সারাদিনে ভীষণ মাত্রায় কাজ করেন? মানসিক চাপ ক্রমশই বাড়ছে? তার সঙ্গে খাওয়াদাওয়া একেবারেই সময়মতো হয় না? শরীর সুস্থ রাখতে গেলে বিশ্রামের কিন্তু অবশ্যই দরকার। দরকার পুষ্টিকর খাদ্যের এবং মানসিক শান্তির। পুষ্টির অভাব কিন্তু স্নায়ু দুর্বলতার মতই নানান ক্ষতি করতে পারে। আপনি হয়তো বুঝতেও পারবেন না। অভ্যন্তরীণ স্বাস্থ্য ক্রমশই ভেঙে পড়বে। স্নায়ু স্বাস্থ্যের দুর্বলতা ক্রমশই বাড়তে থাকে। কিন্তু এর প্রাথমিক লক্ষণগুলি কী কী সেই নিয়ে এখনও পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে।
অনেকেই এমন আছেন বুঝতেও পারেন না অসুস্থতার ইঙ্গিত। আবার অনেকেই উপেক্ষা করে যান, সাময়িক কোনও সমস্যা ভেবে বেশিরভাগ সময় এড়িয়েই চলেন। এক সমীক্ষার ভিত্তিতে দেখা গেছে, ১৮০০ জন মানুষের মধ্যে ৬০ শতাংশের বেশি মানুষই দুর্বল স্নায়ুর লক্ষণগুলি এড়িয়েই গেছেন।
স্নায়ু দুর্বলতার কারণগুলির মধ্যে যেগুলি বেশিমাত্রায় লক্ষ্যণীয় সেই প্রসঙ্গেই নিউরোলজি বিভাগীয় প্রধান (ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্স) ডা. সতীশ খাদিলকর বলেন, ভিটামিন বি ঘাটতি যুক্ত মানুষরাই স্নায়ু দুর্বলতার শিকার। পুষ্টির অভাব এমনকি অপুষ্টির ফলেও এই সমস্যা দেখা দেয়। তাই স্নায়ু সচল রাখতে ভিটামিন বি-র গ্রহণ বৃদ্ধি করতে হবে। এটি নিজে থেকে শরীরে তৈরি হয় না। ভিটামিন বি-১২ সঠিক মাত্রায় গ্রহণ না করলে এর সমাধান নেই। আবার অনেকেই খাবার থেকেও পর্যাপ্ত পরিমাণে শোষণ করতে পারেন না। যতই সেবন করুন না কেন এর অভাব থেকেই যায়। তাই বয়স্কদের মধ্যে বেশিরভাগ সময়ই এর প্রভাব বেশি। তাদের হাড়ের জোর ক্রমশই কমতে থেকে। ব্যথা বেদনা অনুভব কম হয়। অল্পবয়সীদের মধ্যে হাত-পা কাঁপা, মাথা ঘোরা, পায়ের পাতা আরষ্ঠ হওয়া, এবং শারীরিক দুর্বলতা এগুলিই মূল লক্ষণ।
স্নায়ু প্রসঙ্গে অনেকেই ভুল ধারণা আরোপ করেন। তাদের অনেকেই জানেন না, স্নায়ু এবং রক্তকোষ দুটির মধ্যে পারস্পরিক সঞ্চালনের ধারা এক নয়। সুস্থ স্নায়ু শরীরের জন্য ভীষণ মাত্রায় গুরুত্বপূর্ণ এই বিষয়ে অনেকেই জানেন না। বিশেষজ্ঞদের মতামত অনুযায়ী, অনেকেই স্নায়ু বিষয়ক সমস্যা নিয়ে অবগত নন। তাদের স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করা দরকার। প্রথম থেকেই যদি এই বিষয়ে লক্ষ্য না দেওয়া হয় তবে দিনদিন এর অবস্থা আরও শোচনীয় হয়ে উঠতে পারে। প্রাথমিক লক্ষণগুলি মানুষকে চিনতে হবে। সুষম খাদ্য, পর্যাপ্ত পরিচালনা, চিকিৎসকের পরামর্শ এর ঘেরাটোপ থেকে মুক্তি দিতে পারে। ঝুঁকি না নিয়ে স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে।
আরও পড়ুন তিরিশেই উধাও ত্বকের জেল্লা? এই টিপসগুলি দেবে দারুণ কাজ
গবেষণার ফলাফল জানান দেয়, স্নায়ু সমস্যা সম্পর্কে মানুষের মধ্যে জ্ঞান খুবই সীমিত। উপসর্গ অনেকেরই ছিল তারপরেও ৫০ শতাংশ মানুষই স্নায়ু স্বাস্থ্যের সঙ্গে সম্পর্কিত। খাবার থেকেই প্রয়োজনীয় ভিটামিন এবং পুষ্টি সংগ্রহে আগ্রহী তারা। ৭৩ শতাংশ মানুষ শাক সবজির উপর নির্ভর করেন আর ৬৯ শতাংশ মানুষ আগ্রহী ফল এবং অন্যান্য পুষ্টির উপর। কিন্তু তার সঙ্গে এর সঠিক উৎস হিসেবে কিছু ওষুধ এবং পথ্য গ্রহণ করা উচিত। বদলাতে হবে জীবনধারা। খাদ্য এবং পুষ্টির বিষয়ে নজর দিতে হবে। মানসিক শান্তি বজায় রাখতে হবেই। অতিরিক্ত চাপ মানুষের স্নায়ু দুর্বলতা আরও বাড়িয়ে তোলে। শারীরিক কার্যকারিতা উন্নত করতে হবে। স্থায়ী সমস্যার সমাধান করা খুবই প্রয়োজন।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন