Nabanna Abhijan: জলকামান, নাগারে কাঁদানে গ্যাসের সেল ফাটানো, ইট-পাথর বৃষ্টি... নবান্ন অভিযানে ধুন্ধুমার-কাণ্ড দিনভর। আরজি করের তরুণী চিকিৎসকের নৃশংস খুনে দোষীদের বিচারের দাবিতে নবান্ন অভিযানের ডাক দিয়েছিল পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র সমাজ। নবান্ন অভিযান আটকাতে শুধু রাস্তা খুঁড়ে ব্যারিকেড বা স্পট লোহা ঝালাই নয়, ব্যবহার করা হয়েছে কন্টেনারও। মঙ্গলবার আন্দোলনকারীদের থামাতে নাজেহাল হতে হয়েছে কয়েক হাজার পুলিশকে।
পুলিশের মাথার ওপর চাপ ছিল আন্দোলন নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে। বিক্ষোভকারীদের অনেকের হাতে ছিল জাতীয় পতাকা, তবে কেউ কেউ জানিয়েছেন তাঁরা নিপাট সাধারণ মানুষ, কোনও রাজনীতির সঙ্গে তাঁরা যুক্ত নয়। কলকাতায় এদিন রীতিমতো বনধের চেহারা বজরে আসে। এর আগে বাম, বিজেপি নবান্ন অভিযান করেছে। সেক্ষেত্রে নির্দিষ্ট মিছিল বা দিকগুলিতে নেতৃত্বের দায়িত্বও নির্দিষ্ট থাকে। আগেভাগে রুট-সহ তা ঘোষণাও করে দেয় সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক দল। গতকাল, সোমবার কলকাতা প্রেস ক্লাবে পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র সমাজের ৭ প্রতিনিধি সাংবাদিক বৈঠকের মঞ্চে হাজির ছিলেন। তাঁদের কয়েকজনকে সোমবার রাতেই পুলিশ গ্রেফতার করেছে। তাছাড়া নির্দিষ্টভাবে মিছিলের নেতৃত্ব দিতেও সেভাবে অন্যদের দেখা যায়নি।
এদিন বারে বারে দেখা গিয়েছে পুলিশ এগিয়েছে, আবার পিছিয়ে গিয়েছে। বিক্ষোভকারীদের তেড়ে নিয়ে গিয়েছে পুলিশ। এদিন রোবোকপ থেকে আধুনিক জ্যাকেট, হাতে লাঠি, জলকামান, টিয়ার গ্যাসের সেল নিয়ে বিক্ষোভকারীদের সামলিয়েছে পুলিশ। জলকামানের জলও শেষ হয়ে যায়। এদিন বারে বারে পুলিশের দিকে তেড়ে গিয়েছে বিক্ষোভকারীরা। এদিন ফোর্ট উইলিয়াম সাউথ গেটের সামনের রাস্তায় আন্দোলনকারীদের হঠাতে ভুরি ভুরি টিয়ার গ্যাসের সেল ফাটিয়েছে পুলিশ। তৎক্ষনাৎ সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে পুলিশকে অসন্তোষের কথা মৌখিকভাবে বলা হয়েছে। তাছাড়া হাওড়া, বাবুঘাট, এমজি রোড, হেস্টিংসেও জলকামান ও নাগারে কাঁদানে গ্যাসের সেল ফাটিয়েছে পুলিশ। পুলিশ যেমন লাঠি চালিয়েছে, তেমন পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট বৃষ্টিও হয়েছে।
নবান্ন অভিযান ঠেকাতে ব্যাপক পুলিশি আয়োজন সত্ত্বেও বিক্ষোভকারীদের হঠাতে কালঘাম ছুটে গিয়েছে পুলিশের। এক্ষেত্রে আন্দোলনকারীদের নির্দিষ্ট দিশা দেওয়ার জন্য কোনও নেতৃত্ব ছিল না। বিক্ষোভকারীরা নিজেরাই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কতটা এগোবেন, কতটা পিছোবেন, আবার এগোবেন। এই দৃশ্য কম-বেশি প্রতিটি ক্ষেত্রেই দেখা গিয়েছে। তৃণমূল কংগ্রেস আগেই অভিযোগ করেছিল এই নবান্ন অভিযান গেরুয়া শিবিরের। সিপিএম অংশ নেবে না বলে জানিয়ে দিয়েছিল।
হেস্টিংসে ভাবনীপুর থেকে এসেছিলেন গৃহবধূ রূপা বোস। তাঁর কথায়, "আমি হেস্টিংসে এসেছি এই আন্দোলনকে সমর্থন করতে। আমি কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত নয়। আরজি করের ঘটনা অত্যন্ত নিন্দনীয়। যেভাবে প্রমাণ লোপাট হয়েছে তাতে সিবিআই অপরাধী ধরবে কী করে আমার মনে প্রশ্ন আছে।" এদিন আন্দোলনকারীদের হাতে দেখা গিয়েছে জাতীয় পতাকা। মোট ৯৪ জনকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। পুলিশি অত্যাচারের অভিযোগ তুলে বুধবার বিজেপি ১২ ঘন্টার বনধ ডেকেছে।