Advertisment

নিঃসঙ্গতার একশ বছর

অন্তরের দুর্বলতাকে আপ্রাণ চেষ্টা করে ঢাকা দেওয়ার আরেক নামও সম্ভবত একাকিত্ব। কখনো পরিস্থিতি এতই বিপ্রতীপ হয়ে ওঠে, নিঃসঙ্গতাকে ছাড়িয়ে জেগে ওঠে হিংস্রতা। লিখছেন ইস্তাম্বুলের সাবাঞ্জে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক প্রবীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায়।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

ইলন একা নন, একাকীত্বের সঙ্গে যুঝতে অল্পবিস্তর ভয় আমাদের সবার। (ছবি চিন্ময় মুখোপাধ্যায়)

প্রবীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায়

Advertisment

একুশ শতকের কিংবদন্তিতুল্য প্রযুক্তিবিদদের নামের লিস্ট বানাতে গেলে সম্ভবত প্রথম তিনের মধ্যে ইলন মাস্ক কে রাখতেই হবে। দক্ষিণ আফ্রিকায় জন্মালেও ইলন এখন সিলিকন ভ্যালির বাসিন্দা। এবং সেই সিলিকন ভ্যালি থেকেই প্রায় সারা পৃথিবীর মানুষকে স্বপ্ন দেখাচ্ছেন মঙ্গলগ্রহে বসতি স্থাপন করার বা হাইপারলুপ নামক টেকনোলজির মাধ্যমে প্রায় চারশ মাইল রাস্তা মোটে আধ ঘণ্টায় পাড়ি দেওয়ার। ঊনিশ বিলিয়ন ডলারের মালিক ইলন সম্প্রতি জানিয়েছেন তাঁর সবথেকে বড় ভয় রাত্রে বিছানায় একা শোয়া। তাঁর পাশের বালিশে কেউ মাথা রাখেনি এবং সারা বাড়িতে শব্দ বলতে তাঁর নিজের হৃৎস্পন্দন এ কথা কল্পনা করতেই ইলনের আতঙ্ক জাগে। পৃথিবীর অন্যতম শক্তিশালী মানুষটি নিঃসঙ্গতাকে বড়ই ভয় পান।

ইলন একা নন, একাকিত্বের সঙ্গে যুঝতে অল্পবিস্তর ভয় আমাদের সবার।

এবং এই ভয়টা কিছুটা হলেও অমূলক। অন্তত আধুনিক নিউরোসায়েন্টিস্টদের কথা বিশ্বাস করলে এমনটিই বলতে হয়। এম-আই-টি’র বিজ্ঞানীদের সাম্প্রতিক গবেষণা দেখাচ্ছে নিঃসঙ্গতা একটা ‘স্টেট’ নয় বরং একটা ‘সিগন্যাল’। যে সিগন্যাল মনে করিয়ে দিচ্ছে আপনি একজন সামাজিক জীব, সুস্থভাবে বেঁচে থাকার দরুণ সামাজিক সঙ্গ আপনার প্রয়োজন। এবং সেটা কম পড়েছে বলেই আপনার মস্তিষ্কে অস্থিরতা তৈরি হচ্ছে। আপনি আপনি করে বললাম বটে, তবে যে সাবজেক্টদের মাথায় খানাতল্লাশি করে এহেন সিদ্ধান্তে গবেষকরা পৌঁছেছেন তারা নেহাতই গিনিপিগ, আক্ষরিক অর্থেই। কিন্তু গবেষকরা এ ইঙ্গিত-ও দিয়েছেন যে কথাটা সম্ভবত মানুষদের জন্যও সত্যি।

সত্যি বলেই ধারণা, আমারও।

কিন্তু এই বিশ্বাসটা যতটা না সায়েন্টিফিক জার্নাল পড়তে গিয়ে জন্মেছে তার থেকেও বেশি জন্মেছে ক্রিস্টোফার ইশারউড, ভার্জিনিয়া উলফ বা বেন লার্নারদের উপন্যাস পড়তে গিয়ে। নিঃসঙ্গতা নিয়ে বিজ্ঞানীদের থেকে কম মাথা ঘামান নি সাহিত্যিকরা। এবং এনাদের কাজগুলো ‘ফিকশন’ হলেও গভীর দ্যোতনাময়।

আরও পড়ুন, হত্যা হাহাকারে – অপরাধসাহিত্যে বিনির্মাণ ও আধুনিকতা

ইশারউডের কথাই ধরা যাক। ‘এ সিঙ্গল ম্যান’( ১৯৬৪) ইশারউডের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কাজ। কেন্দ্রীয় চরিত্র জর্জ ফ্যালকনার ইশারউডের মতনই জন্মসূত্রে ব্রিটিশ হলেও পরবর্তীকালে আমেরিকার বাসিন্দা।  এবং লেখকের মতনই তাঁর চরিত্রও সমকামী। যারা উপন্যাসটির চলচ্চিত্রায়ণ দেখেছেন তাঁরা জানেন ইংরেজি সাহিত্যের অধ্যাপক জর্জের একাকিত্বকে মরমী রূপ দিয়েছিলেন কলিন ফার্থ। জর্জ ফ্যালকনার স্থানীয় সুপারমার্কেটে ঢুকতে ভয় পান। সুপারমার্কেটের কতশত মানুষ, তাদের চব্বিশ ঘণ্টার কার্যকলাপ, আলোর ছটা আর পণ্যসম্ভারের রঙে সারাক্ষণ সেজে থাকা বাজারটিকে জর্জ এড়িয়ে চলেন। অথচ মনে মনে তিনি জানেন, “Its brightness offers sanctuary. From loneliness and dark”। তাহলে কি জর্জ সততই ‘সিঙ্গল ম্যান’, নিঃসঙ্গতায় ডুবে থাকাটাই তাঁর অভিপ্রায়? তা তো নয়। আসলে সুপারমার্কেটের প্রতিটি বাঁক, প্রতিটি সারি তাঁকে মনে করিয়ে দেয় সেই অসংখ্য ডিনারের কথা যা তৈরি করার জন্য জর্জকে বারে বারে আসতে হত এই বাজারে, জিমের সঙ্গে। জিম, তাঁর জীবনসঙ্গী। মৃত। নিঃসঙ্গতা থেকে মুক্তির জন্য একাধারে জর্জ ছটফট করতে থাকেন বর্ণোজ্জ্বল সুপারমার্কেটে ঢোকার জন্য, অথচ স্মৃতিভার তাঁকে টেনে ধরে থাকে। ‘সিঙ্গল ম্যান’ এর একাকিত্ব স্বতঃপ্রবৃত্ত নয়, এক গভীর ট্র্যাজেডির পরবর্তী ধাপ মাত্র।

publive-image একাকিত্বের ছোঁয়ায় অসহায় বোধ করতেই পারেন তবে ভয় পাবেন না। বরং ভাবুন নিজের জীবনকে রিসেট করার এই হল সুবর্ণ সুযোগ। (ছবি চিন্ময় মুখোপাধ্যায়)

জর্জ ফ্যালকনার একা নন, বিশ্বসাহিত্যের সবথেকে নিঃসঙ্গ চরিত্রদের অধিকাংশই একা থাকতে চান না। নিঃসঙ্গতা তাঁদের কাছে প্যাশন নয়, অন্তর্নিহিত বিষাদের বহিঃপ্রকাশ মাত্র। খেয়াল পড়ছে অ্যাডাম গর্ডনের কথা। অ্যাডাম, আমেরিকান কবি এবং সমালোচক বেন লার্নারের মানসপুত্র, ২০১১ সালে প্রকাশিত (এবং প্রভূত প্রশংসিত) উপন্যাস ‘লিভিং দ্য অ্যাটোচা স্টেশন’ এর কেন্দ্রীয় চরিত্র। অ্যাডাম নিজেও কবি (বলা বাহুল্য যে লেখকদের নিজস্ব সত্তাদের বারেবারে তাঁদের লেখায় উঠে আসতে দেখাটা নেহাত সমাপতন নয়)। স্প্যানিশ গৃহযুদ্ধে সাহিত্যের প্রভাব নিয়ে কিছু লেখার জন্য অ্যাডাম আমন্ত্রণ পেয়েছেন মাদ্রিদ থেকে। নতুন দেশে ঘোরার, নতুন মানুষজনের সঙ্গে আলাপের, নতুন কবিতা লেখার যা যা সুযোগ এসেছে তার সব কিছুই অ্যাডাম কৃতজ্ঞচিত্তে গ্রহণ করেছেন। অথচ মাদ্রিদের প্রতিটি মুহূর্তেই অ্যাডাম চোখে পড়ার মতন একা। প্রতিটি কথোপকথন, প্রতিটি কবিতাপাঠ, প্রতিটি ধূম্রপান, প্রতিটি সঙ্গমের মুহূর্তে অ্যাডাম একা। আক্ষরিক অর্থে অবশ্যই নন, কিন্তু মানসিক ভাবে বটেই। কোনো ব্যক্তিবিশেষের কাছেই অ্যাডাম ধরা দিতে চান না। অথচ এই তথাকথিত নিঃসঙ্গ মানুষটি কী বলছেন শুনুন, “ Of course I could not sit in the plaza alone, although I saw men do that, guidebooks beside their beers, and I could not approach one of the innumerable roving bands and just ask to join their company, but I came to realize that I could leave my apartment and enter the flow of the nightunashamed so long as I walked purposefully, pretending I had somewhere to be’’.

আরও পড়ুন, কুমারীধর্ষণের চরম শাস্তিতে সক্রিয় সরকারঃ একটি প্রতিক্রিয়া

অ্যাডাম যে শুধু একা থাকতে চাইছেন না তাই নয়, সমুদ্রতীরে যে মানুষগুলি একা বই আর বিয়ারের ক্যান হাতে বসে থাকেন তাঁদের মানসিকতা নিয়ে পরোক্ষে যেন প্রশ্নই তুলছেন। অথচ এই আমেরিকান তরুণ কবির অনেকটা সময়ই কাটে নিঃসঙ্গতম স্প্যানিশ কবি ফেদেরিকো গার্সিয়া লোরকা-র কবিতা পড়ে, আর ডিপ্রেশনের ওষুধ খেয়ে। অ্যাডাম মানুষটি তাহলে আসলে কে? অ্যাডামকে এই প্রশ্ন সরাসরি জিজ্ঞাসা করলে সম্ভবত উত্তর আসবে অ্যাডাম প্রতারক। অ্যাডামের ধারণা প্রতিটা মানুষই বিশ্বসংসারকে ঠকিয়ে যাচ্ছে, এবং সবার আগে ঠকাচ্ছে নিজেকে। প্রিটেনশন।  অ্যাডামের ধারণা তিনি নিজেও ব্যতিক্রম নন। আগের অনুচ্ছেদেই দেখুন, যতক্ষণ অবধি অ্যাডাম ভান করতে পারছেন তাঁর একটা গন্তব্যস্থল আছে তিনি খুশি। আর এই গন্তব্যস্থল শুধু ভৌগোলিক নয়, আধিবিদ্যক অর্থাৎ মেটাফিজিক্যালও বটে। অ্যাডামের ধারণা এ দুনিয়ার প্রতিটি ক্রিয়াকর্মই হতে হবে বলে হয়ে যাচ্ছে, অধিকাংশ সময়েই কোনো নিবিড় লক্ষ্য থাকছে না। বা থাকলেও অধিকাংশ মানুষ সে লক্ষ্যকে উপেক্ষাই করে চলেন।

অ্যডাম নিজে ফিকশনাল চরিত্র হতে পারেন কিন্তু অ্যাডামের মানসিকতা বড়ই বাস্তব। ১৯৭৮ সালে  জর্জিয়া স্টেট ইউনিভার্সিটির দুই মনস্তত্ববিদ পলিন ক্ল্যান্স এবং সুজান ইমস এরই নাম দিয়েছিলেন, ‘ইমপোস্টর সিনড্রোম’। নিজেদের মেধাশক্তির ওপর আস্থা না রাখতে পারা এবং সর্বক্ষণ ভয়ে থাকা, এই বুঝি বাকি পৃথিবী ধরে ফেলল আমার লোক দেখানো কাজকর্মগুলো। এহেন ভয়ের সঙ্গে প্রতিনিয়ত যুঝতে হলে খুব স্বাভাবিক ভাবেই মানুষ চাইবে তার মেলামেশার পরিধিটুকু সঙ্কীর্ণতম করে তুলতে। নিঃসঙ্গতাকে আবারো দেখতে পাচ্ছি একটা ভয়ের প্রতিফলন হিসাবে।

publive-image বিংশ এবং একবিংশ শতাব্দীর সাহিত্যে নিঃসঙ্গতা নিয়ে চর্চা কম হয়নি। (ছবি চিন্ময় মুখোপাধ্যায়)

