সারদা কাণ্ডে এক আইপিএস আধিকারিককে দীর্ঘ দিন ধরে তন্ন তন্ন করেও খুঁজে পাচ্ছে না সিবিআই। ঠিক তখনই নারদ কাণ্ডে সিবিআই গ্রেপ্তার করল অন্য এক আইপিএসকে। সূত্রের খবর, নারদে অভিযুক্ত মুকুল রায়ের সঙ্গে এসএমএইচ মির্জাকে মুখোমুখি বসিয়ে জিজ্ঞাসাবাদও করেছে সিবিআই। রাজীব কুমারের জামিনের মামলা নিম্ন আদালত ঘুরে এখন চলছে হাইকোর্টে। এরই মধ্য়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর সঙ্গে 'রাজ্যের দাবি-দাওয়া' নিয়ে বৈঠক করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এখনও কোনও খোঁজ নেই কলকাতা পুলিশের প্রাক্তন পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমারের। সিবিআইয়ের নোটিশকে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে মামলা করেছিলেন তিনি। সেই মামলা চলেছে অনেক দিন ধরে। তারপর রাজীব কুমার বারাসত আদালতে আগাম জামিনের জন্য আবেদন করেন। সেখান থেকে মামলা চলে আসে আলিপুর আদালতে। সেখানে জামিনের আবেদন খারিজ হয়ে যাওয়ায় এখন মামলা চলছে হাইকোর্টে। সোমবার মামলার রায়দানের সম্ভাবনা রয়েছে।
আরও পড়ুন- ‘গণশক্তি পড়ে জেনেছিলাম, বাবা রাজ্য সম্পাদক হয়েছেন’
কিন্তু মূল প্রশ্ন, রাজীব কুমারের বর্তমান ঠিকানা কোথায়? কোথায় রয়েছেন এডিজি সিআইডি, রাজ্য প্রশাসনের শীর্ষ কর্তারা এখনও তা জানেন না! তবে এই দুঁদে গোয়েন্দাকে খোঁজার জন্য সিবিআই যেভাবে হানা দিয়েছে বিভিন্ন মহলে তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। যেভাবে একদল মিডিয়া পিছন পিছন গিয়ে তল্লাশির 'লাইভ' করছে সেক্ষেত্রে এমন অভিজ্ঞ আইপিএস কি সেখানে বসে থাকবেন ধরা দেওয়ার জন্য! একইসঙ্গে দেশের গুরুত্বপূর্ণ তদন্তকারী সংস্থা কেন এত দিনেও রাজ্যের গোয়েন্দা কর্তাকে খুঁজে পাচ্ছে না সেই প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক বলেই মনে করে অভিজ্ঞ মহল। তাহলে কোন পথে সারদা তদন্ত? এই প্রশ্ন এখন রাজনৈতিক মহল থেকে সাধারণ মানুষের মধ্যে।
আরও পড়ুন- পুজো উদ্বোধনে অমিত শাহ, উদ্যোক্তাদের দ্বন্দ্ব চরমে
রাজীব কুমারকে খোঁজার সময়ই দিল্লি গিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একান্ত বৈঠক সেরেছেন প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে। তাঁদের বৈঠক নিয়ে কংগ্রেস ও সিপিএম টিপ্পনি কাটতে ছাড়েনি। অতীতের মত ফের 'গোপন রফা'র অভিযোগ এনেছে বাম-কংগ্রেস। আদৌ রাজীব মামলার কি ঘটতে চলেছে তা নিয়ে রাজ্যের মানুষ অপেক্ষা করছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত কোনও হদিশ নেই দুঁদে আইপিএসের। রাজীব কাণ্ড নিয়ে আগের মত আর সেই হুঙ্কারও শোনা যাচ্ছে না রাজ্যের বিজেপি নেতৃত্বের। এর কারণ নিয়েও ভাবতে শুরু করেছেন রাজনীতির কারবারিরা। ফের প্রশ্ন তাহলে কী শীর্ষ নেতৃত্বের কোনও নতুন নির্দেষ এসেছে রাজ্যে! এরই মধ্যে নাড়াচাড়া দিয়ে উঠল নারদ কাণ্ড। সিজিও কমপ্লেক্সের কর্মকাণ্ডের ঝড় আছড়ে পড়েছে নিজাম প্যালেসে।
ইতিমধ্যে দিল্লি থেকে আসা সিবিআই অফিসাররাও ফিরে গিয়েছেন। আপাতত তল্লাশির কাজও থমকে গিয়েছে। সিবিআই অপেক্ষা করছে সোমবারের হাইকোর্টের রায়ের ওপর। দুই বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ এই রায় দেবে। এরপরই দুর্গাপুজোর ছুটি শুরু হয়ে যাবে আদালতে। বিশেষজ্ঞ মহল মনে করছে, যদি আদালতের রায়ের জন্য অপেক্ষা করে সিবিআই তাহলে রাজীব কুমারকে হাতে পেতে দীর্ঘ সময় লেগে যাতে পারে। তাই নানা মহলে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে তাহলে সারদা চিট ফান্ড তদন্ত কী ফের গতি হারাবে? আবার থমকে গিয়ে সাময়িক বিরতি নেবে তদন্ত প্রক্রিয়া! তবে এই অস্ত্র পুরোপুরি ভোণতা হওয়ারও সম্ভাবনা দেখছেন না রাজনীতির কারবারিরা। সময়ই তার জবাব দেবে।