কোলকাতা সহ পশ্চিমবঙ্গে নো-এনআরসি নো-ক্যাব শ্লোগান ক্রমশ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। একের পর এক আত্মহত্যার ঘটনা আর গ্রাম শহর জুড়ে মানুষের প্যানিক বিজেপিকে অনেকটাই ব্যাকফুটে ঠেলে দিয়েছে। আপাতভাবে দেখলে এনআরসি একটি বিয়োজন প্রক্রিয়া, যা লক্ষ লক্ষ মানুষের নাম নাগরিকত্বের রেজিস্টার থেকে বাদ দেবার উদ্দেশ্যে চালু করা। অন্যদিকে সিএবি বা ক্যাব আপাতভাবে একটি সংযোজন প্রক্রিয়া। ভারতবর্ষে প্রবেশ করা বহু লক্ষ হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রীস্টান, পার্সি, জৈন, শিখ (মুসলিম বাদে), যাঁরা ধর্মীয় অত্যাচারে বাংলাদেশ, পাকিস্তান, আফগানিস্তান থেকে পালিয়ে এদেশে চলে এসেছেন, সেইসব দেশের এই সংখ্যালঘু মানুষদের নাম নাগরিকত্বের তালিকায় তুলে দেওয়ার জন্যই ক্যাব আনা হচ্ছে। প্রশ্ন হলো কেন একটি বিয়োজন এবং একটি সংযোজনী প্রক্রিয়াকে একসঙ্গে প্রত্যাখ্যান করা হচ্ছে? আসলে হিন্দুদের নাম সংযোজন করাটা এক্ষেত্রে বহিরঙ্গ। আসল উদ্দেশ্য মুসলিমদের বিতাড়ন করা। সেই জন্যেই দীর্ঘকাল ধরে তামিল উদ্বাস্তুরা এদেশে থাকা সত্ত্বেও এই বিলে তারা অন্তর্ভুক্ত হবে না। কারণ তারা শ্রীলংকা থেকে এসেছে, এবং সেটি ইসলামি দেশ নয়।
২০১৫ সালে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি শ্রী যুগল কিশোর এবং বিচারপতি শ্রী প্রহ্লাদ সিং পাটেল কেন্দ্রের স্বরাষ্ট্র দফতরকে নির্দেশ দেন ১৯৪৭ সাল থেকে পাকিস্তান থেকে আসা এবং দেশের বিভিন্ন জায়গায় অবস্থানরত, শরণার্থী/অভিবাসীর সংখ্যা রাজ্য-ভিত্তিতে পেশ করার জন্য। তদনুযায়ী ২৮ জুলাই, ২০১৫ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকরপে প্রতিমন্ত্রী কিরেন রিজিজু এই তথ্য সুপ্রিম কোর্টে পেশ করেন। সেই রাজ্যওয়ারি উদ্বাস্তু এবং অভিবাসীর সংখ্যা এই পরিসংখ্যানের সূত্র। ১৯৪৮ থেকে ১৯৫৮ সাল পর্যন্ত পশ্চিম পাকিস্তান ও পূর্ব পাকিস্তান থেকে বাস্তুচ্যুত হয়ে (৩১.১২.১৯৫৮ পর্যন্ত আপডেটেড হিসেব) আগত যে বিপুল সংখ্যক হিন্দু বাঙালি পশ্চিমবঙ্গে প্রবেশ করেছে, তাদের সংখ্যা সরকারি হিসেবেই ৩১ লক্ষ ৬১ হাজার। যেখানে আসামে ঐ সময়ে পূর্ব পাকিস্তান থেকে আসা শরণার্থীর সংখ্যা মাত্র ৪ লক্ষ ৮৭ হাজার। উল্লেখযোগ্য তথ্য হচ্ছে এই সময়ে মুসলিম অধ্যুষিত জম্মু কাশ্মীরে এই সময়কালে অনুপ্রবিষ্ট শরণার্থীর সংখ্যা মাত্র ৪৭ হাজার ২১৫ জন। এখানেই শেষ নয়। কিরেন রিজিজুর তথ্য অনুযায়ী পূর্ব পাকিস্তান থেকে ০১.০১.১৯৬৪ থেকে ২৫.০৩.১৯৭১ সময়কালে আগত ব্যক্তি সংখ্যা পশ্চিম বঙ্গে ৭ লক্ষ ৫৬ হাজার ৬১৯, আর আসামে ২ লক্ষ ১৪ হাজার ৩১৮ জন।
আরও পড়ুন, বিশ্লেষণ: এনপিআর কী, এ নিয়ে এত বিতর্ক কেন?