বিংশ এবং একবিংশ শতাব্দীর সাহিত্যে নিঃসঙ্গতা নিয়ে চর্চা কম হয়নি। এবং এই নিঃসঙ্গতা-চর্চাকে সাহিত্যের মূলধারায় নিয়ে আসার পেছনে বহুলাংশে অবদান রয়ে গেছে ব্রিটিশ লেখিকা ভার্জিনিয়া উলফের। সাধে এডওয়ার্ড অ্যালবি তাঁর সেই বিখ্যাত নাটকের নাম রেখেছিলেন “Who’s afraid of Virginia Woolf’’, যে নাটক আবর্তিত হয়  নিঃসঙ্গ দাম্পত্য জীবনকে কেন্দ্র করে। এবং পাঠক, আপনি যদি সে নাটকের চলচ্চিত্রায়ণটি আজ অবধি দেখে থাকার সুযোগ না পান তাহলে অনতিবিলম্বে দেখার সুযোগ করে নিন। আপনার নিঃসঙ্গ সন্ধ্যা লিজ টেলর এবং রিচার্ড বার্টনের সান্নিধ্যে জটিলতর হয়ে উঠুক। ভার্জিনিয়া উলফ-এ ফেরা যাক। তাঁর নামাঙ্কিত নাটকের মতন নিজের সাহিত্যেও দাম্পত্য জীবন এবং নিঃসঙ্গতা বারেবারেই ফিরে ফিরে এসেছে।  ১৯২৭ সালে লেখা ‘টু দ্য লাইটহাউস’ ভার্জিনিয়ার শ্রেষ্ঠ সাহিত্যকীর্তিগুলির মধ্যে একটি। ‘টু দ্য লাইটহাউস’ এর প্রোটাগনিস্ট মিস্টার র‍্যামসে কিন্তু জর্জ ফ্যালকনার বা অ্যাডাম গর্ডনদের থেকে আপাতদৃষ্টিতে অনেকটাই ভিন্ন প্রকৃতির মানুষ। দার্শনিক র‍্যামসে ঘোর সংসারী, তাঁর ছেলেমেয়ের সংখ্যা আট। স্বৈরাচারী, এবং পুরুষতান্ত্রিকও বটে। কিছুটা আত্মজৈবনিক এ উপন্যাসে র‍্যামসের মধ্যে ভার্জিনিয়ার নিজের বাবা লেসলি স্টিফেনের ছায়া পড়েছে। লেসলির মতনই র‍্যামসেও সার্বিক ভাবে সংসারে সুখ ও শান্তি চান, অথচ একই সঙ্গে মানসিক নির্যাতন চালান তাঁর স্ত্রী ও ছেলেমেয়ের ওপর। কেন? ‘টু দ্য লাইটহাউস’-এ ভার্জিনিয়া দেখালেন রক্ষণশীলতা, পুরুষতান্ত্রিকতা এগুলো সবই বাইরের খোলস মাত্র। ভেতরে রয়ে গেছে অপরিসীম অসহায়তা। যে কারণে প্রতি পদে স্ত্রী বা সন্তানদের প্রতি অবমাননা দেখালেও আদতে এদের প্রত্যেকের থেকেই র‍্যামসে চান সহানুভূতি। কারণ র‍্যামসের ধারণা ভাবীকাল তো বটেই, হয়ত নিজের সময়েও কেউই মনে রাখবে না তাঁকে। এই অসহায়তা ক্রমেই র‍্যামসেকে কোণঠাসা করেছে। তাঁর আপাত কড়া ভাবমূর্তিটির সঙ্গে এই অসহায়তা এক আশ্চর্য বৈপরীত্য সৃষ্টি করেছে। ভেবে দেখুন, নিজের চেনা চৌহদ্দির মধ্যে এরকম অজস্র র‍্যামসেকে আপনি খুঁজে পাবেনই, তাঁরাও সম্ভবত কারোর না কারোর বাবা। হয়ত আপনার-ই। সব কিছু থেকেও তাঁরা নিঃসঙ্গ, কারণ সংসারের ভরকেন্দ্রটুকু হয়ে ওঠার আকাঙ্ক্ষায় তাঁর আপনজনদের সঙ্গে অতি প্রয়োজনীয় বণ্ডিংটুকুই করে উঠতে পারেন নি।

