গাড়িতে আসতে আসতেই বইটার ছ’টা পাতা পড়া হয়ে গিয়েছে বসন্ত সাহার। সত্যি খুব ইন্টারেস্টিং। এরকম একটা রহস্যের মধ্যে থেকেও বইটা ধরে ছাড়তে ইচ্ছে করছে না। বসন্ত সাহা মনে মনে ভাবলেন, না, চিত্রকলা থেকে একটু সরে এসে ভালই হয়েছে।
মেমোরিয়াল লেকচারে প্রফেসর বলেছেন, প্রাচীন এবং মধ্যযুগে ধনী, অভিজাত ঘরের মহিলারা কড়া বিষ বানাতে পারত। হত্যার জন্য ব্যবহার করত সেই বিষ। অপরাধ গোপন রাখতে বিষের জুড়ি নেই। এই ধরনের হত্যার কারণ বেশিরভাগই ছিল হিংসে নয়তো প্রতিশোধ।
বই থেকে মুখ তুললেন বসন্ত সাহা। ভুরু কুঁচকে তাকলেন সামনের শূন্য দেওয়ালের দিকে। মাথার ভিতর যেন একটু একটু করে আলো জ্বলে উঠছে। সুনন্দ হত্যার কারণ কী? হিংসা? নাকি প্রতিশোধ? বই সরিয়ে বসন্ত সাহা সাগ্নিকের দুটো ফোন নম্বর লেখা কাগজটা টেনে নিলেন।
পূরবী মাথুর ফোন ধরতে নিজের পরিচয় দিয়ে বললেন, ‘আশা করি ট্রু কলারে আপনি আমার কলকাতা অফিসের পরিচয় ইতিমধ্যেই জেনে ফেলেছেন। বুঝতে পারছেন, আমি ভুয়ো পরিচয় দিয়ে ফোন করছি না। পুলিশের ডিটেকটিভ ডিপার্টমেন্টে আমি চাকরি করি।’
কাঁপা গলায় পূরবী বলল, ‘কী হয়েছে স্যার। আমি তো কিছু বুঝতে পারছি না। ম্যাডাম কলকাতায়। ওঁর কি কিছু হয়েছে?’
বসন্ত সাহা এই উৎকণ্ঠার জবাব না দিয়ে ঠান্ডা গলায় বললেন, ‘আমি একটি বিষয়েই প্রশ্ন করব। ঠিক উত্তর দেবেন। আশাকরি, আপনার কাছ থেকে ঠিক উত্তর পাওয়ার জন্য আমাকে পুনের পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে না। সেটা আমাদের দুজনের জন্যই আনফরচুনেট হবে।’
পূরবী আরও কাঁপা গলায় বলল, ‘বলুন স্যার।’
‘ডি. স্ট্র্যামোনিয়াম, ওপিয়াম এবং সালফিউরিক অ্যাসিড এই তিন কেমিক্যাল কি আপনাদের কাজে কোনও প্রয়োজন হয়?’
পূরবী বলল, ‘অবশ্যই হয়। ল্যাবরেটরি সব সময় রাখতে হয়।’
‘সাপ্লায়ার রয়েছে?’
পূরবী বলল,‘হ্যাঁ। এগুলো হেভি পয়েজনাস। মিশে গেলে আরও ডেনজারাস। লাইসেন্সড্ সাপ্লায়ার ছাড়া পাওয়া যায় না।’
বসন্ত সাহা বললেন, ‘আপনাদের কি এগুলো মেশাতে হয়?’
পূরবী বলল, ‘কখনও কখনও হয়। কদিন আগে দুটো শিশি মিসপ্লেসড্ হয়েছিল।’
বসন্ত সাহা বিস্ময়ের সঙ্গে বললেন, ‘মিসপ্লেস হয়েছিল! হারিয়ে গিয়েছিল?’
পূরবী বলল, ‘ভুল জায়গায় রাখা হয়েছিল। ম্যাডাম আমাদের অ্যালার্ট থাকতে বলেছেন।’
‘ম্যাডাম কে?’
পূরবী বলল, ‘আমাদের বস। কোম্পানির চিফ কেমিস্ট। হৈমন্তী সেন।’
বসন্ত সাহা একটু চুপ করে থেকে বললেন, ‘থ্যাঙ্কু পূরবী। শুধু পুলিশের তরফ থেকে একটাই অনুরোধ করব।’
‘বলুন স্যার।’
বসন্ত সাহা বললেন, ‘আমাদের এই ডিসকাশন আর কেউ না জানলেই ভাল হয়। একটা ইনভেস্টিগেশনরে মধ্যে রয়েছি। সকলের ফোনের ওপরই আমাদের নজর রাখতে হয়েছে।’
পূরবী আতঙ্কিত গলায় বলল, ‘সেকী! আমার ফোনেও...।’
বসন্ত সাহা বললেন, ‘সরি, এটা ডিউটি। ভয় পাওয়ার মতো কিছু নয়। মনে রাখবেন, আর কারও সঙ্গে আমাদের এই আলোচনা শেয়ার না করাই ভাল। তাহলে রাখলাম।’
আরও পড়ুন, “আমিই কবিতার কথা শুনে চলি”
পূরবীর ফোন ছেড়ে রায়নার নম্বর ধরলেন বসন্ত। একই ভাবে নিজের পরিচয় দিয়ে বলেলেন, ‘বন উই দ্য কোম্পানির মিসেস হৈমন্তী সেনের সঙ্গে আপনার কী সম্পর্ক?’
‘উনি আমাকে দিয়ে ছবি আঁকিয়েছেন।’
‘কী ছবি?’
‘নিজের ছবি।’
‘পোর্ট্রেট?’
‘অনেকটা তাই। এর বেশি কিছু বলা যাবে না। প্রফেশনাল এথিক্স। আমি ওঁকে কথা দিয়েছি।’
বসন্ত সাহা বললেল, ‘ছবিটা কার কাছে সেটা কি বলা যাবে?’
‘মনে হয়, মিসেস সেনের কাছেই রয়েছে। সেরকমই উনি বলেছিলেন।’
বসন্ত সাহা ফোন নামাতে নামাতে সাগ্নিকের ফোন।
‘স্যার জেরক্সের দোকানের ছেলেটির নাম শশা। শশা চিনতে পেরেছে। বলেছে এই লোকটাই সেই নম্বরে ফোন করেছে কিনা জানি না। তবে সেদিন ফোন করতে ঢুকেছিল। তার মনে থাকবার কারণ লোকটার গাড়ির নম্বরটা ছিল অদ্ভুত। ১২৩৪৫। শশা নিজের মোবাইলে একটা ছবিও তুলে রেখেছে। আমাকে দেখিয়েছে। গাড়ির মালিককে দেখা যাচ্ছে। স্যার, লোকটা সুনন্দ।’
বসন্ত সাহা বললেন, ‘চলে এসো। সাগ্নিক, মনে হচ্ছে, রহস্যের সমাধান হয়ে গিয়েছে। আসামী ধরা পড়বে।’
সাগ্নিক বলল, ‘মোটিভ?’
বসন্ত সাহা নিচু গলায় বললেন,‘আসামী নিজেই বলবে। বলেছিলাম না, এই রহস্য সমাধানের পথটা উলটো হবে। তুমি এসো। কাজ আছে।’
ইন্টারকম তুলে কন্ট্রোলরুম ধরলেন বসন্ত সাহা। চেয়ারে হেলান দিয়ে ঠাণ্ডা গলায় বলেলেন, ‘হোটেলের নামটা লিখে নিন। আর একটা ফ্ল্যাটের অ্যাড্রেসও দিচ্ছি। প্লেন ড্রেসে গার্ড পাঠান। হোটেলের বাইরে, ভিতরে গার্ড থাকবে। হৈমন্তী সেনের রুম নম্বর জেনে করিডোরে লোক রাখুন। দেখবেন যেন বেরোতে না পারে। দিশা নামের মেয়েটিও যেন ফ্ল্যাট থেকে বেরোতে না পারে। জোর করলে থানায় নিয়ে যাবেন। দু’ জায়গাতেই লেডি পুলিশ সঙ্গে রাখবেন। আমি না বললে কাউকে অ্যারেস্ট করবেন না। দুজন নয়, শেষ পর্যন্ত আমরা একজনকে ধরব।’
ইন্টারকম ছেড়ে বসন্ত নিজের মনে বললেন, ‘আর একটু...আর একটু...।’
বলতে বলতে তিনি আবার রায়না মেয়েটিকে ফোন করলেন। পুনে চলে গেলে হত, হাতে সময় নেই। যা করবার আর কয়েক ঘন্টার মধ্যে করতে হবে।
‘রায়না, আপনাকে আবার ফোন করছি বলে কি আপনি বিরক্ত হচ্ছেন?’
রায়না শান্ত গলায় বলল, ‘না, আমি অত সহজে বিরক্ত হই না। তারওপর আপনি একজন পুলিশ অফিসার। আমার এক কাজিন পুলিশে চাকরি করেন। বুঝতে পারছি, আপনি কোনও প্রয়োজনে বারবার ফোন করছেন। তবে এথিক্সের বাইরে গিয়ে কোনও উত্তর দিতে পারব না। ’
‘ভেরি গুড। আচ্ছা, আপনি কি মনে করে বলতে পারবেন হৈমন্তী সেনের ছবি আঁকবার সময় তার সঙ্গে কেউ ছিল কিনা ? কোনও পুরুষমানুষ?’
রায়না একটু চুপ করে থেকে বলল, ‘দীর্ঘদিনের সিটিঙে যে ছবি আঁকা হয়েছে সেখানে কারও থাকা সম্ভব নয়, কোনও পুরুষমানুষের তো নয়ই।’
বসন্ত সাহা থমকে গেলেন। বললেন, ‘ও। উনি তবে একাই থাকতেন?’
রায়না বলল, ‘বললাম তো সেখানে আর্টিস্ট ছাড়া কারও থাকা সম্ভব নয়। উনি একটা বই নিয়ে বসে যেতেন। বইটার কভার এবং নামও মনে আছে। আমাকে সেটাও আঁকতে হয়েছে কিনা। নাইভস্ টু থাউজেন্ড নাইনটিন। কভারে একটা ছুরির ছবি। যার হাতলের কারুকাজ ডিটেলে ধরে রাখতে আমাকে বেশ বেগ পেতে হয়েছে।’
আরও পড়ুন, ‘সই’ থাকবে, কিন্তু সইদের মহীরুহ যে আর নেই
বসন্ত সাহা ফোন চেপে ধরে উত্তেজিত ভাবে বললেন, ‘বইটার কী নাম বললেন?’ রায়না একটু অবাক হয়ে বলল, ‘নাইভস্ টু থাউজেন্ড নাইনটিন। ছুরি টুরি নিয়ে লেখা হবে। বইটা কি কোনও ইস্যু?’
বসন্ত সাহা বললেন, ‘থ্যাঙ্কু, থ্যাঙ্কু ভেরি মাচ।’
বসন্ত সাহা উঠে দাঁড়িয়েছেন। তাঁর চোখ মুখ বদলে গিয়েছে। বোঝা যাচ্ছে তিনি রহস্য সমাধানের শেষ পর্বে এসে পৌছেছেন। তিনি অস্থির হয়ে উঠেছেন। হাত বাড়িয়ে ‘বিষ’ বিষয়ক চটি বইটা বন্ধ করতে গিয়ে খোলা পাতায় চোখ পড়ে গেল। চমকে উঠলেন বসন্ত সাহা। এ কী পড়ছেন! দাঁড়িয়েই খোলা পাতার লাইন কটা পড়ে ফেললেন।
বইতে এক রানির গল্প বলেছেন প্রফেসর বাগচি। ৪০০ খ্রীষ্ট পূর্বাব্দের এই রানির নাম পাহিজাচিস্। বিষ প্রয়োগে সিদ্ধহস্ত। তিনি তাঁর জা স্টাটিরাকে হত্যা করেছিলেন। সেই মহিলাও একজন রানি। রাজা সাইরাসের স্ত্রী। পাহিজাচিস্ খেতে বসে তাঁর জায়ের মাংসে কড়া বিষ মিশিয়ে দেন। মেশানোর পদ্ধতিটি যেমন বুদ্ধির, তেমন অভিনব। তিনি ছুরির একদিকে বিষ লাগিয়ে নিয়েছিলেন। অন্যদিকটা ছিল পরিষ্কার। ওই ছুরি দিয়ে মাংস কাটেন পাহিজাচিস্। বিষ লাগানো দিকের মাংসটা তুলে দেন জাকে। উলটোদিকের অংশটা খান নিজে। জা নিশ্চিন্তে মাংস খান এবং কয়েক ঘন্টার মধ্যে মারা যান। পাহিজাচিসের কিছু হয় না। কেউ সন্দেহও করতে পারেনি। কারণ ওই একই মাংস তিনি নিজেও খেয়েছেন। একই ছুরি দিয়ে কাটা। কেউ ভাবতেও পারেনি, ছুরি এক হলেও, ছুরির দুটো দিক ছিল আলাদা। একদিকে বিষ, অন্যদিক স্বাভাবিক।
