Advertisment

শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত রাজনীতির সীমানা ছাড়িয়ে

ফাঁকা মাঠে আখাম্বা রাজপ্রাসাদ বানিয়ে তার আগে সুপার স্পেশালিটি জুড়ে দিলেই মানুষের চিকিৎসা হয় না। চিকিৎসক লাগে, লাগে যন্ত্রপাতি, প্রয়োজন ওষুধের। সেইকারণেই এই প্রখর গ্রীষ্মে পথে নামছেন তরুণ থেকে প্রবীণ চিকিৎসকেরা।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

আন্দোলন জারি রাখল এনআরএসের ডাক্তাররা

সংসদীয় গণতন্ত্রের আঙিনায় একটা আলোচনা প্রায়ই শোনা যায় যে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ঘরে বসে নাকি রাজনীতি হয় না। কয়েকটি বিশেষ প্রকৃতির রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় একথা সত্যি। বিশাল জনসভায় নেতা যখন মাঠের প্রতিটি শুকনো ঘাসে আগুন জ্বালান তাঁর ভাষণে, শ্রোতাদের প্রতিক্রিয়া তখন যেমন হয়, টেলিভিশনের মাধ্যমে শোনা শব্দমালায় অবশ্যই সেই ধার থাকে না। বর্তমানের জননেতার প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষ উস্কানিতে যখন অতীতের কোন রাজনৈতিক নেতা বা বিদ্বজ্জনের মূর্তি চুরমার হয়, তখন তাঁর সমর্থদের মধ্যে যে উত্তেজনা থাকে, বৈঠকখানায় সেই নিয়ে গলা চড়ানোয় ততটা জোশ থাকে না। কিন্তু আক্ষরিক অর্থে যদি ভাবা হয়, তাহলে সংসদীয় গণতন্ত্রে হিংসার কোন স্থান নেই। মোটামুটিভাবে পৃথিবীর সব দেশেই সংসদীয় গণতন্ত্রের গল্পকথা জারি আছে। সেখানে বহু মানুষের মতদানে অল্প কিছু প্রতিনিধি নির্বাচিত হন। অর্থাৎ সভ্য মানুষ হাতাহাতি না করে তাদের মতামত দিয়ে নেতা নির্বাচন করেন। নেতারা তারপর জায়গা খুঁজে নেন শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ঘরে। উন্নত দেশ হলে জনগণও মোটের ওপর সেই সুবিধে পান। কিন্তু বাকি দেশগুলোতে সাধারণ মানুষের সে সৌভাগ্য হয় না। ফলে সেই সমস্ত উন্নয়নশীল কিংবা পিছিয়ে থাকা দেশের লক্ষ কোটি মানুষ কষ্টে থাকেন। ইতিহাসের সময়রেখায় মাঝে মধ্যে বৃষ্টি হয়ে আসেন দু-একজন জননেতা বা নেত্রী। সেই দেশ কিছুটা এগোয়। কিন্তু সংসদীয় গণতন্ত্রে সেই নটেগাছও একসময় ফুরোয়। অন্য রাষ্ট্রনায়ক আসেন। বিভিন্ন দেশে এইভাবে সংসদীয় গণতন্ত্র বিভিন্ন রূপে বিভিন্ন রঙে চালু থাকে। এর কোনও আঙ্কিক নিয়ম হয় না। ঠিক-ভুল, ভালো-মন্দ, সৎ-অসৎ সব কিছু মিলে মিশে থাকে সংসদীয় গণতন্ত্রের মুড়িঘণ্টে। সেখানে কিছু মানুষ ক্ষমতা দখল করার পর এসি ঘরে বসে সিদ্ধান্ত নেন, আর তার ফল ভোগ করেন ঠান্ডা-গরম সহ্য করা সাধারণ মানুষ। এটুকু অঙ্কে কোন গোলমাল নেই।

