না ফেরার দেশে আগুনপাখি। প্রয়াত হলেন বাংলাদেশের প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক হাসান আজিজুল হক। ৮২ বছর বয়স হয়েছিল তাঁর। সোমবার ভারতীয় সময় রাত ৯টা নাগাদ রাজশাহির বাড়িতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। বাধর্ক্যজনিত সমস্যার কারণে গত সেপ্টেম্বর মাসে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। পরে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরলেও দুমাসের মাথায় প্রয়াত হলেন হাসান আজিজুল হক। তাঁর প্রয়াণে বাংলা সাহিত্য জগতে শোকের ছায়া।
১৯৩৯ সালে অভিভক্ত বাংলার বর্ধমান জেলার যবগ্রামে জন্মগ্রহণ করেন আজিজুল। পরে তাঁর পরিবার ওপার বাংলায় চলে যায়। ছাত্রাবস্থায় রাজনীতির প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়েন। পাকিস্তান সেনার হাতে নির্যাতনেরও শিকার হয়েছিলেন। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দর্শনে স্নাতকোত্তর হন। পরবর্তীকালে এই বিশ্ববিদ্যালয়েরই অধ্যাপক হন। ১৯৭৩ সালে তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগে শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন। এ বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০০৪ সাল পর্যন্ত একনাগাড়ে ৩১ বছর অধ্যাপনা করেন।
ছয়ের দশক থেকে লেখালেখি শুরু করেন তিনি। ঔপন্যাসিক ও ছোট গল্পের লেখক হিসাবে বাংলা সাহিত্য জগতে বিশিষ্ট স্থানাধিকার করেন তিনি। প্রথম উপন্যাস আগুনপাখি লেখেন ২০০৬ সালে। অবিভক্ত রাঢ়বঙ্গ নিয়ে উপন্যাসের পটভূমি। সেই সময় মহামারি, অনাহার, ধর্মীয় বিভাজন এবং দেশভাগ তাঁর উপন্যাসে ফুটে ওঠে। ২০০৮ সালে এই উপন্যাসের জন্য আনন্দ পুরস্কার পান।
আরও পড়ুন করোনা পর্ব পেরিয়ে পুরনো ছন্দে ফিরছে বইমেলা! দু’সপ্তাহ সেন্ট্রাল পার্কে পুস্তক বিকিকিনি
তাঁর লেখা উল্লেখযোগ্য গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে ‘তৃষ্ণা’, ‘উত্তরবসন্তে’, ‘বিমর্ষ রাত্রি, প্রথম প্রহর’, ‘পরবাসী’, ‘আমৃত্যু’, ‘আজীবন’, ‘জীবন ঘষে আগুন’, ‘খাঁচা’, ‘ভূষণের একদিন’, ‘ফেরা’, ‘মন তার শঙ্খিনী’, ‘মাটির তলার মাটি’, ‘শোণিত সেতু’, ‘ঘরগেরস্থি’, ‘সরল হিংসা’, ‘খনন’, ‘সমুখে শান্তির পারাবার’, ‘অচিন পাখি’, ‘মা-মেয়ের সংসার’, ‘বিধবাদের কথা’, ‘সারা দুপুর’ ও ‘কেউ আসেনি’।
বাংলা সাহিত্যে অবদানের জন্য বাংলা অ্যাকাডেমি সাহিত্য পুরস্কার, একুশে পদক ও স্বাধীনতা পুরস্কার পেয়েছেন তিনি। এই কথাসাহিত্যিকের মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করেছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন