আজকাল প্রতি ঘরে ঘরে থায়রয়েডের সমস্যা। বিশেষ করে মহিলাদের ক্ষেত্রে এই সমস্যা মারাত্মক হয়ে উঠেছে। ওজন বাড়া যেন আধুনিক জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে পড়েছে। হাইপোথায়রডের একটা খুব চেনা সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে আমাদের ঘরে ঘরে। হঠাৎ দেহের ওজন বেড়ে যাওয়া, ঘুম ঘুম পাওয়া, দিনভর ক্লান্ত লাগা, এসব হাইপারথায়রয়েডিজমের চেনা উপসর্গ।
থাইরয়েড একপ্রকারের হরমোন জনিত সমস্যা। হাইপোথাইরয়েডিজমে বিপাক বা বেসাল মেটাবলিক রেট (বিএমআর) কমে গিয়ে দেহের ওজন বাড়তে শুরু করে, যা শরীরের জন্য একেবারেই ভালো নয়। তাই জিঙ্ক, আয়রন, আয়োডিন, কপার রয়েছে এমন খাবার বেশি করে নিজের ডায়েটে রাখুন। এই প্রত্যেকটি উপাদান থাইরয়েড গ্রন্থির কার্যকারিতাকে ঠিক রাখতে সাহায্য করে।
/indian-express-bangla/media/post_attachments/wp-content/uploads/2019/08/raice.png)
ব্রাউন রাইস বা বাদামী ভাত
হোয়াইট রাইসের তুলনায় ব্রাউন রাইসের পৌষ্টিক গুণ বেশি থাকে। অনেক বেশি পরিমাণে ফাইবার, ভিটামিন এবং খনিজ থাকে। এক কাপ ব্রাউন রাইসে সাড়ে তিন গ্রাম ফাইবার থাকে। গ্লাইসেমিকের মাত্রা কম থাকায় শরীরে রক্ত শর্করার মান নিয়ন্ত্রনে রাখতে সাহায্য করে। ব্রাউন রাইসে থাকে কার্বোহাইড্রেট। যা থাইরয়েডের সমস্যায় মোকাবিলা করতে সাহায্য করে। থাইরয়েডের সমস্যা থাকলে অনেক সময় হজম ঠিক মত হয় না খাবার। বাদামী ভাত হজম হয়ে যায় সহজে। পাশাপাশি হজমের সমস্যা কমায়। তাই চেষ্টা করুন সাদা ভাতের বদলে লাল চালের ভাত যা ব্রাউন রাইস নামে পরিচিত তা খাওয়ার। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে ব্রাউন রাইস খেলে তা খান থাইরয়েডের ওষুধ খাওয়ার ১ ঘণ্টা আগে।
আরও পড়ুন, ওজন কমাতে মধু-লেবু জল, কখন খাবেন, কী ভাবে?
নারকেল বা নারকেলের দুধ
নারকেল বা নারকেলের দুধ অনেক দিন আগে থেকেই থাইরয়েডের কার্যকর উপাদান হিসেবে পরিচিত। থাইরয়েডের গ্রন্থিকে কার্যকর রাখতে সাহায্য করে। সঠিক মাত্রায় হরমোন তৈরি করে। ফলে শরীরে থাইরয়েডের ব্যালেন্স ঠিক থাকে।
দই
দইয়ে থাকা ভিটামিন ডি থাইরয়ের বাড়া কমাকে নিয়ন্ত্রন করতে প্রয়োজন হয়। ভিটামিন ডি’র অভাব হলে শরীরে অন্য সমস্যার পাশাপাশি থাইরয়েডের সমস্যাও বেড়ে যায়। তাই যাদের থাইরয়েড আছে তারা নিয়মিত ৫০ গ্রাম মত টক দই খেতে পারেন।
/indian-express-bangla/media/post_attachments/wp-content/uploads/2019/08/egg.png)
ডিম
আহা! ডিম এমন এক খাবার, যার নাম শুনতেও ভালো লাগে। ডিমে কিন্তু প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন থাকে। যারা ডায়াবেটিক, তাদেরও ডিম খেতে কোনও বাধা নেই। এনার্জি বাড়ানোর জন্য দায়ি উত্তেজক লেউসিন অ্যামাইনো আ্যাসিড প্রচুর পরিমাণে থাকে ডিমে। থাইরয়েডের ক্ষেত্রে ডিমের থেকে ভালো বন্ধু আর কিছু হয় না। ডিমে থাকা নানা পুষ্টিকর উপাদান থাইরয়েডের সমস্যার সাথে অনায়াসে মোকাবিলা করতে পারে। তাছাড়া আরও হাজার একটা সমস্যার সহজ সমাধান ডিম। তবে সেদ্ধ ডিম খাওয়া বাঞ্ছনীয়।
আরও পড়ুন, দিনে ক’টা আমন্ড খেলে সবচেয়ে ভালো ফল পাবেন?
মাছ
যেকোনো ছোট মাছ খাওয়া উচিত থাইরয়েডের রোগীদের। তবে বিশেষ করে স্যামন মাছ বেশি কার্যকরী থাইরয়েডের ক্ষেত্রে। আমাদের এখানে এই মাছটি খুব একটা বিশেষ পাওয়া যায় না। সেক্ষেত্রে ছোট চারাপোনা মাছ খাওয়া যেতে পারে।
অন্যান্য খাবার
থাইরয়েডের সাথে মোকাবিলা করতে শরীরে প্রয়োজন সঠিক মাত্রায় কপার আয়োডিন। তাই যে সব খাবারে কপার, আয়োডিন বেশি মাত্রায় আছে সেইসব খাবার বেশি করে খাওয়ার চেষ্টা করুন। সবুজ শাক-সবজি, আঁশওয়ালা মাছ, কাজুবাদাম, ক্যাপ্সিকাম, বিন্স, মেথি শাক ইত্যাদি।