Advertisment

আরও পড়ুন, চিকিৎসায় কর্মবিরতি, মানুষের হয়রানি- কয়েকটি জরুরি প্রসঙ্গ

অর্থাৎ চিরন্তন হ্যাভ আর হ্যাভ-নটস এর গল্পের মত বিষয়টাকে একটু গোদা করে নিলে আজকের পশ্চিমবঙ্গে ব্যাপারটা এসি আর নন-এসি। ভারতেও তাই। কাজাখস্থানও এর থেকে আলাদা নয়, সুদানও নয়। তাই পশ্চিমবঙ্গের আলোচনাতেই ফিরে আসা যাক। সংসদীয় গণতন্ত্রে ভোট দেবেন অসহায় মানুষেরা। আর এই নন-এসি মানুষেরা বাঁধা থাকেন ক্ষমতাশালী মানুষদের হাতে। ফলে কোনও এক রূপে যখন ক্ষমতার হাতবদল হয়, তখন তার মাধ্যম এই অসহায় মানুষগুলো। ঠিক যেমন পরিবাহী তারের মধ্যে দিয়ে বিদ্যুৎপ্রবাহের কারণ বৈদ্যুতিন কণাদের একটু একটু করে সরে যাওয়া। এই মানুষগুলোকেও সরতে হয় এক মত থেকে আরেক মতে। এই মানুষগুলোই চিকিৎসা করান সরকারি হাসপাতালে, জাত ধর্ম ভুলে। মুশকিল হল দ্বান্দ্বিক দুটো মতের পার্থক্য খুব পরিষ্কার নয়। উদাহরণস্বরূপ ২০০৯-১১ বামফ্রন্ট থেকে তৃণমূলে পরিবর্তন এবং বর্তমানে ২০১৯-২১ তৃণমূল থেকে বিজেপিতে ক্ষমতা হস্তান্তরের সম্ভাবনা (এখনও কেউ জানে না ফল কী হবে)।

আরও পড়ুন, চিকিৎসক আন্দোলন নিয়ে অন্তর্বর্তী আদেশ দিল না কলকাতা হাইকোর্ট

বদল কিন্তু খুব বেশি নয়, তার কারণ শেষের দিকের বামফ্রন্ট, আজকের দিনের তৃণমূল আর ভবিষ্যতের বিজেপির হাড়গোড় একই রক্তমাংসে গড়া মানুষদের নিয়ে। ১৯৭৭ এ ক্ষমতায় আসা বামফ্রন্ট সরকার অবশ্যই অনেক স্বপ্ন ফেরি করেছিল। কাজও হয়েছিল কিছুটা। কিন্তু নয়ের দশকের পর থেকে নীতির বদল হতে শুরু হল। গ্রাম দিয়ে শহর ঘেরার বদলে বাড়তে থাকল নগর সভ্যতা। কিন্তু সেভাবে শিল্প এলো না। তাই সেই সময় থেকেই শুরু হল বাসস্থান নির্মাণ শিল্প, বা ফ্ল্যাট সংস্কৃতি। পুঁজি এলো না কোথাও, কিন্তু কোন এক স্বপ্ন দেখে মানুষ ছুটল শহরের দিকে। আর জনসংখ্যা বাড়ায় জমি টুকরো হতে হতে ঘেঁটে গেল প্রাগৈতিহাসিক কৃষিকাজ। এক বাহুবলী ইঁট-বালি-সুড়কি কেন্দ্রিক শ্রেণী তৈরি হল এই বঙ্গে। তাদের সঠিক কোন কাজ নেই। সকাল থেকে পাড়ার ক্লাবে আড্ডা, মাঝে মাঝে সিমেন্টের বস্তার হিসেব, পাড়ায় নতুন কোনও বাড়ি উঠলে সেখানে বেশি দামে কাঁচামাল বিক্রি, সন্ধ্যায় ক্লাবের টেলিভিশনে খেলা দেখতে দেখতে সামান্য সুরাপান। ভেবে দেখুন, এতে দোষের কিছু নেই। এরকম জীবনই যাপন করেন অস্ট্রেলিয়া বা কানাডার অনেক মানুষ। শুধু গুণ্ডামো-টুকু বাদ দিয়ে। সেই দেশগুলোতে মানুষ এতো কম, সম্পদ এতো বেশি, এবং অর্থনীতির যা গতিপ্রকৃতি তাতে সরকারের সাহায্য নিয়ে প্রায় কিছু না করেও বেঁচে থাকা যায়। অথবা অল্প কাজ করেও রোজগারের সুযোগ থাকে। পশ্চিমবঙ্গে বিষয়টা সামান্য অন্যরকম। সিন্ডিকেট রাজত্বের নব্বুইয়ের দশকের যুবকেরা ধীরে ধীরে প্রৌঢ় হলেন। তাদের ছেলে মেয়ে বড় হল। কিন্তু সেভাবে এই রাজ্যে কাজের ক্ষেত্র তৈরি হল না। মানুষের হাতে সময় বাড়ল, গ্রাম থেকে আরও বেশি মানুষ এলো শহরের দিকে, পরিকল্পনাহীন কাল্পনিক উন্নয়নের স্বপ্ন দেখে। এদের মধ্যে বিল্ডিং মেটিরিয়াল বেচে কয়েকজন সচ্ছল হলেন, কিন্তু বাকি সকলেই চিকিৎসা করাতে বাধ্য থাকলেন সরকারি হাসপাতালে।

আরও পড়ুন, ‘মমতা, প্লিজ একবার এনআরএসে আসুন’, করজোড়ে অনুরোধ অপর্ণা সেনের

বাম গিয়ে যখন তৃণমূল ক্ষমতায় এলো, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে তখন বহু বামপন্থী মানুষ। কিন্তু যেটা আড়ালে থেকে গেল, তা হল বামেদের গোলমেলে মাঝের সারির সুযোগসন্ধানী নেতাকর্মীরা কিন্তু তৃণমূলেও ঠিক একই কাজ করতে লাগলেন। তার প্রমাণ বিভিন্ন প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্য হয়ে উঠল মুখ্যমন্ত্রীর বকুনি। সরাসরি তিনি নিজের দলের নেতানেত্রীদের অসততার কথা বলতে লাগলেন। কিন্তু সেই মুখ্যমন্ত্রীর দাগিয়ে দেওয়া অসৎ জনপ্রতিনিধিরাই তো রাজ্য চালায়। ফলে কাজের ক্ষেত্রে বিপদে পড়তে শুরু করল রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা। চারদিক থেকে বিভিন্ন চাপ। সেই চাপ বামফ্রন্ট আমলের থেকে অনেক আলাদা। কারণ সেখানে দলের মধ্যে বিভিন্ন উচ্চতার নেতানেত্রী ছিলেন, যারা দলের কাঠামো মেনে চলতেন। এর ফলে দলদাস এক শ্রেণির সৃষ্টি হয়েছিল তা বলাই বাহুল্য। কিন্তু তৃণমূলের ক্ষেত্রে তো একজনই নেত্রী। ফলে আইনশৃঙ্খলার সার্বিক অবনতি কিন্তু তৃণমূল সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই লক্ষ্য করা যাচ্ছিল।

আরও পড়ুন, NRS doctors’ protest Live: এনআরএসে ১০৪ জন চিকিৎসকের গণইস্তফা

তৃণমূলের যারা রত্ন, যাদের উৎপত্তি বাম আমলে, শহরে যারা ইঁট-বালি-সুড়কি দিয়ে গড়া সিন্ডিকেট আর গ্রামে পঞ্চায়েত-প্রধান নামক জমিদার, তারা অপেক্ষায় ছিল আর একটা সুযোগের। বিজেপি সেই জায়গাটা তৈরি করতে পারল। বামফ্রন্টের নিষ্ক্রিয়তায় গত তিন বছর ধরে বিরোধী দলের জায়গাটা স্বাভাবিক নিয়মেই চলে গেল বিজেপির দিকে, আর সঙ্গে রাজনীতির কারবারিরা আর একটা যাওয়ার জায়গা পেল। রাজনীতিই যখন বৃত্তি, সেখানে ভাগযোগ যারা করবেন সেই মানুষগুলোই যখন এক, তখন সম্পদ আহরণে কিছুটা মিলিজুলি আর কিছুটা লড়াই। সামাজিক নিয়মেই এর পুরোটা কোন নেতানেত্রীর দখলে থাকে না। বিষয়টা যখন গড়ায় তখন তার মধ্যে অনেক অনিশ্চয়তা থাকে। আর সেই অনিশ্চয়তার সৃষ্টি হয় এক টুকরো দুর্ঘটনা থেকে। এবারের দুর্ঘটনা সেই সরকারি হাসপাতালে, যেখানে দ্বন্দ্ব নিম্নবিত্ত চিকিৎসা প্রার্থী সাধারণ মানুষের সঙ্গে দিনরাত জেগে কাজ করা দক্ষ চিকিৎসকদের। রাজনীতির নেপোরা উৎসুক এই সুযোগে দই মারবেন বলে।

আরও পড়ুন, ডাক্তারদের হয়ে পথে মমতার ভাইপো, অস্বস্তি আরও বাড়ল তৃণমূলের

এরকম গোলমাল আগেও ঘটেছে, কিন্তু এবারের ফুলকি চরম গ্রীষ্মে খড়ের গাদা ছুঁয়ে ফেলেছে খুব সহজে। ক্ষমতায় আসার অব্যবহিত পরেই আমরিতে অগ্নিকাণ্ডের সময়ে যেভাবে পুরো বিষয়টা সামলেছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী, এবার আর সেরকম হল না। কারণ তারপর আট বছর তিনি গদিতে। তাই সোজা হেঁটে গিয়ে তরুণ তরুণীদের কাঁধে হাত রেখে “কাজে নেমে আয় বাবা-মা-রা, তোরাই তো আমাদের রাজ্যকে বাঁচিয়ে রেখেছিস” গোছের কথা বলতে পারলেন না মুখ্যমন্ত্রী। হয়ত বা বিরোধী রাজনৈতিক বুদ্ধির কাছে হার মানলেন দ্বিতীয় ইনিংসের অসহিষ্ণু নেত্রী। অমায়িক বক্তব্য তাই পথ খুঁজে পেল না গলা ফাটানো মাইক-আশ্রিত চিৎকারের ডেসিবেল-এ। ফল হল বিপরীত। চিকিৎসকদের সংগঠিত প্রতিবাদ এখন অনেক বেশি দৃঢ়। অন্যদিকে ভীষণ ধূর্ততার সঙ্গে ডানপন্থী দেশপ্রেমিক দল অন্তর্জালে ছড়িয়ে দিতে শুরু করল যে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের হাতে গুরুতর আহত সংখ্যাগুরু দলের চিকিৎসকের তুবড়ে যাওয়া খুলির ছবি। অর্থাৎ বিপদ বাড়ানোর জন্যে পশ্চিমবঙ্গে আগামী দিনের মূল রাজনৈতিক দল একেবারে সরাসরি মাঠে নামিয়ে দিল বিভাজনের রাজনীতি। রাজ্যের ভীষণ খারাপ স্বাস্থ্য পরিকাঠামো নিয়ে কোন আলোচনা নেই। নিম্নবিত্ত মানুষদের চিকিৎসার উন্নয়ন নিয়ে কোন বক্তব্য নেই। বেসরকারি হাসপাতালে সচ্ছল মধ্যবিত্ত মানুষের হয়রানির যে সীমা নেই, তা নিয়েও বিবৃতি অনুপস্থিত। সরকারি চিকিৎসকরা যে ঢাল নেই তরোয়াল নেই নিধিরাম সর্দার, আর বেসরকারি চিকিৎসাক্ষেত্রে তাদের যে প্রতিদিন বিক্রি হতে হচ্ছে নীতিহীনতার মুদ্রায়, সে নিয়ে কোন প্রতিবাদ নেই। রাজ্যের এই পরিস্থিতিতে বিজেপি তাই দায়িত্বশীল বিরোধীর ভূমিকায় অকৃতকার্য। তৃণমূল বিপাকে পড়লে বিজেপির ভোট বাড়বে সন্দেহ নেই, কিন্তু রাজ্য রাজনীতির গুণগত মান যে দিনে দিনে আরও খারাপের দিকে যাবে সেই ভয়টা থেকেই যাচ্ছে।

আরও পড়ুন, কেন হাসপাতালের আউটডোর বন্ধ রাখতেই হল?

তবে আশার কথা কিছুটা হলেও আছে। শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ঘরে কাজ করা চিকিৎসকরা কিন্তু এখনও পর্যন্ত নিজেদের আন্দোলনে কাউকে ভাগ বসাতে দেন নি। বারবার বলার চেষ্টা করেছেন যে হাসপাতালের নীল-সাদা ঝকমকানি নয়, নিম্নবিত্তদের সেবায় তারা চান পরিকাঠামোর উন্নতি। ফাঁকা মাঠে আখাম্বা রাজপ্রাসাদ বানিয়ে তার আগে সুপার স্পেশালিটি জুড়ে দিলেই মানুষের চিকিৎসা হয় না। চিকিৎসক লাগে, লাগে যন্ত্রপাতি, প্রয়োজন ওষুধের। সেইকারণেই এই প্রখর গ্রীষ্মে পথে নামছেন তরুণ থেকে প্রবীণ চিকিৎসকেরা। ব্যক্তিকেন্দ্রিক উচ্চ-মধ্যবিত্ত চরিত্র ছেড়ে তারা পথে নামছেন দল বেঁধে। কদিন আগেই মাধ্যমিক কিংবা উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় ভালো ফল করা পড়ুয়ারা যখন চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন দেখছিলেন, তখন নিজেদের অসহায়তার কথা প্রকাশ করেছিলেন বহু চিকিৎসক।

এ রাজ্যে এই পেশা যে আজ ঠিক কী ধরনের বিপদের মুখোমুখি তা পরিষ্কার বুঝতে পারছেন চিকিৎসককুল। আশার কথা যে এ রাজ্যের ভালো হাসপাতালে পড়ুয়াদের মধ্যে বামফ্রন্ট, কংগ্রেস, তৃণমূল কিংবা বিজেপি খুব বেশি শিকড় গজাতে পারে নি। নিরপেক্ষ মতামতের উচ্চশিক্ষিত মানুষেরাই সাধারণভাবে এ রাজ্যের চিকিৎসক। এই আন্দোলনে তাই তৃণমূল হয়রান, বিজেপিও খুব জায়গা পাচ্ছে না। শুক্রবার বিকেলে শিয়ালদার কাছের সরকারি হাসপাতাল থেকে যে মিছিল ঘামে ভিজে পথ হাঁটবে সেখানে সিপিএম কিংবা কংগ্রেসও নেই। আছেন এ রাজ্যের প্রগতিশীল, শিক্ষিত এবং সর্বোপরি সচেতন কিছু মানুষ। চিকিৎসকদের সঙ্গে যোগ দেবেন সমাজের বিভিন্ন পেশার নাগরিক। আশা করা যাক এই মিছিলে ঢোকার চেষ্টা করবেন না সুযোগ সন্ধানী, রাজনীতিকে বৃত্তি করা নেতানেত্রী। পেশিবহুল মানুষেরা এই গরমে বিশ্রাম নিন শীতাতপনিয়ন্ত্রিত ঘরে। এই মিছিল লক্ষ্য করে মিসাইল না ছুঁড়লেও আপনাদের রাজনীতি দৌড়বে। আর আশা করতে ক্ষতি কী? ভাবাই যাক না ১৪ই জুন ভ্যাপসা বিকেলের মিছিল পশ্চিমবঙ্গে জন্ম দেবে এক সহিষ্ণু রাজনীতির, যা এ রাজ্যে বেশ কয়েক দশক ধরে অনুপস্থিত।

(লেখক ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিস্টিক্যাল ইন্সটিটিউটের অধ্যাপক, মতামত ব্যক্তিগত।)

NRS
Advertisment