Charak Puja: কেন চড়ক পুজোয় ভক্তরা নিজের ওপর চালান কঠিন অত্যাচার? জানলে অবাক হবেন!

Why do ascetics pierce themselves and hang with hooks during Charak Puja?: চড়ক পুজোয় সন্ন্যাসীরা কেন নিজেদের গায়ে বর্শা বিঁধিয়ে, কাঁটা বিঁধিয়ে ঝোলেন? এর পেছনে আছে প্রাচীন বিশ্বাস ও আত্মত্যাগের প্রতীকী বার্তা।

Why do ascetics pierce themselves and hang with hooks during Charak Puja?: চড়ক পুজোয় সন্ন্যাসীরা কেন নিজেদের গায়ে বর্শা বিঁধিয়ে, কাঁটা বিঁধিয়ে ঝোলেন? এর পেছনে আছে প্রাচীন বিশ্বাস ও আত্মত্যাগের প্রতীকী বার্তা।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Charak Puja  : চড়ক উৎসব

Charak Puja: চড়ক উৎসব।

The Spiritual Significance Behind Self-Torture During Charak Puja: চড়ক পূজা হল বাংলার এক প্রাচীন ও লোকজ ধর্মীয় উৎসব, যা মূলত শিবভক্তি এবং তপস্যা-নির্ভর একটি ব্রত বা উৎসব। এই পূজা চৈত্র মাসের শেষ দিনে, অর্থাৎ চৈত্র সংক্রান্তিতে পালিত হয় এবং এটি গাজন উৎসবের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। 

Advertisment

চড়ক পূজার বৈশিষ্ট্য:

  1. চড়ক গাছে ঘোরা:

    • ভক্তদের শরীরে কাঁটা বিদ্ধ করে বা দড়ি বেঁধে বিশাল বাঁশ বা কাঠের চক্রে ঘোরানো হয়। এটিকে বলা হয় 'চড়কে চড়া'।

  2. দেহ নিপীড়ন:

    • অনেকে জিভে বা গালে সুচ ঢুকিয়ে দেন। অনেকে আবার আগুনের ওপর হাঁটেন। কেউ আবার ধারালো অস্ত্রে দেহ কেটে পূজায় অংশ নেন।

এসবের উদ্দেশ্য

Advertisment
  • এগুলো ভক্তের কঠিন তপস্যা ও ভগবানের প্রতি আত্মনিবেদনের প্রকাশ বলে ওই ভক্তরা মনে করেন। 
  • এর উদ্দেশ্য হল- পাপমোচন ও মুক্তির আকাঙ্ক্ষা।

চড়ক পূজার সংক্ষিপ্ত বিবরণ:

  • উৎসবের দেবতা: ভগবান শিব (বিশেষ করে নীলকণ্ঠ বা ধর্মঠাকুর রূপে)

  • সময়: চৈত্র মাসের শেষ দিন (সাধারণত ১৪ বা ১৫ এপ্রিল), চৈত্র সংক্রান্তি

  • স্থান: প্রধানত গ্রামবাংলা, বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গের পুরুলিয়া, বীরভূম, বাঁকুড়া, নদিয়া, হুগলি, মুর্শিদাবাদ ও উত্তর ২৪ পরগনা

  • উদ্যোক্তা: ‘সন্ন্যাসী’ বা গাজনের ভক্তরা, যাঁরা কয়েকদিন উপবাস, ব্রত ও নিয়ম পালন করে চড়ক পূজায় অংশ নেন

মেলা ও উৎসব:

  • চড়ক পূজার দিনে গ্রামের ময়দানে বা শিবমন্দির সংলগ্ন মাঠে বড় আকারে মেলা বসে। গান, বাজনা, নাচ, লোকনাট্য সেখানে পরিবেশিত হয়।

গাজন এবং চড়ক:

এই পুজো গাজনের অংশ। পশ্চিমবঙ্গে বিভিন্ন ধরনের গাজন দেখা যায়। ১) নদিয়া এবং উত্তর ২৪ পরগনায় দেখা যায় ধর্মঠাকুরের গাজন। যেখানে নৃত্য, ধর্মগান, ঢপ, সন্ন্যাসীর পালা পরিবেশিত হয়। ২) বীরভূমে পালিত হয় শিবগাজন এবং চারকুলি। ৩) হুগলির তারকেশ্বরে পালিত হয় সন্ন্যাসী গাজন। ৪) মেদিনীপুর এবং বাঁকুড়ায় পালিত হয় ভৈরব গাজন। 

আরও পড়ুন- কেন মদন ত্রয়োদশীতেই শুরু হয় গাজনের মেলা? পিছনে এক বিরাট রহস্য

সব মিলিয়ে বলতে গেলে, চড়ক পূজা বাংলার সংস্কৃতির একটি উজ্জ্বল উদাহরণ, যেখানে ভক্তি, সাহস ও সংস্কারের এক অপূর্ব সমন্বয় দেখা যায়। শিবকে তুষ্ট করার এক ধরনের কঠোর ব্রতের ধর্মীয় আবেগ আর লোকাচার মিলেমিশে গিয়েছে। যা প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে বয়ে চলেছে বাংলার হৃদয়ে।

Charak pujo Hindu