অর্থাৎ সরকারি হিসেবে আসামে প্রবেশ করা যত বাংলাদেশি এ দেশে প্রবেশ করেছে সব মিলিয়ে তাদের সংখ্যাটা সরকারি হিসেবে সাত লক্ষ ১ হাজার ৩১৮ আশেপাশেই থাকার কথা। পশ্চিমবঙ্গে সেই সংখ্যাটাই দাঁড়ায় ৩৯ লক্ষ ১৭ হাজার ৬১৯ (মাঝখানের ১৯৫৯ থেকে ১৯৬৩ এই পাঁচ বছরের হিসেব রিজিজু দেন নি, এবং ঐ সময়ে প্রচুর উদ্বাস্তুর আগমনের দাবিও কেউ করেন নি)। অর্থাৎ পশ্চিমবঙ্গে আসামের প্রায় ছয় গুণ বেশী অভিবাসী প্রবেশ করেছে যাদের অধিকাংশ হিন্দু। ছয়গুণ বেশি সংখ্যক অভিবাসী নিয়েও পশ্চিমবঙ্গের কিন্তু মনে হয়নি আসামের ধাঁচে একটা বিদেশি খেদা আন্দোলন এখানেও হোক বা এখানে একটা এনআরসি হওয়া খুব দরকার, না হলে রাজ্যটা গোল্লায় যাচ্ছে। আসামের বিদেশি মিথ ভেঙ্গে পড়ার পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গেও অনুপ্রবেশকারী মিথ ভেঙ্গে পড়ে। যদি ধরে নিই যে ১৯৭১ পর্যন্ত প্রবেশ করা ৩৯ লক্ষ ১৭ হাজার ৬১৯ জনের ৭১ বছরের পরিবার বৃদ্ধিতে সংখ্যাটি প্রায় এক কোটিতে পৌঁছেছে, তাহলেও দিলীপ ঘোষদের হিসেব অনুযায়ী ১৯৭১ থেকে ২০১৯ পর্যন্ত অনুপ্রবেশকারীর সংখ্যা আটচল্লিশ বছরে বেড়েছে ১ কোটি। নিরবচ্ছিন্নভাবে আটচল্লিশ বছর দৈনিক সাড়ে পাঁচশোর বেশি অনুপ্রবেশকারী বর্ডার টপকালে এই সংখ্যা হয়। সীমান্ত রক্ষার দায়িত্ব তো বিএসএফের। বিএসএফ স্বরাষ্ট্র বিভাগের অধীনে। মনে রাখতে হবে এর মধ্য বারো বছর ( বাজপেয়ীর ছয় বছর আর মোদীর ছয় বছর ) বিজেপি সরকার। মোরারজি, ভিপিসিং, গুজরালের সময় ধরলে (যার অংশীদার জনসঙ্ঘ বা বিজেপি) পনেরো বছরের বেশি। ১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চকে ভিত্তিবর্ষ মেনে নেবার পিছনে আসামের হিন্দুত্ববাদী ও জাতীয়তাবাদীদের মধ্যে প্রাথমিকভাবে এই অঙ্কই কাজ করেছে। একাত্তরের ২৫ মার্চ ভিত্তিবর্ষ ধরলে সন্তান সন্ততি সহ হিন্দুরা বেঁচে যাবে আর ছাঁকনিতে বাদ পড়বে পরে অনুপ্রবিষ্ট হওয়া মুসলিমরা। কিন্তু অঙ্কে ছোট্ট একটু ভুল ছিল।
অন্য অনেকের মতই বিজেপিও ধরেই নিয়েছিল ২৫ মার্চ ১৯৭১ পরবর্তী সময়ে যারা ভারতে প্রবেশ করেছে তারা মূলত মুসলমান। কিন্তু এটি অসমিয়া বর্ণহিন্দু আধিপত্যবাদী নেতৃত্বের ছড়ানো মিথ। সেদিন থেকে আজ পর্যন্ত যারা শরণার্থী হিসাবে অনুপ্রবিষ্ট হয়েছে তাদের মূল অংশই হিন্দু বাঙালী। যেহেতু বাঙালি, অতএব অসমীয়া জাতীয়তাবাদী নেতৃত্বের তাদের প্রতি কোনও সহানুভূতি থাকার কথা নয়, ছিলও না। আবার যেহেতু এরা মূলত হিন্দু, তাই বিজেপির এদের প্রতি দরদ উথলে পড়ার কথা, পড়েছেও। ফলে এখানে অসম গণ পরিষদ (অগপ) এবং বিজেপি দুই সখার মধ্যে স্বার্থের সংঘাত। অগপ চেয়েছে শুধুমাত্র এনআরসি প্রক্রিয়ায় অন্তত পঞ্চাশ লক্ষ মানুষকে তালিকাচ্যুত করে একদিকে আসামকে বাঙালি মুক্ত করা আর পাশাপাশি আসাম আন্দোলনের নৈতিকতা প্রমাণ করা। বিজেপি চেয়েছে একই সঙ্গে মুসলিম ও হিন্দু তালিকাচ্যুতির সংখ্যাটিকে পঞ্চাশ লক্ষের ওপরে নিয়ে যেতে। তাহলেই একদিকে প্রতিহিংসাপরায়ণ হিন্দুদের কাছে মুসলিম বিতাড়নকারী হিসাবে নিজেদের প্রতিষ্ঠা করা যাবে। পাশাপাশি হিন্দু তালিকাচ্যুতির সংখ্যাটা অনেক বেশি করে দেখিয়ে সিএবি পাশ করানোর প্রক্রিয়ার ক্ষেত্র প্রস্তুত করাও সম্ভব।
আরও পড়ুন, ‘চূড়ান্ত’ এনআরসি কেন চূড়ান্ত নয়?
কিন্তু সব সময় অঙ্কের উত্তর মেলানো কঠিন হয়। ম্যান প্রোপোজেস, গড ডিসপোজেস। কারও অনুমানের সীমানায় উনিশ লক্ষ সংখ্যাটি ছিল না। আগে থেকেই খসড়া তালিকায় ৪১ লক্ষ তালিকাচ্যুতির সুখস্বপ্নে বিভোর ছিল কেন্দ্রীয় বিজেপি। পশ্চিমবঙ্গ বিজেপির দিলীপ ঘোষরা পশ্চিমবঙ্গ থেকে দু কোটি অনুপ্রবেশ কারীদের বিতাড়ন করা হবে বলে হুঙ্কার ছাড়ছিলেন। কিন্তু উনিশ লক্ষ সব গোলমাল করে দিল। সংখ্যাটাকে না গেলা যাচ্ছে, না ওগড়ানো যাচ্ছে। সুপ্রিম কোর্টে দাখিল করা কিরেন রিজিজুর হিসেব অনুযায়ী একাত্তর সাল পর্যন্ত ভারতবর্ষে দুই পাকিস্তান থেকে আগত উদ্বাস্তু এবং অভিবাসীর সংখ্যা মিলিয়ে ১ কোটি ১৮ হাজার ১ শো ৭৩। এদের অধিকাংশই হিন্দু বাঙালি। ৪৮ বছরে সংখ্যাটা যদি পাঁচ গুণও বাড়ে তাহলেও সারা ভারতে সেই সংখ্যা দাঁড়াবে কম বেশি পাঁচ কোটি, যার মধ্যে অধিকাংশই হিন্দু। যেহেতু অন্য কোন দেশে এদেরকে পাঠানো সম্ভব নয়, কারণ কেউই তাদের সাদরে গ্রহণ করবে না, ফলে এই পাঁচ কোটির কাছাকাছি মানুষ এদেশেই থাকবেন, নাগরিকত্বের অধিকার বঞ্চিত হয়ে। ফলে ভারতবর্ষে দু'ধরনের নাগরিক শ্রেণি সৃষ্টি হবে। অনাগরিকেরা সমস্ত ধরনের নাগরিক অধিকার বঞ্চিত হয়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকবেন সারা ভারতবর্ষে। ডিটেনশান ক্যাম্প এই সংখ্যার জন্য অপ্রতুল। শুধুমাত্র প্রমাণপত্রের অভাবে তাদের এইভাবে সমস্ত অধিকার বঞ্চিত করার কুফল বর্তাবে দেশের সব কটি প্রতিষ্ঠান এর উপর, দেশের অর্থনীতির ওপর। তারা অত্যাচারের সম্মুখীন হবে, বিচার পাবে না, স্বাস্থ্যের সুযোগ, শিক্ষার সুযোগ, সমস্ত সুযোগ থেকে বঞ্চিত হবে এবং পুনরায় ক্যাম্পের জীবনে ফিরে যেতে বাধ্য হবে। তার প্রভাব পড়বে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উপর। তারা প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে উঠবে এবং ঘাড়ের উপর পাঁচ কোটি প্রতিহিংসাপরায়ণ মানুষের ভার নিয়ে হাঁটতে হবে ভারতবাসীকে।
আসাম থেকে শিক্ষা নিয়েই নো-এনআরসি-র দাবি উঠছে। কেননা আঁতুড়ঘর আসামেই কেউ এনআরসি মানছে না। তিন কোটি তেত্রিশ লক্ষ লোকের মধ্যে উনিশ লক্ষ ছয় হাজার সাতান্ন জন তালিকাচ্যুত হয়েছেন। আপাতভাবে তাঁদের বিদেশি হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। জনমানসে বিজেপি প্রদত্ত একটি হিসেব প্রায় প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেছে। বারো লক্ষ বাঙালী হিন্দু + এক লক্ষ গোর্খা ও অন্যান্য ভাষাভাষী হিন্দু + পঞ্চাশ হাজার অসমীয়া ভূমিপুত্র হিন্দু + দেড় লক্ষ মুসলমান + চার লক্ষ পুনরাবেদন না করা মানুষ যাদের সম্বন্ধে কেউ উচ্চবাচ্য করছে না = উনিশ লক্ষ। এই হিসেব তো বিজেপির দেওয়া। এই উনিশ লক্ষ ছাড়াও বাদ গিয়েছে এক লক্ষের বেশি ডি-ভোটার, এক লক্ষ ঘোষিত বিদেশি, আরো প্রায় এক লক্ষ মানুষ যাদের কেস ট্রাইব্যুনালে ঝুলে রয়েছে (অর্থাৎ পেন্ডিং)। এরা কেউ বা এদের পরিবারের কেউ ট্রাইবুনাল থেকে ক্লিয়ারেন্স না পেলে নতুনভাবে নিজেকে ভারতীয় প্রমাণ করার সুযোগ পাবেন না, আপাতত সেরকমই ঠিক হয়েছে। কম করে দশ লক্ষ লোক। এর বাইরেও রয়েছে লক্ষ লক্ষ মানুষ যাদের ভারতীয়ত্ব প্রমাণ করার মত কোনো নথি নেই, তারা সংগ্রহ করে রাখেন নি, অথবা সেগুলি নষ্ট হয়ে গেছে। তারা আবেদনই করতে পারেন নি। এদেরই একটা অংশ জীবনতৃষ্ণায় ছড়িয়ে পড়েছে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে। অথবা হতেও পারে এদের মধ্যেই কিছু মানুষ পেটের দায়ে, অত্যাচারের ভয়ে, ওদেশ থেকে এদেশে চলে এসেছেন, এদেশকে স্বর্গরাজ্য ভেবে। এরা আনডিসক্লোজড রিফিউজি, ইমিগ্রান্টস। এরকম মানুষের সংখ্যা কেউ বলছেন কুড়ি লক্ষ, কেউ বলছেন পঞ্চাশ, ষাট লক্ষ। যার যেমন মুখে আসে। ফলে আজকে যে বারবার উনিশ লক্ষের কথা বলা হচ্ছে, এটি একটি অর্থহীন সংখ্যা।
আরও পড়ুন, হরিয়ানায় এনআরসি: বাস্তব প্রেক্ষিতগুলি কী কী?
প্রকৃত সংখ্যাটি যাই হোক না কেন, এই লক্ষ লক্ষ অস্তিত্বহীন মানুষের মূল অংশটাই আসলে ভারতীয়, শুধুমাত্র প্রমাণপত্রের অভাবে তাঁরা হয় আবেদন করতে পারেননি, অথবা তাঁদের সেই নথি প্রত্যাখ্যাত হয়েছে। এই দেড় লক্ষ মুসলিম অবৈধ অনুপ্রবেশকারী, যারা এবার ট্রাইব্যুনালে আবেদন করবেন, এবং তার এক তৃতীয়াংশও যদি ভারতীয় হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠা করতে পারেন, তবে সংখ্যাটা দাঁড়ায় এক লক্ষ। সেই কারণেই আসামে মুসলিম সংগঠনগুলিই এনআরসির বিরোধিতায় সোচ্চার নয়। সেই কারণেই বিজেপি চিৎকার করছে। কেননা মাত্র এক লক্ষ মুসলিম চিহ্নিতকরণের জন্য এই রাজসূয় যজ্ঞের আয়োজন করা হয়নি। ফলে বিজেপি ঘোষণা করতে বাধ্য যে এই এনআরসি আমরা মানি না। যাঁরা বিজেপি বিরোধী, তারাও এই সংখ্যাটা নির্বিবাদে মেনে নিচ্ছেন, তার কারণ এটা তাদের দেখাতে সুবিধে হচ্ছে যে বিজেপি হিন্দুর দল হয়েও হিন্দুদের স্বার্থ রক্ষা করতে ব্যর্থ। ভারতবর্ষে বিজেপির লেজুড় দল বা সংগঠন ছাড়া কেউই এনআরসিকে মেনে নিচ্ছে না। ফলে বিজেপিকে নতুন করে ক্যাব এর টোপ দিতে হচ্ছে। এনআরসি তে যে হিন্দুরা বাদ যাচ্ছে তাদের ক্যাব দিয়ে নাগরিক করে নেওয়া হবে। তাহলে নাগরিকপঞ্জী কাদের জন্য, মুসলিমদের? বিজেপি জানে ক্যাব পাস হলে মামলা হবেই। এবং এই মুহূর্তে মরিয়া বিজেপিও তাই চায়। মানুষও মরিয়া। তাদের মুখেও নো-ক্যাব।
মনে রাখতে হবে বিজেপির পিতা আরএসএস এর শুরুর অ্যাজেন্ডা হিন্দুরাষ্ট্র । বাবাসাহেব রচিত সংবিধানের বদলে মনুস্মৃতি আশ্রিত সংবিধানের প্রয়োগে তারা হিন্দু তালিবানি রাজ কায়েম করতে চাইছে। আরএসএস ভারতের তেরঙ্গা জাতীয় পতাকা মানেনি। প্রথম থেকে তারা তেরঙ্গার বদলে ভগোয়া ধ্বজকে জাতীয় পতাকা করার দাবী তুলেছিল। একদল মারাঠি ব্রাহ্মণদের সঙ্গে হাত মিলিয়েছিল বর্ণহিন্দু বাঙালী শ্যামাপ্রসাদ। এদের প্রথম থেকে অভীপ্সা হলো এক দেশ, এক জাতি, এক ভাষা, এক দল। এসবের সঙ্গে এক প্রেসিডেন্ট এবং এক ধর্ম হলেই ষোলকলা পূর্ণ হয়।
(পার্থপ্রতিম মৈত্র সমাজকর্মী, মতামত ব্যক্তিগত)