কসবার দেবাঞ্জন, সঙ্গে নেতা-মন্ত্রীদের ছবি, চলছে দায় ঝেড়ে ফেলার রেওয়াজ

গত এক বছর ধরে একাধিক অনুষ্ঠানে বীরদর্পে হাজির থাকলেন 'নায়ক' কেউ টের পেল না আসলে সে কে!

গত এক বছর ধরে একাধিক অনুষ্ঠানে বীরদর্পে হাজির থাকলেন 'নায়ক' কেউ টের পেল না আসলে সে কে!

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
kasba fake vaccine case debanjan deb-s picture with firhad subrata

গত এক বছর ধরে একাধিক অনুষ্ঠানে বীরদর্পে হাজির থাকলেন 'নায়ক' কেউ টের পেল না আসলে সে কে!

"কে কখন পাশে দাঁড়িয়ে ছবি তুলে নেয়, সেই দায় কী আমার।" দেশ বা রাজ্য-রাজনীতিতে এটা বহুল প্রচলিত রীতি-রেওয়াজ। তাঁর ব্যতিক্রম হল না কসবায় ফেক ভ্যাকসিনের নায়কের ক্ষেত্রেও। কলকাতা পুরসভার প্রাক্তন মেয়র তথা রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় থেকে ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের প্রাক্তন সর্বভারতীয় সভাপতি তথা রাজ্য শাখার সম্পাদক শান্তনু সেনের ক্ষেত্রেও একই ঘটনা প্রত্যক্ষ করা গিয়েছে। গত এক বছর ধরে একাধিক অনুষ্ঠানে বীরদর্পে হাজির থাকলেন 'নায়ক' কেউ টের পেল না আসলে সে কে!

Advertisment

সারদা, রোজভ্যালি, প্রয়াগ-সহ একাধিক চিটফান্ডের কেলেঙ্কারি নিয়ে হইচই শুরু হতেই একাধিক মন্ত্রী, নেতাদের সঙ্গে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে চিটফান্ড কর্তাদের সঙ্গে ছবি প্রকাশ হতে থাকে। শুধু ছবি প্রকাশ হওয়া নয়, সংশ্লিষ্ট চিটফান্ড সংস্থায় টাকা রাখার জন্য মঞ্চে দাঁড়িয়ে প্রকাশ্য যে বক্তব্যও রেখেছেন নেতাদের একাংশ। তবু তাঁদের নাকি জানাই ছিল না এটা কোনও বেআইনি চিটফান্ড সংস্থা। সাধারণের টাকা হরফ করার জন্যই জন্ম নিয়েছিল ওইসব বেআইনি আর্থিক সংস্থা। মানুষ তা হারে হারে টের পেয়েছে। সুদীপ্ত সেন বা গৌতম কুন্ডুদের তাঁরা চিনতেনও না, এমনই ছিল তাঁদের বক্তব্য। সেই ঘটনার রেওয়াজ একইভাবে ঘটে চলেছে।

আরও পড়ুন- অসুস্থ Mimi Chakraborty, কসবায় ভুয়ো ভ্যাকসিন নেওয়ার জের?

শুধু পাশে দাঁড়িয়ে ছবি তুলেই ক্ষান্ত থাকেননি ভুয়ো টীকারকরণের পান্ডা দেবাঞ্জন দেব। দেখা গিয়েছে, গত এক বছর করোনা সংক্রান্ত একাধিক অনুষ্ঠানের মুখ্য় ভূমিকায় ছিলেন তিনি। যাদবপুরের অভিনেত্রী সাংসদ মিমি চক্রবর্তী টীকারণের সার্টিফিকেটের খেয়াল না করলে এই বেআইনি কারবার চলতেই থাকত, তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। দিনের পর দিন ভুয়ো ভ্যাকসিনের নায়ক যেভাবে নিজে আইএএস সেজে নেতা-মন্ত্রীদের অনুষ্ঠানে যাতায়াত করেছেন, তা কী খুব সহজসাধ্য বিষয়? একজন সাধারণ মানুষ কি সহজে পৌঁছাতে পারে যে কোনও ভিভিআইপের কাছে? এই প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক নয় কী।

Advertisment

আরও পড়ুন- Fake Vaccination Case: হর্ষবর্ধনকে নালিশ শুভেন্দুর, তদন্তে সিট গঠন লালবাজারের

ছবির পোজ, অনুষ্ঠানে মাতব্বরির পর আবার পাথরের ফলকেও নাম খোদাই করতে ছাড়েননি দেবাঞ্জন। তা আবার কলকাতা পুরসভা থেকে মাত্র ১কিলোমিটারের মধ্য়ে। তালতলায় সেই ফলকে তাঁর নামের পাশে জ্বলজ্বল করেছে নেতা-মন্ত্রীদের নাম। কেউ তো বলছেন তিনি সেই অনুষ্ঠানের কথাই জানেন না। কিন্তু কারও মনে প্রশ্ন ওঠেনি। শেষমেশ পাথরের ফলক উপড়ে দিয়ে প্রায়শ্চিত্ত করতে হল।

টিভি বা ডিজিট্যাল মিডিয়া আসার পর রাজনৈতিক নেতাদের একাংশের মন্তব্য করা বন্ধ হয়েছে, বক্তব্য বিকৃত করে পরিবেশন করা হয়েছে। বাম আমলেও দেখা গিয়েছে তাবড় নেতারা বক্তব্য রাখার পর বলতেন সংবাদমাধ্যম মন্তব্য বিকৃত করেছে। তিনি সেটা বলেননি। ছবির ক্ষেত্রে বলা শুরু হল সুপার ইমপোজড। ভিডিও-র ক্ষেত্রে ফেক ভিডিও। কিন্তু সব ক্ষেত্রেই যে তা নয় এটাও ভাবতে হবে।

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন