গত ২৩ নভেম্বর (৬ অগ্রহায়ণ, ১৪৩০), বৃহস্পতিবার ছিল উত্থান একাদশী। ভগবান বিষ্ণু চার মাস নিদ্রিত থাকার পর উত্থান একাদশীর দিনই জাগ্রত হন বলেই মনে করা হয়। তাই ওই একাদশীকে 'দেব উত্থানী' একাদশীও বলে। তার পর প্রথম একাদশী ৮ ডিসেম্বর (২১ অগ্রহায়ণ, ১৪৩০), শুক্রবার পালিত হতে চলেছে। যার নাম উৎপন্না একাদশী।
কেন এই তিথির নাম উৎপন্না?
পুরাণ অনুযায়ী, উৎপন্না একাদশী তিথিতেই ভগবান বিষ্ণুর মধ্যে থেকে দেবী একাদশী উৎপন্ন বা সৃষ্টি হয়েছিলেন। সেই উৎপন্ন হওয়া দেবী এক ভয়ঙ্কর অসুরের হাত থেকে ভগবান বিষ্ণুর প্রাণরক্ষা করেছিলেন। এতেই খুশি হয়ে ভগবান বিষ্ণু, উৎপন্ন হওয়া ওই দেবীর নাম রাখেন একাদশী। যার নাম থেকে তৈরি হয় একাদশী ব্রত।
কখন, পালনে কী লাভ?
শুক্রবার ৮ ডিসেম্বর, ২০২৩। ভোর ৫টা ৬-এ শুরু হবে উৎপন্না একাদশী। ছাড়বে পরদিন, ৯ ডিসেম্বর সকাল ৬টা ৩১-এ। কথিত আছে, এই একাদশী পালন করলে বিষ্ণু ও লক্ষ্মী, উভয়েই সন্তুষ্ট হন। শুধু তাই নয়, সব পাপ নষ্ট হয়। অশ্বমেধ যজ্ঞ, তীর্থস্নান, দানের চেয়েও বেশি পুণ্য মেলে এই একাদশী পালন করলে। শুধু তাই নয়, মনস্কামনা পূরণ হয়। জীবনে সুখ-সমৃদ্ধিও আসে।
পালনবিধি
এই একাদশীতে ব্রাহ্মমুহূর্তে স্নান করতে হয়। সাধ্য অনুযায়ী পঞ্চোপচারে বা ষোড়শোপচারে ভগবান বিষ্ণুর পূজা করতে হয়। উৎপন্না একাদশীর ব্রতকথা শুনতে হয়। এই তিথিতে তুলসী পূজন করার বিধিও প্রচলিত আছে। রাতে ভগবান বিষ্ণুর স্তোত্রপাঠ এবং কীর্তন করা হয়। ব্রতপালন শেষে ভগবান বিষ্ণুর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেন ভক্তরা। পরদিন আবার ভগবান বিষ্ণুর পূজা এবং বিষ্ণু সহস্রনাম পাঠ করতে হয়। সঙ্গে, ব্রাহ্মণ ভোজন আর ব্রাহ্মণকে সামর্থ্য অনুযায়ী দান করার রীতি রয়েছে।
আরও পড়ুন- জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশনের গেরুয়াকরণ? লোগোয় ধন্বন্তরীর ছবি! উদ্বিগ্ন আইএমএ
বিশেষ পালনবিধি
অনেকে মনে করেন যে উৎপন্না একাদশীতে ভগবান বিষ্ণুর কাছে ন'মুখী প্রদীপ জ্বালানো হলে চাকরি, ব্যবসার বাধা দূর হয়ে যায়। তেলের বদলে ঘিয়ের প্রদীপ জ্বালানোকে এই তিথিতে বিশেষ শুভ বলে মনে করা হয়। পাশাপাশি, এই তিথিতে অশ্বত্থ গাছের তলায় প্রদীপ জ্বালালে সাংসারিক অশান্তি দূর হয় বলে ভক্তদের একাংশের বিশ্বাস। শুধু তাই নয়, বাড়িতে এই তিথিতে দক্ষিণাবর্ত শঙ্খ প্রতিষ্ঠার রীতিও প্রচলিত আছে। যাতে লক্ষ্মীলাভ হয়ে বলেই ভক্তরা মনে করেন।