বসন্ত সাহা চেয়ারে বসে পড়েন। ভংয়কর! শিল্পী অগ্যস্ত রনোয়্যারের কথা মনে পড়ছে। তিনি বলছেন, ‘আমি তো নতুন কিছু করছি না। আমার পূর্বপুরুষরা যা করছেন তার পুনরাবৃত্তি করছি।’
ইতিহাসের রানির মতোই হৈমন্তীর আনা ছুরির একদিকেও বিষ ছিল। উপহার হিসেবে দেওয়া নতুন ছুরি। বিষের শিশি লুকিয়ে আনতে হয়নি তাকে। আগে থেকেই মাখিয়ে এনেছিল। সবটা পরিকল্পনা করেই সে কেক আনবার দায়িত্ব নিয়েছিল। তারপর? কেক কে কেটেছে? ছবি কোথায়? ছন্দার পাঠানো হোয়াটসঅ্যাপের কথা মনে পড়ে যায় বসন্ত সাহার। টেবিলে পড়ে থাকা মোবাইল হাতে তুলে নেন দ্রুত। হোয়াটসঅ্যাপে গিয়ে ভিডিও খোলেন। ছবি ভেসে ওঠে মোবাইলের স্ক্রিন জুড়ে।
‘দ্য ড্রিম’ লেখা কেক কাটছে হৈমন্তী। কেক টেবিলের ওপর রাখা। সবাই আগ্রহ নিয়ে ঘিরে ধরে দেখছে। হৈমন্তী হাসতে হাসতে কাটছে। কাটছে ছুরির ডগা দিয়ে। কেকের গায়ে ছুরির ব্লেড লাগে না। কাটবার পর হৈমন্তী হাত বাড়িয়ে এক একটা টুকরো এগিয়ে দিচ্ছে। হাসতে হাসতে কারও কারও মুখে পুরেও দিচ্ছে। একসময়ে ছুরিটা সে কাত করল। একদিকের ব্লেড পুরো লেগে গেল কেক। সেখান থেকে একটা টুকরো সে এগিয়ে দেয় সুনন্দকে, একটা দেয় মেহুলের মুখে। উলটো দিকের টুকরো নিজে তুলে মুখে দেয়।
ব্যস্ এই পর্যন্ত। ভিডিও শেষ।
কখন যে সাগ্নিক ঘরে এসে দাঁড়িয়েছে বসন্ত সাহা বুঝতেও পারেননি। তাকে সংক্ষেপে সব বলে মোবাইলটা এগিয়ে দেন।
কন্ট্রোলরুমে ফোন করে বলেন, ‘একটু আগে দিশা নামের একটি মেয়ের ফ্ল্যাটে গার্ড পাঠাতে বলেছিলাম। তুলে নিন দরকারক নেই। হৈমন্তীর সেনের হোটেল ঘিরে ফেলুন। আমার আসছি।’
বসন্ত সাহা যখন হৈমন্তী সেনের হোটেলের ঘরে নক্ করেন, হৈমন্তী তখন মোবাইলে গান শুনছিল।
‘ফর দ্য আদার হাফ অফ দ্য স্কাই
উওম্যান আই ক্যান হার্ডলি এক্সপ্রেস...।’
সে দরজা খুলে হেসে বলল, ‘আসুন আমি অপেক্ষা করছিলাম। যখন পূরবী আর রায়নাকে ফোন করেছেন খবর পেয়েছি তখনই জানতাম আপনারা আসবেন।’
বসন্ত সাহা বললেন, ‘চলুন। আর দেরি করবেন না। মুকুরের ফ্রিজ থেকে কেকের একটা অংশ পাওয়া গিয়েছে। সে ফেলতে ভুলে গিয়েছিল। কিচেন থেকে ছুরিটাও মিলেছে। যদিও সেটা ধোয়া। তবে অনুকূলবাবু বলছেন, ধুলেও ফরেনসিকে বিষের কিছু চিহ্ন পাওয়া যাবে। এবার যদি বলেন, বিষের শিশিটা কোথায় রয়েছে, আমাদের সুবিধে হয়।’
হৈমন্তী বলে, ‘দাঁড়ান আমি বের করে দিচ্ছি।’
থানায় যাওয়ার আধঘন্টার মধ্যে হৈমন্তী সব বলে দেয়।
শরীরের প্রয়োজনেই সুনন্দর সঙ্গে তার সম্পর্ক। একসময়ে মিথ্যে প্রেমের অভিনয় করে সুনন্দ। মুকুরকে সরিয়ে তার সম্পত্তিও নিতে চেয়েছিল। চেয়েছিল, এই ভয়ংকর কাজটা হৈমন্তী করুক। শেষদিকে ভয় পাওয়ার ভান করে। সেটা ধরতে হৈমন্তীর সমস্যা হয়নিয ততক্ষনে মেহুলের সঙ্গে সুনন্দর প্রেমের খবর হৈমন্তীর জানা হয়ে গিয়েছে। খবর দিয়েছিল তন্ময়। তন্ময়ের সঙ্গেও আলাপ হঠাৎই। সেই ছেলেও শরীরে চমৎকার। সুনন্দর পরিকল্পনা ছিল, বউ মরলে সম্পত্তির মালিক হওয়া। তারপর খুব সম্ভবত মেহুলকে বিয়ে।
টেবিলের উলটোদিকে বসা হৈমন্তীকে জলের গ্লাস এগিয়ে দিলেন বসন্ত সাহা। সেই জল খেয়ে হৈমন্তী বলল,‘মিস্টার সাহা বার বার ঠকলে রাগ নয়, ক্লান্তি হয়। মনে হয়, আর ঠকব না। এই ক্লান্তি শেষ হোক। তাই সুনন্দকে বিষ মেশানো কেক খাইয়ে দিলাম। ও তো শুধু আমাকে নয়, মুকুরের মতো একটা ভাল মেয়েকেও ঠকাচ্ছিল।’
বসন্ত সাহা শান্ত ভাবে বললেন, ‘আপনিও তো ঠকাতেন। পুরুষমানুষদের আপনিও তো ঠকিয়েছেন। ঠকাননি?’
‘নেভার, আমি কখনও ভালবাসার কথা বলিনি। আমি শুধু শরীরক নিয়েছি। সুনন্দবেলাতেও তাই।’
বসন্ত সাহা বললেন, ‘মেহুলকে মারলেন কেন? ওকে বিষ না খাওয়ালে হতো না?’
হৈমন্তী বলল, ‘ওটা জেলাসি। সুনন্দ ওকে বিয়ে করতে পারে ভেবে জেলাস ফিল করলাম। এখন বুঝতে পারছি, কাজটা ভুল হয়েছে। সুনন্দকে মেরে যতটা ঠিক করেছি, মেহুলকে...। মিস্টর সাহা, যে জীবন আমি ফেস করেছি, তাতে সাইকোলজিক্যালি অসুস্থ হয়ে ওঠা কি আমার পক্ষে অসম্ভব?’
হৈমন্তী দু’হাতে তার সুন্দর মুখ ঢাকল। বসন্ত সাহার মন খারাপ হয়ে গেল। তিনি উঠে পড়লেন।
(শেষ)
------------------------------------------------
যেসব বই ও পত্রিকার কাছে ঋণী—
১। বিশ্বশিল্পের রূপরেখা, লেখক মৃণাল ঘোষ।
২। চিত্রকল্প কথা পত্রিকা— পিয়ের অগুস্ত র্যনোয়ার বিষয়ক প্রবন্ধ। লেখক অসীম রেজ।
৩। নাইভস্ টু থাউজেন্ড নাইনটিন
৪। পয়জন এন্ড পয়জনিং—দেয়ার হিস্ট্রি এন্ড রোমান্স এন্ড দেয়ার ডিটেকশন ইন ক্রাইম।—এন .কে . বাগচি
৫। কবি রবির গানের গল্প—চন্দনা ব্যানার্জি
৬। রবীন্দ্রগানের স্বরলিপিকার—পীতম সেনগুপ্ত
৭। জীবনানন্দ দাশের কাব্যসমদ্র—সম্পাদনা ক্ষেত্র গুপ্ত
শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত এই উপন্যাস পড়ার জন্য ক্লিক করুন এই লিংকে