আরও পড়ুন :সংবাদ জগতের একাল-সেকাল

হ্যাঁ, অন্তরের দুর্বলতাকে আপ্রাণ চেষ্টা করে ঢাকা দেওয়ার আরেক নামও সম্ভবত একাকিত্ব। কখনো পরিস্থিতি এতই বিপ্রতীপ হয়ে ওঠে, নিঃসঙ্গতাকে ছাড়িয়ে জেগে ওঠে হিংস্রতা। সে হিংস্রতা কখনো বর্ণবাদ হয়ে আসে, কখনো বা নারীবিদ্বেষ। র‍্যামসের ছাত্র চার্লসের মতন আমরাও তাই মাঝে মাঝেই হিসহিসিয়ে উঠি, “Women can’t paint, women can’t write’’।

ইলন মাস্কের ভয়ও কি তাহলে কিছু জানাতে চাইছে? সম্ভবত।  ইলন মাস্কের দুই প্রাক্তন স্ত্রীই জানিয়েছেন ইলনের সঙ্গে তাঁদের সম্পর্ক পূর্ণতাপ্রাপ্তির দিকে এগিয়ে যেতে যেতেও হোঁচট খেয়ে পড়েছে যখন ইলন জানিয়েছেন তিনি ‘আলফা মেল’ অর্থাৎ তাঁদের সংসারে ইলনের কথাই শেষ কথা। ইলনের দাবিতেই তাঁর স্ত্রীদের মাথার চুলের রঙ সোনালি থেকে সোনালিতর করে ফেলতে হয়েছে। মধ্যবিত্ত (এবং ঘোর পুরুষতান্ত্রিক) পরিবার থেকে উঠে আসার ইলনের ‘ট্রফি ওয়াইফ’ পাওয়ার ঝোঁক দেখে আশ্চর্যই হয়েছেন তাঁরা। শুধু পরিবার নয়। টেসলা বা স্পেস-এক্স এর মতন কোম্পানি থেকে বারেবারে অভিযোগ উঠেছে মুনাফা লাভের সময় ইলন শ্রমিকদের কথা মাথাতেই রাখেন নি। টেসলার ফ্যাক্টরিতে একাধিক শ্রমিক অসুস্থ হয়ে পড়েছেন হাড়ভাঙ্গা খাটুনি খাটতে গিয়ে। সেসব অভিযোগ এতই গুরুতর প্রায় প্রত্যেকবারেই ইলনকে সোশ্যাল মিডিয়া এবং ডিজিটাল পোর্টালের মাধ্যমে জবাব দিতে হয়েছে। সম্পদ, খ্যাতি, প্রতিপত্তির কোনো কিছুরই অভাব নেই ইলনের। তবুও তার মাঝেই হয়ত মস্তিষ্কের  ‘ডরসাল রেফি নিউক্লিয়স’ জানান দিচ্ছে ইলন ক্রমশই  তাঁর কাছের মানুষদের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছেন। যে খ্যাতি তাঁকে চব্বিশ ঘণ্টা, সাত দিন প্রচারের তুঙ্গে তুলে রেখেছে তা নেহাৎই বহিরঙ্গ মাত্র। অন্তরঙ্গে ইলন কি সুখী আছেন?

ইলন মাস্ক কোটি কোটি মানুষের একজন মাত্র। তাঁর কথা এ লেখায় এসেছে নিছকই উদাহরণ হিসাবে। ইলন মাস্ক নন, নিঃসঙ্গতা নিয়েই আরেকটু ভাবনাচিন্তা করা যাক বরং।  একাকিত্বের ছোঁয়ায় অসহায় বোধ করতেই পারেন তবে ভয় পাবেন না। বরং ভাবুন নিজের জীবনকে রিসেট করার এই হল সুবর্ণ সুযোগ। আপাতত এটুকুই যা বলার।

আরও পড়ুন, সৎ অসতীর আত্মকথন

nissangotar 100 bachhor
Advertisment