেমন বাড়তে পারে তেমনি অঙ্গ নিষ্ক্রিয়করণ চলাফেরায় ব্যাঘাত ঘটায়। শত কাজ সত্ত্বেও সারাদিনে অন্তত কিছু সময় হাঁটাচলা কিংবা ব্যায়াম করা অবশ্যই প্রয়োজন। 

কেন এটি উদ্বেগের কারণ ? 

শরীর সুস্থ থাকার সহজ উপায় হার্ট এবং অন্যান্য অন্ত্রগুলি ভাল রাখা, সচল রাখা। নিষ্ক্রিয়তার অর্থ, ক্যালরি ক্ষয় কম, অর্থাৎ ওজন বৃদ্ধি এবং সেই থেকেই সূত্রপাত নানান রোগের। অলস জীবনযাত্রা কার্ডিওভাসকুলার রোগ, স্থূলতা, উচ্চ রক্তচাপ, হরমোনের ভারসাম্যহীনতা, অলস বিপাক, দুর্বল রক্ত ​​সঞ্চালন, কোলন ক্যানসার, মানুষের প্রদাহের কারণে শরীরে প্রদাহ হওয়ার সম্ভাবনাকে তিনগুণ বাড়িয়ে তুলতে পারে কারণ মানুষ দীর্ঘ সময় বিশ্রামে কাটায়। এছাড়াও জয়েন্ট পেন, স্ট্রোকও অসম্ভব নয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দাবি অনুযায়ী, পৃথিবীর উন্নত এবং উন্নয়নশীল উভয় দেশেই প্রায় ৬০ থেকে ৮৫ শতাংশ মানুষ, এইরূপ নিষ্ক্রিয় জীবনধারার অন্তর্গত যেটি খুব সাধারণ সমস্যার অধীনে। এবং শিশুরাও দিন দিন এর আওতায় চলে আসছেন যার ফলে ভবিষ্যৎ সুখকর নয়। 

হাড় এবং মেরুদণ্ডের নানান সমস্যায় ভুগছেন অনেকেই। পেশী সক্রিয় না থাকার কারণেই ঘটছে এই বিপত্তি। দুর্বল হাড়ের কারণে অস্টিওপরোসিসে ভুগছেন অনেকেই। এক নাগাড়ে বসে থাকার প্রভাব সবচেয়ে বেশি পড়ে ঘাড় এবং পিঠে। অসহ্য যন্ত্রণা সঙ্গে সোজা হয়ে বসতে না পারার ক্ষমতা দিন দিন গ্রাস করছে মানবদেহকে। 

তাহলে উপায়? কী বলছেন চিকিৎসকরা? 

তাদের মতে, শুধু শারীরিক ভাবে নয় মানসিক অবস্থা দিন দিন সঙ্গীন হচ্ছে এর ফলে। দীর্ঘ সময় ধরে নিষ্ক্রিয়তা, অপর্যাপ্ত ঘুম এবং ব্যস্ত সময়সূচির কারণে চাপ, উদ্বিগ্ন, হতাশ, অস্থির হয়ে ওঠা এবং বিরক্ত হওয়া খুব স্বাভবিক। জ্ঞানীয় স্বাস্থ্যের অবনতি হতে পারে বলে আপনি ভুলে যাওয়ার সমস্যায় পড়তে পারেন। 

তাই কী করবেন? অবশ্যই ঘাড় মাথা এবং পিঠের সংলগ্ন অঞ্চলে ব্যথা হলে হাড়ের চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। তামাক সেবন এক্কেবারে বন্ধ এবং তার সঙ্গে প্রতিদিন ৩০ মিনিট করে হাঁটাচলা অভ্যাস করতেই হবে। সক্রিয় থাকার চেষ্টা করুন, ঘরবাড়ির কাজ করুন।প্রয়োজনে মেডিটেশন করুন। এক কথায় বসে না থেকে নিজেকে ব্যস্ত রাখুন। 

আরও পড়ুন হাজার চেষ্টাতেও ওজন কমাতে পারছেন না? এই টিপস মানলে ম্যাজিকের মতো কাজ হবে

কিছু ছোট টিপস সুস্থ রাখবে আপনাকে: 

• সোজা হয়ে বসুন, শিরদাঁড়া সোজা রাখুন।

• নিশ্চিত করুন যে আপনার কম্পিউটারের স্ক্রিনের উপরের অংশটি আপনার চোখের সমান স্তরে রয়েছে।

• স্পন্ডিলাইটিস এড়াতে বেশি মাথা নিচু করে রাখবেন না। মাঝে মাঝেই ঘাড়ের ব্যায়াম করুন।

• খুব বেশি ব্যথা হলে মাথা কাঁধের দিকে নিচু করে মাথার অপরদিকে হাত দিয়ে অল্প চাপ দিন, আরাম পাবেন। 

• হোমিওপ্যাথি ওষুধ সেবন করে দেখতে পারেন।

• হাঁটাচলা বন্ধ করবেন না। 

• এমনকি যে কোনও সময় যোগাসন করাও দুর্দান্ত হবে। এটি আপনাকে শারীরিক এবং মানসিক উভয়ভাবেই সুস্থ রাখে।

• পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমান। 

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন

health
Advertisment